বিহারে ভোটের মুখে ভোটার তালিকা সংশোধন, এনআরসি-র পথে হাঁটা?

বিহারে ভোটের মুখে ভোটার তালিকা সংশোধন, এনআরসি-র পথে হাঁটা?

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


বিহার বিধানসভা ভোটের মুখে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের পাঠানো নির্দেশাবলি কেন্দ্রের এনআরসি-র দিকেই হাঁটা?

বিহারে বিধানসভা ভোটের মুখে হঠাৎ নিবিড়ভাবে ভোটার তালিকা সংশোধন করার একটি নির্দেশ পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্দেশে বলা হয়েছে, বুথস্তরের সরকারি কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা যাচাই ও সংশোধনের কাজ করবেন। এমনভাবে তাঁরা সেই কাজ করবেন যাতে একটিও ভুয়া নাম তালিকায় না থাকে। ভোটার তালিকায় বহু মৃত ব‌্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়। বুথস্তরের ওই কর্মীকে ভোটার তালিকা থেকে মৃত ব‌্যক্তিদের নাম খুঁজে বের করে তা বাদ দিতে হবে। তালিকায় যাতে কোনও ‘অবৈধ’ অনুপ্রবেশকারীর নাম না থাকে তাও সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। নতুন ভোটারদের নাম তোলার ক্ষেত্রে আগে নাগরিকত্বের বিষয়টিতে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর নিজস্ব নথি ছাড়াও তাঁর মা-বাবার নথিও যাচাই করতে হবে।

ভোটের আগে ভোটার তালিকা ঢালাও সংশোধনের কাজ করে নির্বাচন কমিশন। এবারের নির্দেশিকাটি অবশ‌্যই ব‌্যতিক্রমী। বাংলার মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায় তা হাতে পেয়েই অভিযোগ জানিয়েছেন, যেভাবে ভোটার তালিকা সংশোধন করতে বলা হয়েছে তা জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তথা এনআরসি-র চেয়েও ভয়ংকর।

কিছুদিন আগেই এনআরসি নিয়ে উত্তাল হয় দেশ। আন্দোলনের চাপে কেন্দ্র এনআরসি তৈরি থেকে বিরত থাকে। বাংলার মুখ‌্যমন্ত্রীর আশঙ্কা থেকে এই প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কি ঘুরপথে এনআরসি-র রাস্তাতেই হাঁটছে কেন্দ্র? ভোটার তালিকা নাগরিকপঞ্জি নয়; কারণ শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের নামই ভোটার তালিকায় থাকে। আবার তালিকায় নাম না থাকা মানেই কারও নাগরিকত্ব চলে যাওয়া নয়। তবে আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষেরই নাগরিকত্বের একমাত্র পরিচয় তাঁর ভোটার তালিকায় নাম থাকা। নানারকম নথির অভাবে কারও নাম তালিকা থেকে বাদ পড়লে ভবিষ‌্যতে তাঁর নাগরিকত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। ১৯৮৬ ও ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন অনুযায়ী ১৯৮৭ সালের পর জন্মেছে এমন নাগরিকদের বাবা-মা কারও একজনের এবং ২০০৪ সালের পর জন্মেছে এমন আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে বাবা-মা দু’জনেরই জন্মের নথি যাচাই করতে বলা হয়েছে।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বলা, বাবা ও মা যে জন্মাবধি ভারতেরই নাগরিক সেই প্রমাণ দিতে হবে। গ্রামের গরিব ও সাধারণ মানুষের কাছে কোনও নথিই থাকে না। মুখ‌্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, নথির অপ্রতুলতা দেখিয়ে ‘প্রকৃত’ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে। আপাতত বিহারকে সামনে রেখে এই সংশোধন হলেও নিশানা বাংলা, আশঙ্কা তাঁর। বাংলায় যে বহু প্রকৃত ভোটারের নাম ইতিমধ্যেই খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। এই নির্দেশ আরও বড় সংকট তৈরি করে কি না এখন সেটাই দেখার।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *