ইংল্যান্ড: ৩৮৭/১০ (জো রুট ১০৪, কার্স ৫৬, বুমরাহ ৭৪/৫, সিরাজ ৮৫/২)
ভারত: ১৪৫/৩ (রাহুল ৫৩*, করুণ ৪০, আর্চার ২২/১)
ভারত ২৪২ রানে পিছিয়ে।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ভারতের জন্য প্রাপ্তি কী? বুমরাহর পাঁচ উইকেট নাকি চোট নিয়েও ঋষভ পন্থের ব্যাট করতে নামা। এজবাস্টনের পর লর্ডসেও জয় পেত দুটোই কিন্তু কাজে লাগবে ভারতের। তবে সঙ্গ দিতে হবে বাকিদেরও। আকাশ দীপরা যেমন বোলিংয়ে উইকেট পেলেন না, তেমনই ব্যাটিংয়ের ব্যর্থ শুভমান গিল, যশস্বী জয়সওয়ালরা। ইংল্যান্ডের ৩৮৭ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারতের রান ৩ উইকেট হারিয়ে ১৪৫।
লর্ডসে দ্বিতীয় দিনে ২৫১ রানে ৪ উইকেটে নিয়ে খেলা শুরু করে ইংল্যান্ড। প্রথম দিনের শেষে ৯৯ রানে অপরাজিত ছিলেন জো রুট। এদিন সেঞ্চুরি পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না তাঁকে। দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলেই সেই অপেক্ষার অবসান হল। জশপ্রীত বুমরাহর বল গালি দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে টেস্টে ৩৭তম সেঞ্চুরি করে ফেললেন জো রুট। তবে সেই বুমরাহর বলেই ১০৪ রানে আউট হন তিনি।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে ‘ওয়ার্কলোডে’র জন্য দলে ছিলেন না বুমরাহ (৭৪/৫)। তৃতীয় টেস্টে ফিরেই পাঁচ উইকেট নিয়ে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম তুললেন। দ্বিতীয় দিনে নতুন বলে বোঝালেন ‘জসসি য্যায়সা কই নেহি’। ইংরেজ অধিনায়ক বেন স্টোকসের উইকেট ছিটকে দিলেন। ঠিক পরের বলেই ক্রিস ওকস ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ চলে এসেছিল। সব শেষে জোফ্রা আর্চারের স্টাম্পও উড়িয়ে দেন। দুই উইকেট তুলেছেন সিরাজ (৮৫/২)। হাফসেঞ্চুরি করা দুই ব্যাটার জেমি স্মিথ (৫১) ও ব্রাইডন কার্স (৫৬), দুজনেই সিরাজের শিকার। ডিউক বল বিতর্ক ও বল সামান্য পুরনো হতেই ভারতীয় বোলারদের ভেদশক্তির অভাবে ইংল্যান্ডের টেলএন্ডাররা রান করে গেলেন। ২৭১ রানে ৭ উইকেট থেকে ইংল্যান্ডের রান পৌঁছল ৩৮৭-তে। উইকেট পাননি ভারতের এজবাস্টন টেস্ট জয়ের নায়ক আকাশ দীপ।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা আগ্রাসী ভঙ্গিতেই করেছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল (১৩)। কিন্তু চারবছর পর টেস্টে ফেরা জোফ্রা আর্চারের বল স্লিপে খোঁচা দিয়ে আউট হন তিনি। তিন নম্বরে নামা করুণ নায়ারের সঙ্গে জুটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন কেএল রাহুল। প্রথম দুটি ম্যাচে ব্যর্থ করুণকে দেখে মনে হচ্ছিল এই ম্যাচেই হয়তো তাঁর প্রত্যাবর্তন ঘটবে। কিন্তু সেটা আর হল কোথায়? স্টোকসের বলে ৪০ রানের মাথায় তিনিও খোঁচা দিলেন। তবে তাঁর আউটে কৃতিত্ব বেশি জো রুটের। বাঁহাতে মাটি থেকে ছোঁ মেরে বল হাতে জমিয়ে নেন। যা নিয়ে বিতর্ক থাকাও খুব স্বাভাবিক। শুভমান গিলকে (১৬) রীতিমতো পরিকল্পনা করে আউট করলেন ক্রিস ওকস।
ফ্রন্টফুটে এগিয়ে এসে ভালো ডিফেন্স করছিলেন ভারত অধিনায়ক। গত দুটো ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও গিলকে ‘অবধ্য’ মনে হচ্ছিল। আচমকাই উইকেটকিপার জেমি স্মিথকে সামনে ডেকে নেন ওকস। ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে খেলা বন্ধ হয়ে যায় গিলের। সেই সুযোগে হালকা সিমে গিলকে পরাস্ত করেন ওকস। গিল এগিয়ে গিয়েছিলেন ডিফেন্স করবেন বলে। কিন্তু তা ব্যাটে লেগে স্মিথের হাতে চলে যায়।
তারপর নামেন ঋষভ পন্থ। উইকেটকিপিংয়ের সময় আঙুলে চোট লাগায় তিনি নামবেন কি না, সেই নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু যাবতীয় সংশয় উড়িয়ে ব্যাট করতে নামেন পন্থ। এখানেই তাঁর বীরত্ব। তবে খুব স্বাভাবিকভাবেই ব্যাটিংয়ে সেই ঝাঁজটা দেখা গেল না। আঙুলের চোট যে ভোগাচ্ছে, তা অত্যন্ত স্পষ্ট। তিনি ব্যাট করছেন ৩৩ বলে ১৯ রানে। অন্যদিকে ভারতের ব্যাটিংয়ের হাল ধরে রেখেছেন কেএল রাহুল। তিনি অপরাজিত আছেন ৫৩ রানে। তৃতীয় দিনে দুজনের জুটিতে বড় রানের আশায় টিম ইন্ডিয়া।