জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বাংলার বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক দম্পতিকে মহারাষ্ট্রে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বাংলাদেশি সন্দেহে। নিজেদের আসল পরিচয়পত্র দেখানো হলেও পুলিশ কোনও কথা কানে তোলেনি বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ওই দম্পতিকে পুশ ব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই কথা জানার পরেই মাথায় হাত পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার ওই পরিবারের অন্যান্য সহস্যদের। ওই দম্পতির নাম ফজের মণ্ডল ও তসলিমা মণ্ডল।
জানা গিয়েছে, ফজের মণ্ডলের বাড়ি বাগদা থানার রনঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিহরপুর এলাকায়। পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে তিনি বাইরে কাজ করতে গিয়েছিলেন। প্রথমে কর্নাটকে তিনি কাজ করতেন। পরে মহারাষ্ট্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রীও। সম্প্রতি নয়ানগর থানা এলাকায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। অভিযোগ, কয়েকজন অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে ওই দম্পতিকেও পাকড়াও করা হয়। দম্পতি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁরা এদেশের নাগরিক। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা এলাকায় বাড়ি। সঙ্গে থাকা নথিপত্রও তদন্তকারীদের দেখানো হয়। কিন্তু পুলিশ কিছু বিশ্বাস করতে চায়নি বলে অভিযোগ।
গত ১০ তারিখ নয়ানগর থানার পুলিশ বাগদার বাসিন্দা যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাঁদের পরিচয়পত্র থানায় পাঠাতে বলা হয়। ফজের মণ্ডলের বাবা তাহাজুল মণ্ডল সেসব নথি কথামতো পাঠিয়েছিলেন। অভিযোগ, তারপরেও ওই দম্পতিকে ছাড়া হয়নি। পরিবারের লোকজন তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি বলে খবর। নয়ানগর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই দম্পতিকে বাংলাদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কথা ওই বাগদার ওই পরিবারের সদস্যরা জানতেও পারেননি। গতকাল, শনিবার সকালে বাংলাদেশের দিনাজপুর থেকে বিজিবির ফোন আসে বাগদার ওই পরিবারের কাছে। জানানো হয়, ওই দম্পতিকে পুশব্যাক করা বাংলাদেশিদের সঙ্গে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এরপরই ওই পরিবারের সদস্যের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে।
কীভাবে ছেলে-বউমাকে দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে, সেই দুশ্চিন্তা করছেন বাবা তাহাজুল ও মা লতিফা মণ্ডল। বাগদা থানাতেও বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে খবর। বিষয়টি খোঁজখবর করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক মধুপর্ণা ঠাকুর জানিয়েছেন, ওই পরিবারের থেকে কাগজপত্র নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।