ভারত (প্রথম ইনিংস): ২২৪ (করুণ ৫৭, সুদর্শন ৩৮, অ্যাটকিনসন ৩৩/৫, টং ৫৭/৩)
ইংল্যান্ড (প্রথম ইনিংস): ২৪৭ (ক্রলি ৬৪, ব্রুক ৫৩, প্রসিদ্ধ ৬২/৪, সিরাজ ৮৬/৪)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী’। ভারতীয় দল হয়তো এই ‘মন্ত্র’কেই সম্বল করে ওভালে নেমেছে। ঘটনাবহুল দ্বিতীয় দিন দেখল ওভাল টেস্ট। ইংল্যান্ড পেসারদের সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়ে টিম ইন্ডিয়ার ইনিংস শেষ হল মাত্র ২২৪ রানে। ভারতের শেষ চার উইকেট পড়ল মাত্র ৬ রানে। জবাবে দুই ইংরেজ ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট ঝড় তুলে ১২ ওভারের মধ্যেই ইংল্যান্ডকে ৯০ রানে পৌঁছে দিলেন। তখনও বোঝা যায়নি, ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়’। শেষমেশ ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ হল ২৪৭ রানে। ২৩ রানে লিড পেল তারা। জবাবে দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারতের রান ২ উইকেটে ৭৫। টিম ইন্ডিয়া এগিয়ে ৫২ রানে।
প্রথম দিন লড়াইয়ের ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন করুণ নায়ার। তবে দ্বিতীয় দিন ৫৭ রানে শেষ হয়ে গেল তাঁর যাবতীয় প্রতিরোধ। তিনি আউট হতেই যেন খেই হারিয়ে ফেললেন বাকি ব্যাটাররাও। ইংল্যান্ড পেসারদের সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়ে ভারতের প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে গেল। গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করে হার বাঁচানো ওয়াশিংটন সুন্দরকে নিয়েও অনেক আশা ছিল। তিনি আউট হলেন ২৬ রানে। এরপর ‘আয়ারাম গয়ারাম’ অবস্থা হল টেল এন্ডারদের। মহম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপ কোনও রান না করেই সাজঘরে ফিরলেন। এভাবেই দ্বিতীয় দিন শুরুর মাত্র ২৭ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে গেল ভারতের ইনিংস।
প্রথম ইনিংসে গাস অ্যাটকিনসন নিলেন ৩৩ রানে ৫ উইকেট। অ্যাটকিনসন ছাড়াও জোশ টং ৩টি এবং ক্রিস ওকস ১ উইকেট পেলেন। ওভালে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরুর আগেই বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল ইংল্যান্ড। চোট পেয়ে সিরিজ থেকে ছিটকে গিয়েছেন ওকস। প্রথমদিনের খেলা চলাকালীন বাউন্ডারি বাঁচাতে গিয়ে কাঁধে চোট পেয়েছিলেন তিনি। সেই চোটের কারণেই ওভালে আর নামতে পারলেন না তিনি। তবে, তাঁকে ছাড়া প্রথম ইনিংসে ভারতের বাকি চার উইকেট ফেলতে খুব বেশি বেগ পেতে হল না ইংল্যান্ডের বাকি পেসারদের।
জবাবে রীতিমতো বাজবল মেজাজে শুরু করেন দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি এবং বেন ডাকেট। ওভার পিছু সাতের কাছাকাছি রান তুলছিলেন দুই ব্যাটারই। ১২.৫ ওভারে ইংল্যান্ডের রান যখন ৯২, আকাশ দীপের বলে সাজঘরে ফেরেন ডাকেট (৪৩)। স্কুপ মারতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। তবে বাংলার পেসার আগ্রাসী সেলিব্রেশন করেননি। বরং হাসিমুখে ইংরেজ ব্যাটারের কাঁধে গিয়ে হাত রাখেন। কিছু একটা বলেনও তিনি। যদিও কী কথা বলেছেন জানা যায়নি। তবে অনেকের ধারণা, কাঁধে হাত দিয়ে ডাকেটকে ব্যঙ্গই করেন তিনি।
এরপর প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর বলে ব্যক্তিগত ৬৪ রানে ফেরেন ক্রলি। অলি পোপ (২২)-কে লেগ বিফোর করেন সিরাজ। এরপর জো রুট (২৯) যখন আউট হন, তখন ইংল্যান্ডের রান ৪ উইকেটে ১৭৫। যদিও এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ হয় ২৪৭ রানে। সিরাজ পান ৮৬ রানে ৪ উইকেট। প্রসিদ্ধর নামের পাশে ৬২ রানে ৪ উইকেট, আকাশ দীপের শিকার একটি উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা আগ্রাসী মেজাজে করেন যশস্বী জয়সওয়াল। এরই মধ্যে সুযোগও নষ্ট করে ইংল্যান্ড। বাঁ হাতি ওপেনারের ক্যাচ ফেলে দেন স্লিপে দাঁড়ানো হ্যারি ব্রুক। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যর্থতা পিছু ছাড়েনি কেএল রাহুলকে। ৭ রানে টংয়ের বলে খোঁচা দিয়ে আউট হলেন তিনি। এরপরেও অবশ্য বেঁচে যান যশস্বী। টংকে পুল করেছিলেন তিনি। বল সোজা চলে যায় বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়ানো ডসনের কাছে। একেবারে পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতো সেই সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। সাই সুদর্শনের ক্যাচ ফেলেন ক্রলি। সাই সুদর্শন আউট হন ১১ রানে। দিনের শেষে ভারতের রান ২ উইকেটে ৭৫। অপরাজিত রয়েছেন যশস্বী (৫১) এবং নাইট ওয়াচ ম্যান হিসেবে নামা আকাশ দীপ (৪)। ভারত এগিয়ে ৫২ রানে।