বিশ্বাসঘাতক

বিশ্বাসঘাতক

ব্লগ/BLOG
Spread the love


  • অমিতাভ সাহা

(১)

গ্রীষ্মের সন্ধ্যা। বছর ত্রিশের ইশা ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে বসে কফি খাচ্ছিল। হঠাৎই দরজায় মৃদু করাঘাত। দরজা খুলতেই দেখল, সামনে দাঁড়িয়ে অ্যাপার্টমেন্টের কেয়ারটেকার। হাতে খাম। ভেতরে একটি হাতে লেখা চিঠি। লেখার ভঙ্গিটি মন ছুঁয়ে যায়।

প্রিয় ইশা,

জানি না, আমাকে মনে রেখেছ কি না। পাঁচ বছর আগে সিমলায় আমাদের দেখা হয়েছিল। তোমার সাথে কথা বলা খুব জরুরি। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় পার্ক স্ট্রিটের ‘দ্য ক্যাসকেড’ রেস্তোরাঁয় এসো। এক গভীর রহস্য তোমার সামনে উন্মোচিত হবে।

ইতি,

     আরিয়ান।

ইশা চমকে উঠল। আরিয়ান! বছর পাঁচেক আগে সিমলায় একটি প্রোজেক্টের কাজে গিয়ে আরিয়ানের সঙ্গে পরিচয়। পরিচয়ের পর কয়েকটি দিন কেটেছিল অন্তরঙ্গ আলাপচারিতা, হাসি-ঠাট্টা আর এক অদ্ভুত ভালোলাগায়। তারপর আরিয়ান হঠাৎই উধাও হয়ে যায়।

পাঁচ বছর পর এই চিঠি! ইশার মনে একদিকে পাঁচ বছরের নীরবতার কারণ জানার প্রবল কৌতূহল, অন্যদিকে এক অজানা ভয় দানা বাঁধতে লাগল।

শনিবার। ঘড়ির কাঁটায় সন্ধে সাড়ে ছ’টা। ইশা একটি ট্যাক্সি নিয়ে রেস্তোরাঁর সামনে এসে দাঁড়াল। রেস্তোরাঁর ভেতরে আবছা আলো, মৃদু সংগীতের সুর ভেসে আসছে। ইশা একটু এক্সাইটেড। রেস্তোরাঁয় ঢুকে এদিক-ওদিক চোখ ঘোরাতে লাগল। হঠাৎ দুজনের চোখাচোখি হল। আরিয়ানের মুখে ম্লান হাসি, চোখে গভীর আবেগ। পাঁচ বছরের দূরত্ব যেন এক লহমায় মুছে গেল।

আরিয়ান টেবিল থেকে উঠে এসে ইশার হাত ধরল। প্রাথমিক কুশল বিনিময়ের পর আরিয়ান সরাসরি আসল কথায় এল। কণ্ঠে এক অদ্ভুত গাম্ভীর্য।

-ইশা, ভীষণ বিপদে পড়েছি। এক অন্ধকার জালে জড়িয়ে পড়েছি আমি, যেখান থেকে বেরোনো প্রায় অসম্ভব।

ইশা অবাক হয়ে বলল, ‘কীসের বিপদ?’

-‘সিমলায় যে সংস্থার হয়ে কাজ করছিলাম, তারা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উদ্ধারের কাজ করে। আপাতদৃষ্টিতে বৈধ মনে হলেও আসলে ওই সংস্থা আন্তর্জাতিক চোরাচালানচক্রের সঙ্গে জড়িত। সিমলায় আমাদের দেখা হওয়ার কিছুদিন পরেই তাদের বেশ কিছু অপরাধমূলক কার্যকলাপের কথা জানতে পারি আমি। ওদের বিরুদ্ধে আরও তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের জন্য আরেকটি নতুন ঠিকানায় ওদের নতুন প্রোজেক্টে জয়েন করি, যেখানে ওদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আরও নিশ্চিত হই।’

ইশা স্তম্ভিত। “এখন কী হবে?”

-‘গত সপ্তাহে ওদের হাত থেকে পালিয়েছি। ওরা আমাকে খুঁজছে। ওরা জানে, আমার কাছে সব তথ্য আছে, যা ফাঁস হলে ওদের পুরো নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়বে।’

ইশার মন আরিয়ানের বিপদের কথা শুনে ব্যথিত হয়ে উঠল। বলল, ‘আমি কী করতে পারি আরিয়ান?’

-‘তুমিই পারো, ইশা। একটি এনক্রিপ্টেড ড্রাইভে ওদের সব তথ্য আছে। সেটা তোমাকে দিচ্ছি।’

আরিয়ান পকেট থেকে একটি ইউএসবি ড্রাইভ বের করে ইশার হাতে দিল।

(২)

রেস্তোরাঁ থেকে ফিরে আসার থেকেই ইশার মন অস্থির। আরিয়ানের দেওয়া ইউএসবি ড্রাইভটি হাতে নিয়ে সে ভাবতে লাগল, আরিয়ান জীবনের কঠিন মুহূর্তে তার শরণাপন্ন হয়েছে। সে ল্যাপটপে ইউএসবি ড্রাইভটি ঢোকাল। ড্রাইভের ভেতরে একটি ফাইল, যার নাম ‘প্রোজেক্ট ফিনিক্স’। ফাইলটি পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড। ইশা অনেক চেষ্টা করেও খুলতে পারল না।

সেই রাতে ইশা ঘুমোতে পারল না। আরিয়ানের মুখ, তার চোখের আতঙ্ক, তার অনুরোধ- সব মিলে এক অস্থির রাত কাটল। পরদিন সকালে সংবাদপত্র খুলতেই চমকে উঠল। প্রথম পাতায় বড় খবর : ‘আন্তর্জাতিক চোরাচালানচক্রের সদস্য আরিয়ান সেনগুপ্তকে কলকাতার একটি হোটেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে অস্বাভাবিক মৃত্যু!’ ইশা স্তম্ভিত। গত সন্ধ্যায় আরিয়ানের সঙ্গে কথা হল, আর আজ সকালে সে মৃত! প্রাণহানির আশঙ্কা করেছিল, সেই আশঙ্কাই সত্যি হল!

ইশা দ্রুত বাল্যবন্ধু অনির্বাণের সঙ্গে দেখা করল। অনির্বাণ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ। অনির্বাণের কাছে গিয়ে পুরো ঘটনাটা খুলে বলল। অনির্বাণ সব মনোযোগ দিয়ে শুনে ইউএসবি ড্রাইভটি নিয়ে কিছুক্ষণ পরীক্ষা করল। ‘এটা খুবই জটিল এনক্রিপশন। তবে আমি চেষ্টা করছি’, অনির্বাণ বলল।

কিছুক্ষণ পর অনির্বাণ খুশি হয়ে বলল, ‘পেরেছি! ফাইলটা ডেক্রিপ্ট করে ফেলেছি।’

ফাইলটি খুলতে দুজনেই চমকে উঠল। ফাইলের ভেতরে রয়েছে- আন্তর্জাতিক চোরাচালানচক্রের সমস্ত তথ্য, তাদের সদস্যদের নাম, ছবি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেলস। এবং জ্বলজ্বল করছে তাদের প্রধানের নাম- বিক্রম সান্যাল। বিক্রম সান্যাল কলকাতার একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। ফাইলের মধ্যে আরও একটি ছোট ভিডিও ক্লিপ। ভিডিওটিতে আরিয়ান ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বলছে, ‘ইশা, বিক্রম সান্যাল আমার পেছনে লেগেছে। আর… আমি আসলে আরিয়ান সেনগুপ্ত নই। আমি একজন পুলিশ ইনফরমার। আমার নাম রাজীব মেহরা। এই চক্রের ভেতরের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য আরিয়ানের ছদ্মবেশ নিয়েছি। তোমার বাবাও এই চক্রের গুরুত্বপূর্ণ নথির সন্ধান পেয়েছিলেন, যা তুমি জানো না।’

ইশা হতবাক। মনে পড়ল, বাবা প্রায়ই বলতেন, তিনি এক বিশেষ নথির খোঁজ করছেন, কিন্তু তিনি কখনও বিস্তারিত কিছু বলেননি। তার বাবা দু’বছর আগে এক রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তখন ভেবেছিল, এটা নিছকই দুর্ঘটনা।

ইশা তক্ষুনি বাবার পুরোনো স্টাডি রুমে গেল। সেখানে বাবার গবেষণাপত্র, বই এবং কিছু ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ছিল। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব দেখতে লাগল। একটি পুরোনো ড্রয়ারের পেছনে সে একটি লকার দেখতে পেল। লকার খুলতেই তার চোখ কপালে উঠল। ভেতরে একটি পুরোনো পুঁথি, যার মধ্যে জটিল নকশা আঁকা এবং একটি চিঠি।

চিঠিতে তার বাবার হাতে লেখা :

প্রিয় ইশা,

আমি একটি আন্তর্জাতিক চোরাচালানচক্রের সন্ধান পেয়েছি, যারা প্রাচীন নিদর্শন পাচার করে। তাদের কার্যকলাপের গুরুত্বপূর্ণ নথি খুঁজে পেয়েছি। বিক্রম সান্যাল এই চক্রের মূল হোতা। সে আমাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তোকে এই বিপজ্জনক সত্য থেকে দূরে রাখতে চেয়েছিলাম। যদি আমার কিছু হয়, তাহলে এই নথি সঠিক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিস।

ইতি,

                তোর বাবা।

ইশা স্তম্ভিত। তাহলে তার বাবাও এই চক্রের হদিস পেয়েছিলেন। রহস্য উন্মোচন করতে গিয়েই হয়তো মারা গেছেন। সে বুঝতে পারল, বাবার অসমাপ্ত কাজ তাকেই শেষ করতে হবে। কিন্তু বিক্রম সান্যাল, যিনি এত প্রভাবশালী, তাকে মোকাবিলা করা সহজ হবে না।

ইশা আরিয়ানের দেওয়া ইউএসবি ড্রাইভের তথ্য এবং বাবার পুঁথি নিয়ে গভীর সংকটে পড়ল। ঠিক করল, পুলিশের সাহায্য নেবে। কিন্তু তার মনে ভয় কাজ করছিল। রাজীব (আরিয়ান) একজন পুলিশ ইনফরমার ছিল, তার মানে পুলিশ মহলেও বিক্রম সান্যালের প্রভাব থাকতে পারে।

ঠিক তখনই ইশার ফোনে অচেনা নম্বর থেকে কল এল। ফোন তুলতেই ওপাশ থেকে কর্কশ গলা শোনা গেল। ‘ইশা, তোমার বাবার রেখে যাওয়া নথিপত্র আর সেই পুঁথি আমার চাই। যদি না দাও, তাহলে তোমার কী হবে, কল্পনাও করতে পারবে না।’

ইশা চমকে উঠল। বিক্রম সান্যাল জেনে গেছে! দ্রুত ফোন রেখে দিল। অনির্বাণ সব শুনে বলল, ‘আমাদের আর সময় নেই। এই নথি আর পুঁথি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে।’

ইশা এই অবস্থায় কাকে বিশ্বাস করবে বুঝতে পারছিল না। সে একজন প্রথিতযশা আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করে সবকিছু খুলে বলল। আইনজীবী তাকে আশ্বস্ত করে বললেন, তিনি সব প্রমাণ সংগ্রহ করে একটি শক্তিশালী মামলা তৈরি করবেন।

এর মধ্যেই একদিন গভীর রাতে ইশা ফ্ল্যাটে হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখে, একজন মুখোশধারী ব্যক্তি তার বাবার স্টাডি রুমের দিকে যাচ্ছে। সে দ্রুত অ্যালার্ম বাজিয়ে দিল। মুখোশধারী দ্রুত পালিয়ে গেল। ইশা নিশ্চিত হল, বিক্রম সান্যাল তার পেছনে লেগেছে। সে শুধুমাত্র নথি আর পুঁথি খুঁজছে না, সে হয়তো অন্য কিছুও খুঁজছে। ইশা পুরোনো পুঁথিটা পরীক্ষা করে দেখল। পুঁথির শেষ পাতায় একটি ছোট পকেট ছিল, যেখানে একটি ছোট ডায়মন্ড রাখা।

   (৩)

ইশা অনির্বাণকে ডায়মন্ডটা দেখাল। সে পরীক্ষা করে বলল, ‘এই ডায়মন্ডের ভেতরের কার্বন গঠন খুবই বিরল। এটা শুধু রত্ন নয়, মনে হচ্ছে, এর মধ্যে গোপন তথ্য এনকোড করা আছে।’

ইশা অবাক হল। এই ডায়মন্ড একটি ডেটা স্টোরেজ ডিভাইস! আরিয়ানের ‘প্রোজেক্ট ফিনিক্স’ বলতে সম্ভবত এই ডায়মন্ডে থাকা তথ্যকেই বোঝানো হয়েছে। ইশা অধ্যাপক ডঃ রায়কে খুঁজে বের করল, যিনি প্রাচীন খনিজ ও এনক্রিপশন নিয়ে কাজ করেন। ডঃ রায় ডায়মন্ডটি পরীক্ষা করে নিশ্চিত করলেন যে এর মধ্যে ডেটা এনকোড করা আছে। বললেন, ‘এই ধরনের টেকনলজি খুব বিরল। এটি খুলতে সময় লাগবে।’

ইশার মনে অস্থিরতা কাজ করছিল। সে জানত, বিক্রম সান্যাল তার ওপর নজর রাখছে। ঠিক তখনই ইশার আইনজীবী ফোন করে জানালেন, ‘ইশা, তোমার বাবার ডেথ কেসের ফাইলটা আবার দেখতে গিয়েছিলাম। এটা কোনও সাধারণ দুর্ঘটনা ছিল না। কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাইল থেকে উধাও।’ ইশা আইনজীবীর কথায় স্তম্ভিত। তার বাবার মৃত্যু আসলেই খুন! আর এই সবকিছুর পেছনে বিক্রম সান্যাল।

এদিকে ডঃ রায় ডায়মন্ডের ভেতরের ডেটা ডিকোড করতে শুরু করলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি একটি ভিডিও ফাইল প্লে করলেন। ভিডিওটিতে দেখা গেল, বিক্রম সান্যাল আন্তর্জাতিক চোরাচালানচক্রের এক মিটিংয়ে বসে আছে এবং তাঁদের সঙ্গে একজন পরিচিত মুখও রয়েছে – অনির্বাণ মুখার্জি। ইশা হতবাক। অনির্বাণ! যে তার বাল্যবন্ধু, যাকে সে বিশ্বাস করেছিল, সে-ই এই চক্রের সঙ্গে জড়িত! অনির্বাণ ভিডিওতে বিক্রম সান্যালের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলছে। ভিডিওতে অনির্বাণ বলছে, ‘প্রোজেক্ট ফিনিক্স-এর আসল গুপ্তধন এই ডায়মন্ড। আর সেই ডায়মন্ড এখন ইশার হেপাজতে।’

