ধীমান রায়, কাটোয়া: ভরদুপুর। ফাঁকা রাস্তাঘাট। গাড়ি থেকে পোষ্যকে নামিয়ে ছেড়ে গেলেন মালিক। তাঁর দেওয়া খাবার খেতে খেতে অসহায় ভাবে গাড়ির দিকে তাকিয়ে থাকল সারমেয়। কোন দিকে যাবে কিছুই বুঝতে পারছিল না। এই খবর যায় পুলিশকর্মী পশুপ্রেমির কাছে। তারপর খবর দেওয়া হয় এলাকার বিডিওকে। তিনি সেই সারমেয়টিকে দত্তক নিয়েছেন। নিজের আবাসনে রেখেছেন। বিডিওর এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন স্থানীয়রা।
ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের। শুক্রবার তখন দুপুর দু’টো। ছয়মাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকার অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। একটি চারচাকা গাড়ি এসে থামে ছয় মাইল বাস স্ট্যান্ডের কাছে। অপরিচিত ব্যক্তি গাড়ি থেকে নেমে তার ল্যাব্রাডার প্রজাতির ওই পোষ্যকে রাস্তায় নামায়। তাকে ছেড়ে গাড়িটি দ্রুত গতিতে হলদি রোড ধরে বেরিয়ে যায়। এই ঘটনা দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখেন স্থানীয় আদিবাসী গৃহবধূ।
খবর দেন পুলিশ বিভাগে কর্মরত এলাকায় পশুপ্রেমী বলে পরিচিত মুস্তাক শেখকে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসেন মুস্তাক। তিনি সায়মেয়টিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। এক পশুচিকিৎসকে ডেকে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। কিন্তু নিজের কাছে তাকে রাখতে রাজি হননি তিনি। কেন? মুস্তাকের কথায়,” ঠিক ওইরকম দেখতে আমার একটি ল্যাব্রাডার কয়েকদিন আগে মারা গিয়েছে। তারপর থেকে বাড়ির সকলেরই মন খারাপ। এবার এটাকেও যদি বাড়িতে রাখার পর অঘটন হয় সেই আঘাত সহ্য করা কঠিন হবে। তাই আমি প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি।”
সারমেয়টিকে বাড়িতে এনে মুস্তাক ভাতারের বিডিওকে ফোন করে বিষয়টি জানান। কুকুরটির জন্য ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন। ভাতারের বিডিও দেবজিৎ দত্ত শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ছয় মাইল চলে আসেন। তারপর ওই ল্যাব্রাডারটিকে নিয়ে যান। আপাতত নিজের আবাসনেই রেখে দিয়েছেন দেবজিতবাবু। বিডিও বলেন,” যদি কখনও পোষ্যের মালিকের শুভবুদ্ধির হয় তাহলে তিনি আমার কাছে এসে নিয়ে যেতে পারেন। এই সরমেয়টিকে অন্যান্য পথসারমেয় আক্রমণ করতে পারে। তাই মানবিকতার খাতিরে ওকে আপাতত আমার কাছেই রেখে দিয়েছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন