ভুয়ো নথি ব্যবহার করে লোন নিয়ে পাহাড়-সৈকত ভ্রমণ! তারপর…

ভুয়ো নথি ব্যবহার করে লোন নিয়ে পাহাড়-সৈকত ভ্রমণ! তারপর…

জীবনযাপন/LIFE STYLE
Spread the love


অর্ণব আইচ: কখনও তার টার্গেট রেলযাত্রী। আবার কখনও হোটেল ম‌্যানেজার। দক্ষিণের হাসনাবাদ থেকে শুরু করে উত্তরের কালিম্পং। নিজের পরিচয় দিত ব‌্যাঙ্কের কর্তা বলে। শুধু কারও মোবাইল ও তাঁর পরিচয়পত্রের কপি একবারের জন‌্য হাতে পেলেই হল। মুহূর্তের মধ্যে সেই ব‌্যক্তির নামে ব‌্যাঙ্ক অথবা ঋণদাতা সংস্থা থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিজের অ‌্যাকাউন্টে। ই-মেল ও মোবাইল নম্বর পালটে দেওয়ার ফলে প্রতারিত ব‌্যক্তিরা কিছু জানতেও পারতেন না। তারপর অ‌্যাপে ট্রেনের টিকিট কেটে সে বেরিয়ে পড়ত ভ্রমণে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। অবশেষে পুলিশের জালে গুণধর।

জালিয়াতির টাকায় বিলাসবহুল হোটেলে বসে সমুদ্র সৈকত, কখনও বা পাহাড়ে ঘুরে বেড়াত সে। তারপর এই রাজ‌্য-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনে করে ঘুরত নতুন ‘শিকার’-এর সন্ধানে। জালিয়াতির জন‌্য নিজের নামেই অন্তত কুড়িটি সিমকার্ড ব‌্যবহার করছে বলে অভিযোগ। এভাবেই দিন চলছিল উত্তর কলকাতার শ‌্যামবাজারের বাসিন্দা তথা একসময়ের মেধাবী ছাত্র ও টেকস্যাভি অভিজিৎ সাহার। পুলিশের চোখ এড়াতে ট্রেনের একই কামরায় দু’টি টিকিট কেটে রিজার্ভেশন করত সে। এমনভাব দেখাত যেন, ওই কামরায় সে অনুপস্থিত ছিল। শেষ পর্যন্ত ট্রেনে টিকিট রিজার্ভেশনের সূত্র ধরেই অভিজিৎ সাহাকে গ্রেপ্তার করলেন দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর থানার আধিকারিকরা।

ডিসি (সাউথ) প্রিয়ব্রত রায় জানান, অভিজিৎ সাহা নামে ওই অভিযুক্তকে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির মেটেলি থানা এলাকার ডুয়ার্স অঞ্চলের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট, ভবানীপুর, উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ, উত্তরবঙ্গের কালিম্পং থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গত জুলাইয়ে ভবানীপুরের প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের বাসিন্দা এক তরুণী ধৌলি এক্সপ্রেসে করে ওড়িশার জলেশ্বর থেকে হাওড়ার সাঁতরাগাছির দিকে আসছিলেন। পুরী থেকে ট্রেনে উঠেছিল অভিজিৎ। সহযাত্রী ওই তরুণীর সঙ্গে আলাপ করে সে। নিজেকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব‌্যাঙ্কের পদস্থ কর্তা বলে দাবি করে তরুণীকে চাকরির টোপ দেয়।

ওই ব‌্যাঙ্কের লেটারহেডে সে বেশ কয়েকটি জাল নিয়োগপত্রও দেখায়। ভুয়ো ইন্টারভিউয়ের আগে তাঁর কাছ থেকে ওই ব‌্যক্তি আধার কার্ড, জন্মের শংসাপত্র, ভোটার কার্ড, মার্কশিটের কপি নেয়। কায়দা করে তাঁর ব‌্যাঙ্ক অ‌্যাকাউন্টের তথ‌্য জেনে নেয়। হাতিয়ে নেয় তাঁর এটিএম কার্ড ও ল‌্যাপটপ। তরুণীর নথি ব‌্যবহার করেই একাধিক ব‌্যাঙ্ক ও ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা তুলে নেয়। এর পরই সে পাড়ি দেয় উত্তরবঙ্গে। তদন্ত শুরুর পর ভবানীপুর থানার পুলিশ তার একাধিক রিজার্ভেশন টিকিটের সূত্র ধরে তার হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করে। তরুণীর নামে ঋণ বন্ধ করতেই বেগতিক বুঝে দার্জিলিং থেকে কালিম্পং হয়ে ডুয়ার্সে। যদিও শেষ পর্যন্ত ডুয়ার্স থেকেই অভিজিৎ ধরা পড়ে বলে জানিয়েছে পুলিশ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *