সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: মণিপুরে জারি রাষ্ট্রপতি শাসন। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন এন বিরেন সিং। গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে জাতিহিংসায় উত্তপ্ত উত্তরপূর্বের রাজ্য। কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়া অসংখ্য মানুষ। যার জেরে আঙুল উঠেছিল মণিপুরের গেরুয়া সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে। ঘরে বাইরে চাপের মুখে গত ৯ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানে জারি হল রাষ্ট্রপতি শাসন।
২০২৩ সালের ৩ মে মণিপুরে শুরু হয় মেতেই-কুকি সংঘর্ষ। সেই থেকেই উত্তপ্ত উত্তর-পূর্ব রাজ্যটি। ২০২৪-এর শেষ দিন মণিপুরে রক্তক্ষয়ী হিংসার জন্য রাজ্যের সমস্ত নাগরিকের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন বিরেন সিং। ইম্ফলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সর্বসাধারণের উদ্দেশে তাঁর বার্তা ছিল—“গোটা বছর দুর্ভাগ্যজনক কেটেছে আমাদের। গত বছরের ৩ মে থেকে যা ঘটে চলেছে রাজ্যে তার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি আমি। অনেকেই প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। অনেকে ঘরছাড়া হয়েছেন। আমি অনুতপ্ত। ক্ষমা চাইছি। কিন্তু গত তিন-চার মাসের শান্তি পরিস্থিতি দেখে আমার আশা যে ২০২৫-এর মধ্যে রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরবে।” সেই সঙ্গে রাজ্যের ৩৫টি উপজাতি গোষ্ঠীকে মিলমিশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এরপরও টলমল করছিল তাঁর গদি।
সম্প্রতি শোনা গিয়েছিল, শেষপর্যন্ত গত রবিবার ইস্তফা দেন তিনি।মণিপুর বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে কংগ্রেস। সেই খবর পান বিরেন। আস্থা ভোটে বিরেন সরকারের পতনের সম্ভাবনা ছিল প্রবল। রাজনৈতিক এই আশঙ্কার মধ্যেই রবিবার দিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ইম্ফলে ফিরেই রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এরপরই বৃহস্পতিবাসরীয় সন্ধ্যায় মণিপুরে জারি হল রাষ্ট্রপতি শাসন।