সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার হ্যাঁ তে হ্যাঁ মিলিয়ে এবার ভারতবিরোধী সুর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির গলায়! ভারতের উপর চাপানো মার্কিন শুল্ককে পূর্ণ সমর্থন করে জেলেনস্কি জানালেন, ”বেশ হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করা দেশগুলির উপর এভাবেই বিধিনিষেধ আরোপ করা দরকার।” সংঘর্ষবিরতির লক্ষ্যে দফায় দফায় মোদিকে ফোনের পর জেলেনস্কির মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল পড়েছে।
নিজের ব্যর্থতা ঢাকা দিতে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতকে দায়ী করেছে আমেরিকা। ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, ভারত রাশিয়ার থেকে জ্বালানি তেল কিনে রাশিয়ার যুদ্ধের মেশিন চালু রাখতে সাহায্য করছে। যদিও চিন ইস্যুতে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ট্রাম্প। এহেন পরিস্থিতিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর পর নতুন করে ভারতের উপর আরও শুল্ক লাগুর হুমকি দিয়েছে আমেরিকা। এমনকী শুল্কের পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা জারিরও সম্ভাবনা বাড়ছে। এই প্রতিস্থিতির মাঝেই এক সংবাদমাধ্যমককে দেওয়া সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মার্কিন শুল্কের পালটা ভারত-রাশিয়া-চিন অক্ষ প্রসঙ্গে। উত্তরে জেলেনস্কি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি ভারতের উপর শুল্ক আরোপের মার্কিন সিদ্ধান্ত একদম সঠিক। রাশিয়ার সঙ্গে যারাই ব্যবসা করছে তাদের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা প্রয়োজন।”
পাশাপাশি রাশিয়ার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সে প্রসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত পদক্ষেপে আমি খুশি। রাশিয়ার সঙ্গে কোনওরকম চুক্তি করা উচিত নয়। ওদের উপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তে আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প জানেন কীভাবে ভ্লাদিমির পুতিনকে থামানো যায়। বিশ্বের বহু দেশকে পুতিন তেল ও গ্যাস বিক্রি করেন। এটাই ওদের মূল অস্ত্র। ওদের সেই অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে হবে।”
উল্লেখ্য, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে তৎপর হয়েছে ভারত। গত মাসে দু’বার জেলেনস্কির সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন মোদি। সোশাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, এই যুদ্ধের যাতে শান্তিপূর্ণ সমাধান বের হয়, তার যে কোনও উদ্যোগকে সমর্থন জানায় ভারত। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে সম্ভাব্য যে কোনও সহায়তায় ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি ইউক্রেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার বার্তাও দেন মোদি। গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ভন ডের লেইন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে মোদির। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই জেলেনস্কির এহেন মন্তব্য দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে বলে আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলের।