বিয়াল্লিশে স্তন ক্যানসার, জটিল অস্ত্রোপচারে হরিদেবপুরের মহিলার নারীত্ব ফেরাল বাঙুর হাসপাতাল

বিয়াল্লিশে স্তন ক্যানসার, জটিল অস্ত্রোপচারে হরিদেবপুরের মহিলার নারীত্ব ফেরাল বাঙুর হাসপাতাল

স্বাস্থ্য/HEALTH
Spread the love


অভিরূপ দাস: বিয়াল্লিশে স্তন ক্যানসার। যা ধরে নিয়েছিল স্তনবৃন্তকেও! অস্ত্রোপচারে বাদ দিতে হবে নারীত্বের চিহ্ন! ভেঙে পড়েন তৃণা মণ্ডল। আশ্বাস দেন চিকিৎসকরা। তারপর? বঙ্গের হাসপাতাল দেখাল, তারা পিছিয়ে নেই। এম আর বাঙুর হাসপাতালে পিঠের নিচ থেকে মাংস নিয়ে স্তন তৈরি করে দেওয়া হল হরিদেবপুরের তৃণা মণ্ডলের।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এমনভাবে তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে, অন্তর্বাস পরে থাকলে কেউ বুঝতেই পারবে না যে, স্তনের জায়গায় পিঠের মাংস নিয়ে লাগানো হয়েছে। জটিল এই অস্ত্রোপচারের নাম, ‘স্কিন স্পেয়ারিং মাসটেকটমি উইথ রিকনস্ট্রাকশন বাই ল্যাটিসিমাস ডরসি মায়োকুটেনাস ফ্ল্যাপ।’ বেসরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসার খরচ কয়েক লক্ষ টাকা। এম আর বাঙুর হাসপাতালে তা হল বিনামূল্যে। হাসপাতালের সুপার ডা. শিশির নস্কর জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার জেলা হাসপাতালে যে পরিকাঠামো তৈরি করে দিয়েছে, তাতে এখন সেখানেও এই ধরনের জটিল অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছে। স্তন ক্যানসার নিয়ে এম আর বাঙুরে যান দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা তৃণা মণ্ডল।

অঙ্কোলজি বিভাগে ডা. কৌশিক রায়, ডা. অংশুমান ভট্টাচার্যর কাছে প্রথম যান তিনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, টিউমারটা এত বড় ছিল তাতে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। নিউ অ্যাডজুভেন্ট কেমোর ছ’টা সাইকেল চলে। এতে টিউমারটা ছোটও হয়ে যায়। কিন্তু বিপদ দেখা যায় অন্য জায়গায়। কেমোর পরে ম্যামোগ্রাম করে দেখা যায় স্তনবৃন্ত, চারপাশের বাদামি আবরণের সম্পূর্ণটাই ধরে নিয়েছে ক্যানসারের কোষ। ফলে বাদ দিতে হবে গোটা স্তনটা। এম আর বাঙুর হাসপাতালের শল্য চিকিৎসা বিভাগের ডা. রণিত রায় জানিয়েছেন, মূলত এটা একটা ‘মাল্টিসেন্ট্রিক টিউমার’। স্তন বাঁচিয়ে অস্ত্রোপচার করা অসম্ভব ছিল। এদিকে মাত্র বিয়াল্লিশে স্তন বাদ দেওয়ার প্রস্তাবে ভেঙে পড়েন রোগী। এসব ক্ষেত্রে ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করা যায়। কিন্তু সেই খরচ বহন করা সম্ভব নয় রোগীর পক্ষে।

চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন, পিঠ থেকে মাংস তুলে এনে বানিয়ে দেওয়া হবে স্তন। ল্যাটিসিমাস ডরসি পিঠের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশি। সেখান থেকে মাংস নিয়ে বানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্তন। ডা. রণিত রায় জানিয়েছেন, স্তনে মাংস প্রতিস্থাপন করার পরই কাজ শেষ হয় না। লক্ষ রাখতে হয়, ওই অংশে রক্ত সঞ্চালন ঠিক হচ্ছে কি না। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক না হলে মাংস পচে কালো হয়ে যেতে পারে। রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে আপাতত। জটিল এই অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিলেন ডা. রণিত রায়, ডা. প্রসেনজিৎ বসু, ডা. মেহুল প্যাটেল। এ ধরনের অস্ত্রোপচারে অ্যানাস্থেশিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। সে দায়িত্ব সামলেছেন ডা. ঝুমুর রায়, ডা. দীপাঞ্জনা ঘোষ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *