সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের কূটনৈতিক সাফল্যের কারণেই পাক মদতপুষ্ট ‘দ্য রেজিস্ট্যান্ট ফ্রন্ট’ বা টিআরএফকে জঙ্গিসংগঠন ঘোষণা করেছে আমেরিকা। সংসদে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
সোমবার জয়শংকর বলেন, “টিআরএফ দু’বার পহেলগাঁও হামলার দায় স্বীকার করেছে। কিন্তু পাকিস্তান বারবার তা অস্বীকার করে আসছে। টিআরএফকে একটি জঙ্গি সংগঠন ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান এখনও টিআরএফের ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।” এরপরই সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “ভারতের কূটনৈতিক সাফল্যের কারণেই পাক মদতপুষ্ট টিআরএফকে জঙ্গিসংগঠন ঘোষণা করেছে আমেরিকা। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারত গোটা বিশ্বের কাছে একটি দৃঢ় বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।” ভারত-পাক সংঘর্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি উড়িয়ে জয়শংকর বলেন, “গোটা বিশ্ব জানতে চেয়েছিল ভারত কী ভাবছে? আমরা একটি বার্তা দিয়েছি। ভারত আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করছে। পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও সমঝোতা হবে না। আমরা পাকিস্তানের পরমাণু হুমকির কাছেও মাথা নত করব না।”
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান নিরীহ পর্যটকরা। এরপরই পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রত্যাঘাত করে ভারত। অপারেশন সিঁদুরে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি। পাকিস্তানে হামলার দাবি তুলে পালটা আক্রমণ করে শাহবাজ শরিফের দেশের সেনা। ভারতীয় সেনাও পালটা উত্তর দেয়। উত্তেজনার আবহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতির কথা ঘোষণা করেন। যদিও সে সময় ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, আমেরিকা নয়, পাকিস্তানের অনুরোধে সাড়া দিয়েই সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে।
পহেলগাঁও হামলার দু’মাস পর টিআরএফকে জঙ্গি সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে আমেরিকা। মার্কিন বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টকে এফটিও এবং এসডিজিটি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ আমেরিকার তরফে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসদমন এবং জঙ্গিদের ঘাঁটি ধ্বংস করতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার পক্ষে বারবার সওয়াল করেছে ভারত। টিআরএফকে জঙ্গি ঘোষণা করার বিষয়টিও সন্ত্রাসদমনে ভারত-আমেরিকার সহযোগিতার প্রতিফলন। সঠিক সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হয়েছে টিআরএফকে নিয়ে।’ মার্কিন ওই বিবৃতিকে প্রত্যাশিতভাবেই স্বাগত জানায় নয়াদিল্লি। ভারত জানায়, সন্ত্রাসদমনে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের নিবিড় সহযোগ রয়েছে। সেটারই প্রতিফলন ঘটেছে এই সিদ্ধান্তে।
এরপরই টিআরএফের ‘ঢাল’ হয়ে দাঁড়ায় পাকিস্তান। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইশক দার বলেন, “আমরা টিআরএফকে অবৈধ বলে মনে করি না। টিআরএফ যদি কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা করে থাকে তবে তার প্রমাণ দেওয়া হোক। টিআরএফের দায় প্রমাণ হলে সব অভিযোগ আমরা মেনে নেব। তবে যতক্ষণ না প্রমাণ দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ এই অভিযোগ আমরা মানব না।” যদিও রবিবার মার্কিন চাপে নতিস্বীকার করেছে ইসমালাবাদ। জানিয়েছে, টিআরএফের জঙ্গিতালিকাভুক্তি নিয়ে তাদের কোনও আপত্তি নেই।