ভারতের নিম্নমুখী র‍্যাঙ্কিয়ের জন্য দায়ী ফিফার জটিল নিয়ম! আজব দাবি ফেডারেশন সভাপতির

ভারতের নিম্নমুখী র‍্যাঙ্কিয়ের জন্য দায়ী ফিফার জটিল নিয়ম! আজব দাবি ফেডারেশন সভাপতির

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নামতে নামতে ফিফার ক্রমতালিকায় এখন ১৩৩ নম্বরে ভারতীয় ফুটবল। তবে র‍্যাঙ্কিংয়ের এই পতনের জন্য সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে দায়ী করলেন না ফেডারেশনকে। বরং তাঁর অভিযোগ, ফিফার র‍্যাঙ্কিং সিস্টেমের জটিল নিয়মকে ঘিরে। অন্যদিকে, আইএসএলের অনিশ্চয়তার জেরে একের পর এক ক্লাব তাদের ফুটবলার ও কর্মচারীদের বেতন বন্ধ করে দিচ্ছে। ফেডারেশন সভাপতি জানিয়েছেন, এর জন্যও কোনওভাবেই দায়ী নন তাঁরা। তবে এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবল যে টালমাটাল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সে কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

কল্যাণ বলেন, “কোনও জাতীয় দলের ফিফা র‍্যাঙ্কিং নির্ভর করে সাম্প্রতিক কয়েক বছরের ঐতিহাসিক পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে। প্রত্যেক ম্যাচের ফলাফলের উপর পয়েন্ট বাড়া বা কমার বিষয়টা নির্ভর করে। এটা Elo Mannequin ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। এই পদ্ধতিতে মোট পয়েন্ট গণনার ক্ষেত্রে অনেক যোগ বিয়োগ থেকে। ম্যাচের সংখ্যা এবং প্রতিপক্ষের র‍্যাঙ্কিংও এক্ষেত্রে অন্যতম। এই র‍্যাঙ্কিং গণনার বিষয়টি বছরের পর বছর ওঠানামা করে। ফিফার এই নিয়ম বেশ জটিল এবং পরিবর্তনশীল। ২০২৩ সালে যখন দায়িত্ব নিই, তখন ১০৬ থেকে ৯৯-এ উঠে এসেছিল ভারতীয় ফুটবল। আর এখন আমরা ১৩৩-এ নেমে গিয়েছি।”

২০২৩ সালে তিনটি টুর্নামেন্ট জেতার পর ভারতীয় দল ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ফিফার ক্রমতালিকায় ৯৯-এ উঠে শীর্ষ ১০০-এর মধ্যে চলে আসে। কিন্তু সেখান থেকে পতন শুরু। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ১০২০-এ নেমে যায়। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এএফসি এশিয়ান কাপের সময় অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান এবং সিরিয়ার কাছে হেরে নেমে গিয়েছিল ১১৭-তে। এই প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, “এশিয়ান কাপে অস্ট্রেলিয়া এবং উজবেকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে হারের ফলে জাতীয় দল র‍্যাঙ্কিংয়ে অনেক ধাপ নিচে নেমে আসে। পরবর্তী ম্যাচগুলিতেও সন্তোষজনক পারফরম্যান্স করতে পারেনি ভারতীয় দল। তবে খুব খারাপ কিন্তু খেলিনি। ১২টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি হেরেছি। এর মধ্যে শক্তিশালী কাতারের বিপক্ষে একটি ম্যাচ ছিল। তাছাড়াও আমরা একটি জিতেছি এবং ছ’টি ড্র করেছি। আশা করছি CAFA নেশনস কাপ এবং বাকি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচগুলিতে ভালো খেলে ক্রমতালিকায় আবার উঠে আসবে ভারত।”

তাঁর সংযোজন, “ফিফা প্রথমবারের মতো ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করে। সেই সময় ভারতের র‍্যাঙ্ক ছিল ১৪৩। অর্থাৎ, ২১১ সদস্য দেশের মধ্যে ভারতের ফিফা র‌্যাঙ্কিং ছিল ১৪৩। এরপর ২০১৫ সালে ভারত ১৭৩-তে নেমে আসে। ২০১৮ সালে ৯৭-এ উঠে আসে। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের সেরা র‍্যাঙ্কিং ছিল ৯৪। তখনও জাতীয় লিগ শুরু হয়নি।”

অন্যদিকে ভারতের ফুটবল সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মেনে নিয়ে কল্যাণ বলেন, “ভারতের ফুটবল সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ফেডারেশন এর জন্য কোনওভাবেই দায়ী নয়। কিছু স্বঘোষিত সংস্কারকের জন্য এখন এই অবস্থা। নিজ স্বার্থের খোঁজে থাকেন তাঁরা। আশা করি সকলে মিলে এই অবস্থা আমরা কাটিয়ে উঠব।” যদিও কল্যাণ তাঁর বক্তব্যে কাদের নিশানা করেছেন, তা বোঝা যায়নি।

আইএসএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কী হবে তা জানতে গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল আইএসএলের একাধিক দল। যদিও সেখানে এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ চৌবে মুখে ‘আইএসএল হবেই’ বললেও টুর্নামেন্ট সম্পর্কে আর কিছু বলতে পারেনি। এমনিতেও আইএসএলের অনিশ্চয়তার মধ্যে ওড়িশা এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি এবং চেন্নাইয়িন এফসি ফুটবলার ও কর্মচারীদের বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টা ক্লাবগুলির ‘নিজস্ব ব্যাপার’ বলে মন্তব্য করেছেন ফেডারেশন সভাপতি। অর্থাৎ এই ব্যাপারেও কোনও সমাধানসূত্র দিতে পারেননি তিনি। এই পরিস্থিতিতে আইএসএলের জট কাটাতে ‘সুপ্রিম’ হস্তক্ষেপ দাবি করে ৯ আগস্ট ১১টা ক্লাব ফেডারেশনকে চিঠি দেয়।

এই প্রসঙ্গে ফেডারেশন সভাপতি বলছেন, “৭ আগস্টের বৈঠকে ১৩টা ক্লাবের সঙ্গে এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই চিঠি পেয়ে আমরা হতবাক। যা-ই হোক না কেন, ফুটবলের উন্নতি এবং প্রচারের জন্য যা যা করা সম্ভব সেটাই করবে ফেডারেশন।” তবে বিষয়টা সুপ্রিম কোর্টে তোলা হবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে কল্যাণ বলেন, “আইনি সহায়তা নেব আমরা।” খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ফেডারেশন কি একক ক্ষমতাবলে আইএসএলের মতো টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারবে? কল্যাণ বলেন, “সমস্ত বিকল্পই হাতে রয়েছে। তবে সম্মিলিতভাবে সকলের পরামর্শ মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *