সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বামী সিআরপিএফ জওয়ান। গত বছর অনলাইনে বিয়ে সারেন যুগল। তারপর ভারতে আসেন ওই পাকবধূ। কিন্তু পহেলগাঁও কাণ্ডের পর সব পাকিস্তানি নাগরিককে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, “আমাদের মতো নিরীহ মানুষরা কী দোষ করেছি?” কিন্তু ২৯ এপ্রিল পাকিস্তানি নাগরিকদের ‘ডেডলাইন’ বেঁধে দিয়েছিল ভারত। সেই মতো আটারি সীমান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন পাকবধূ। তবে শেষ মুহূর্তে ঘোরে ভাগ্যের চাকা। আদালত তাঁকে ‘রক্ষাকবচ’ দেয়। জানায়, আপাতত ভারতেই থাকতে পারেন তিনি। আদালতের এই নির্দেশে আনন্দে প্রায় কেঁদেই ফেলেন মহিলা।
পাকবধূর নাম মীনাল খান। তিনি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা। সমাজ মাধ্যমে সিআরপিএফ জওয়ান মুনির খানের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। সেখান থেকে প্রেম। গত বছর মে মাসে মুনিরের সঙ্গে ‘অনলাইন’-এ বিয়ে সারেন মীনাল। এবছর মার্চে স্বল্পমেয়াদি ভিসায় তিনি ভারতে আসেন। কিন্তু ২২ মার্চ সেই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকে ভারতেই ছিলেন। কিন্তু পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর তিনি বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। তবে আদালতের নির্দেশে আপাতত স্বস্তিতে মীনাল।
মীনালের কথায়, “পহেলগাঁওয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, তা নৃশংস। মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। কিন্তু আমরা নিরীহ মানুষ। পরিবারের থেকে কাউকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত নয়।”

কিন্তু স্বল্পমেয়াদি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কেন ভারতে ছিলেন ওই পাকবধূ? এ প্রসঙ্গে মীনাল বলেন, “আমি সব নিয়ম মেনে এসেছি, মার্চ মাসে আমার স্বল্পমেয়াদি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আমি দীর্ঘমেয়াদি ভিসার জন্য আবেদন করেছিলাম। আমাদের বলা হয়েছিল শীঘ্রই সেই ভিসা অনুমোদিত হবে। কিন্তু পহেলগাঁওয়ের হামলার পরই আমাদের দেশ ছাড়তে বলা হয়। অনেক সন্তান তাঁর মা-বাবার থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছে। সীমান্তে দুঃখ আর কান্নার রোল। এটা অমানবিক।”
প্রসঙ্গত, পাক নাগরিকদের ভিসা নিয়ে ইতিমধ্যেই নিয়ম শিথিল করেছে কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি ভিসায় যে সমস্ত পাকিস্তানিরা এদেশে রয়েছেন তাঁদের ভারত ছাড়তে হবে না। এমনকী ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তা পুনর্নবীকরণ করারও সুযোগ দেওয়া হবে পাক নাগরিকদের। উপযুক্ত নথিপত্র থাকলে একেবারে নতুন করে লং টার্ম ভিসার আবেদন করার পথও খোলা থাকছে তাঁদের জন্য।