বৈশাখী হালখাতা এখন শুধুই গল্প! চৈত্রেই বাজারে ইনডেক্স খাতার রমরমা

বৈশাখী হালখাতা এখন শুধুই গল্প! চৈত্রেই বাজারে ইনডেক্স খাতার রমরমা

জ্যোতিষ খবর/ASTRO
Spread the love


অভিরূপ দাস: পয়লা বৈশাখ অতীত। চৈত্রেই হালখাতা কিনে ফেলেছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী। মার্চের ‘ইয়ার এন্ডিং’ এখন জন্মদিন। বাংলা নববর্ষ নয়, খাতায় লেখা শুরু হয় অর্থবর্ষের শুরুর দিন, ১ এপ্রিল থেকে।

তাহলে পয়লা বৈশাখ কী হবে? পোস্তার ব্যবসায়ী শান্তনু কুণ্ডুর কথায়, “ওই একটু লক্ষ্মী গণেশ পুজো।”

“কোথায় পাওয়া যাবে হিসেব নিকেশের খাতা?” মফস্বলের ব্যবসায়ীর প্রশ্ন শুনে ঠিকানা বাতলে দেন বড়বাজারের দোকানীরা। “সোজা মনোহর দাস স্ট্রিট চলে যান।” সেখানেই সার দিয়ে একের পর এক হিসেব নিকেশের খাতার দোকান।

কয়েক দশক আগেও পয়লা বৈশাখের আগে এ রাস্তায় পা রাখা যেত না। গায়ে গায়ে ঠাসাঠাসি ভিড়। সে দিন অস্তগামী! বড় বড় দোকানে এখন সমস্ত হিসাব কোলের ল্যাপটপে কিংবা টেবিলের ডেস্কটপে। তবে শহর-মফস্বলের ছোট মাঝারি ব্যবসায়ীরা এখনও কেনেন হিসেব নিকেশের খাতা।

বড়বাজারে হালখাতা বিক্রির শতাব্দী প্রাচীন দোকান যুধিষ্ঠির দাঁ অ্যান্ড সন্স। চারপুরুষের ব্যবসার বর্তমান কর্ণধার সুব্রত দাঁ জানিয়েছেন, “হালখাতা বলে আর লজ্জা দেবেন না। আদতে হালখাতা যাকে বলা হয় তা তো আর বিক্রিই হয় না।”

সত্যিই তো। ইয়া জাবদা লাল খাতা। সাদা সুতোয় বাঁধা। তাতে লেখা হিসেব নিকেশ। সেসব খাতা অতীতের পাতায়। তার বদলে জায়গা নিয়েছে হালফ্যাশনের ‘ইনডেক্স’ খাতা। পাতায় পাতায় ইংরেজি এ-বি-সি-ডি অক্ষর বসানো। কাস্টমারের নাম যে অক্ষর দিয়ে শুরু সে পাতায় বিকিকিনির হিসাব লিখে রাখেন দোকানি। আধুনিক হালফ্যাশনের সে সব খাতা খানিকটা সরু-পেলব ডায়েরির মতো। দু’নম্বর সে ইনডেক্স খাতার দাম নব্বই টাকার মতো। রয়েছে সাধারণ ছোট খাতাও।

সুব্রতবাবুর ছেলে সৌনক দাঁ জানিয়েছেন, “অনেকে বছর বছর কিনে আসছেন খাতা। এখনও সেই রীতি বদলায়নি। স্রেফ নিয়মরক্ষার খাতিরে তাঁরা এই ছোট খাতা কেনেন। ৩০০ পেজের সে সাধারণ খাতার দাম পঁয়তাল্লিশ টাকা। আরেকটু বড় আকারের সাধারণ খাতা ৫৫ টাকা। শুধু ‘ইয়ার এন্ডিং’ নয়, পয়লা বৈশাখের হালখাতা চালুর অভ্যেসে ভাগ বসিয়েছে রামনবমীও।

হালখাতার বাজার বলছে, ল্যান্ডফোন, অডিও ক্যাসেট, রেডিও-র মতো হারিয়ে যাচ্ছে হিসেব নিকেশের পুরনো জাবদা লাল খাতা। সমস্যা রয়েছে আরও। বাঙালির হালখাতার একাধিক কারখানা রাজাবাজার এলাকায়। কারখানার মূল কারিগর মুসলিমরা। বছর দুয়েক ধরে চৈত্রে ইদ পড়ে যাওয়ায় খাতার কারিগর পাওয়া যাচ্ছে না। হালখাতার দোকান মালিকরা জানিয়েছেন, যে বছর ফাল্গুনে ইদ হয়ে যায় সে বছর এই সমস্যা থাকে না। 



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *