সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে চরচক্রের মূল মাথা একজন পাকিস্তানি ইউটিউবার! জেরায় এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া জসবীর সিং। পাশাপাশি, তিনি জানিয়েছেন, ওই পাক ইউটিউবার আগে প্রাক্তন পুলিশকর্মীও ছিলেন। কয়েকবছর আগে তিনি সেই চাকরি ছেড়ে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খোলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ইউটিউবারের নাম নাসির ধিলন। তিনি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা। ট্রাভেল ভ্লগিং-এর পাশাপাশি তিনি তাঁর চ্যানেলে পডকাস্টও করেন। আর গোপনে চালান এই চরচক্র। জেরায় জসবীর আরও জানিয়েছেন, জ্যোতি এবং আরও এক ধৃত ইউটিউবারের সঙ্গে তিনি দশ দিনের লাহোর সফরে গিয়েছিলেন। সেখানেই নাসিরের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। এমনকী নাসিরের সঙ্গে জ্যোতির বন্ধু দানিশেরও যোগাযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। ইউটিউবারদের মাধ্যমে চরবৃত্তির গোটা কাজটিকে দানিশই নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে জানিয়েছে জসবীর। ধৃতকে জেরা করার পরই গোয়েন্দাদের অনুমান, এই চরচক্রে পাকিস্তানের আরও প্রাক্তন পুলিশকর্মীও জড়িয়ে থাকতে পারেন। তবে সম্প্রতি একটি পডকাস্টে নাসির তাঁর আইএসআই (পাক গুপ্তচর সংস্থা) যোগের কথা অস্বীকার করেছেন।
গত ৭ মে অপারেশন সিঁদুরের পর পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করা ভারতের গদ্দারদের পাকড়াও করতে কোমর বেঁধে নামেন দেশের গোয়েন্দারা। গ্রেপ্তার করা হয় হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের। সেই সূত্র ধরেই গ্রেপ্তার করা হয় জসবীরকেও। তদন্তকারীদের তরফে জানা গিয়েছে, জসবীরের সঙ্গে পাকিস্তানি গুপ্তচর শাকির ওরফে জঠ রান্ধাবার যোগাযোগ ছিল। পাশাপাশি জ্যোতির সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, পাক দূতাবাসের আধিকারিক দানিশের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অভিযুক্তের। এই দানিশকে ইতিমধ্যেই দেশছাড়া করেছে ভারত সরকার। দানিশের আমন্ত্রণে পাকিস্তানের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন জসবীর। সেখানে পাক সেনা ও আইএসআই-এর শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন।
তদন্তকারীদের দাবি অনুযায়ী, ২০২০, ২১ ও ২০২৪ সালে তিন দফায় পাকিস্তান যান জসবীর। পুলিশ অভিযুক্তের মোবাইল-সহ অন্যান্য ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করেছে। যেখানে তাঁর পাকযোগের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, জ্যোতির গ্রেপ্তার পর তাঁর সঙ্গে নিজের সমস্ত কথোপকথন মোবাইল থেকে ডিলিট করার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত জসবীর।