বেসরকারি হাসপাতালের বিল বকেয়া থাকলেও আটকানো যাবে না মৃতদেহ, কড়া নিয়মের পথে রাজ্য

বেসরকারি হাসপাতালের বিল বকেয়া থাকলেও আটকানো যাবে না মৃতদেহ, কড়া নিয়মের পথে রাজ্য

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


স্টাফ রিপোর্টার: বিল বকেয়া থাকলেও মৃতদেহ আটকে রাখা যাবে না। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কড়া বার্তা রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের। এ নিয়ে কড়া নিয়ম চালু করার পক্ষে সওয়াল করেছেন রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের শীর্ষ কর্তারা।

রোগী মারা গিয়েছেন, কিন্তু বিলের সম্পূর্ণ টাকা মেটাতে না পারায় দেহ আটকে রেখেছে বেসরকারি হাসপাতাল। ফি বছর এমন অগুনতি অভিযোগ জমা পড়ে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে। রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, বিলের টাকা আদায়ে দেহ আটকে রাখা যাবে না। স্বাস্থ্য কমিশনের সচিব আর্শাদ ওয়ারসি জানিয়েছেন, “অনেক বেসরকারি হাসপাতালকে ডেকে পাঠালে তারা আমাদের বলেন, আমাদের বিষয়টাও দেখুন। এত টাকা বাকি আছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, মৃতদেহের ক্ষেত্রে কোনওরকম অজুহাত সহ্য করা হবে না।”

সম্প্রতি বাংলায় প্রোগেসিভ নার্সিংহোম অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্মেলনে হাজির ছিলেন অল ইন্ডিয়া নার্সিংহোম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এইচ এম প্রসন্ন। বাংলার এসে তিনি জানিয়েছেন, “বাংলার নার্সিংহোমে আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।” প্রশ্ন উঠছে, এই কারণেই কি দক্ষিণে চিকিৎসা করাতে ছুটছেন অসংখ্য বাঙালি? অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানের কথা যে মিথ্যে নয় তার ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের সচিবও। স্বাস্থ্য কমিশনের সচিব আর্শাদ ওয়ারসি জানিয়েছেন, কোনও মুমূর্ষু রোগী বেসরকারি নার্সিংহোমে এলে প্রথম দিনেই দেখা যায় অসংখ্য টেস্ট করা হচ্ছে। এমআরআই-সিটি স্ক্যান কিচ্ছু বাদ নেই। যেটার দরকার নেই তাও করে দেওয়া হয় রোগীর। একদিনে ৫০/৬০ হাজার টাকা বিল করে দেওয়া হয়। এটা ঠিক নয়।

স্বাস্থ্য কমিশনের নয়া নিয়মের পর বেসরকারি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন, “নতুন আইন প্রণয়ন হলে রোগীর পরিজনরা তো ছাড় পেয়ে যাবেন। টাকা দিতেই চাইবেন না।” সেখানেও অভয় দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ভাবছেন এমনটা হলে তো বহু রোগীর পরিবার পয়সা না দিয়ে চলে যাবে। সেই জায়গায় আমরা সব সময় রয়েছি। বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য নতুন আইন তৈরি হচ্ছে।”

এদিকে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের হুঁশিয়ারি যে স্রেফ কথার কথা নয়, তার প্রমাণ মিলেছে। অভিযোগ, টাকা দিতে না পারায় এক রোগীকে দেড় মাস ধরে আটকে রেখেছিল সাঁকরাইলের গ্রিন ভিউ ক্লিনিক। কমিশন সূত্রে খবর, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ওই রোগী ভর্তি হয়েছিলেন বেসরকারি ওই নার্সিংহোমে। ২৬ ফেব্রুয়ারি রোগী সুস্থ হয়ে যান। তার পরেও ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ওই রোগীকে আটকে রাখে বেসরকারি ওই নার্সিংহোম। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, “স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে ভর্তি হয়েছিল রোগী। সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরেও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ বলতে শুরু করে পোর্টালে আমরা আপলোড করতে পারিনি। রোগীকে নগদে টাকা দিয়ে ডিসচার্জ নিতে হবে। কিন্তু রোগীর পরিবারের সে ক্ষমতা ছিল না। দেড়মাসের উপর সুস্থ রোগীকে আটকে রাখা হয়েছে।” ঘটনা জানার পরেই দ্রুত আইসি (সাঁকরাইল) এবং হাওড়ার পুলিশ সুপারকে ফোন করা হয় স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের তরফে। খবর দেওয়া হয় হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, আমরা বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে বলেছি, ভবিষ্যতে এমন কিছু হলে আমরা কড়া ব্যবস্থা নেব।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *