বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ভোটার তালিকা নিয়ে প্রশ্ন, ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন, ভিভিপ্যাট গণনা নিয়ে প্রশ্ন, অকস্মাৎ ভোটের হার বেড়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন। গত এক দেড় বছরে কার্যত দেশের সার্বিক নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েই একের পর এক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। রীতিমতো প্রশ্নের মুখে কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা। যার ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই এবার ভোটপ্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ্ব করার কাজ শুরু করল নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের তরফে বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছে গত ছ’মাস ধরে দেশজুড়ে সব রাজনৈতিক দল-সহ অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে ভোটপ্রক্রিয়ার সব স্তরে স্বচ্ছ্বতা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকায় শুদ্ধিকরণ, ভোটপ্রক্রিয়ায় সরলীকরণ, এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে গোটা প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ্ব করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কমিশন জানিয়েছে, গোটা ভোটপ্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ্ব করার লক্ষ্যে মোট ২৮টি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ৪ হাজার ৭১৯টি বৈঠক করা হয়েছে। এর মধ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকরাই ৪০টি বৈঠক করেছেন। রাজ্য, জেলাস্তরেও রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজ্য ও জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক দলগুলির একেবারে শীর্ষস্তরে নেতানেত্রীদের সঙ্গে বৈঠকও।
কমিশন যে ২৮টি পদক্ষেপ করছে তার মধ্যে রয়েছে, অস্বীকৃত এবং নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা, বিএলও-দের সচিত্র পরিচয়পত্র প্রদান, ইভিএমের মাইক্রোকন্ট্রোলার নিয়মিত পরীক্ষা, অন্যান্য দেশের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা, একটি অ্যাপে ভোট সংক্রান্ত সব সমস্যার সমাধান, ১০০ শতাংশ ওয়েবকাস্টিং, প্রতি মুহূর্তে ভোটের হারের আপডেট দেওয়া। এর মধ্যে অনেকগুলি ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছে। আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা চলছে।
দিন কয়েক আগে ভোটার তালিকা তুলে ধরে ভুয়ো ভোটার সংক্রান্ত একগুচ্ছ অভিযোগ করেন রাহুল। লোকসভার বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, মোট ছ’রকম ভাবে ভোটচুরি হচ্ছে। এমনকী ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপি নির্বাচন কমিশনের সাহায্যে বহু আসনে ভোটচুরি করে জিতেছে বলে দাবি করেন কংগ্রেস নেতা। যদিও নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, কমিশনের চোখে সব দল সমান। ভোটাররাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কমিশনের স্বচ্ছ্বতাও প্রশ্নাতীত।