ইশার সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু, সে-ই বিশ্বাসঘাতক! সে-ই হয়তো আরিয়ানকে খুন করিয়েছিল, যাতে সে এই ডায়মন্ডের খোঁজ পায়। ইশা যখন ভিডিওটি দেখছিল, তখন অনির্বাণ তার পাশে দাঁড়িয়েছিল। অনির্বাণের মুখে এক বিজয়ের হাসি। ‘তুমি সব জেনে ফেলেছ, ইশা। কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।’ অনির্বাণ একটি ছুরি বের করে ইশার দিকে এগিয়ে এল। ইশা হতবাক হয়ে পিছিয়ে গেল। তার চোখে অবিশ্বাস আর যন্ত্রণা। অনির্বাণ যখন ইশার দিকে ছুরি নিয়ে এগিয়ে এল, তখন ইশা আতঙ্কিত হলেও নিজেকে সামলে নিল।

ডঃ রায় দ্রুত তার ডেস্কের নীচে রাখা অ্যালার্ম বোতাম টিপে দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সিকিউরিটি অ্যালার্ম বেজে উঠল। অনির্বাণ ঘাবড়ে গেল, তার চোখে তখনও এক নির্মম নিষ্ঠুরতা। ‘কেউ বাঁচাতে পারবে না তোমাকে, ইশা,’ সে বলল। ইশা বুদ্ধি করে ডঃ রায়ের টেবিলের উপর থেকে একটি ভারী ফাইল তুলে অনির্বাণের দিকে ছুড়ে মারল। অনির্বাণ মুহূর্তের জন্য বিচলিত হতেই ইশা দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে ছুটে পালাল। অনির্বাণ তার পিছু ধাওয়া করল।

ইশা ছুটতে ছুটতে করিডর দিয়ে সিঁড়ির দিকে গেল। হঠাৎই করিডরে বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে দেখা গেল। ইনস্পেকটর দেবজ্যোতি রায় এই অ্যালার্মের শব্দ শুনেই দ্রুত ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। অনির্বাণ পুলিশ দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেল। তার মুখে একরাশ হতাশা। পুলিশ তাকে ঘিরে ফেলল। ইনস্পেকটর দেবজ্যোতি রায় অনির্বাণকে গ্রেপ্তার করলেন।

‘আমি জানতাম, অনির্বাণ মুখার্জি এই চক্রের সঙ্গে জড়িত,’ ইনস্পেকটর দেবজ্যোতি রায় ইশার দিকে তাকিয়ে বললেন। ‘রাজীব (আরিয়ান) যে একজন পুলিশ ইনফরমার ছিল, এই তথ্যটি গোপনে আমাকে জানিয়েছিল। আরিয়ানের মৃত্যুর পর আমি অনির্বাণকে সন্দেহ করতে শুরু করি। আমি ওকে নজরদারিতে রেখেছিলাম। ডঃ রায়ের সঙ্গে আমি আগেই যোগাযোগ করেছিলাম এবং তাকে এই অ্যালার্ম সিস্টেমটি ইনস্টল করতে বলেছিলাম, যদি কোনও বিপদ হয়।’

ইশা স্বস্তি পেল। আরিয়ানের (রাজীবের) মৃত্যু বৃথা যায়নি। অনির্বাণকে জেরা করা হল। সে স্বীকার করল, সে বিক্রম সান্যালের হয়ে কাজ করত। সে-ই আরিয়ানকে খুন করিয়েছিল, কারণ আরিয়ান ‘প্রোজেক্ট ফিনিক্স’-এর তথ্য নিয়ে পালিয়েছিল। অনির্বাণ চেয়েছিল সেই ডায়মন্ডের দখল নিতে। বিক্রম সান্যালকেও সমস্ত প্রমাণ সহ গ্রেপ্তার করা হল। তার আন্তর্জাতিক চোরাচালানচক্র ভেঙে দেওয়া হল। ইশার বাবার খুনের রহস্যও উন্মোচিত হল। বিক্রম সান্যালই ইশার বাবাকে খুন করিয়েছিলেন, কারণ তিনি এই চক্রের গুরুত্বপূর্ণ নথি খুঁজে পেয়েছিলেন এবং তা ফাঁস করার চেষ্টা করছিলেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *