সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ ৪৮ বছরের আইনি লড়াই। ৪০টা বসন্ত গরাদবন্দি জীবন কাটানোর পর অবশেষে বেকসুর খালাস হলেন লখন পাসি। এতদিনে তাঁর বয়স হয়েছে ১০৪ বছর। তবে লড়াই তো লড়াই। চোখে-মুখে বিজয়ের হাসি নিয়ে অবশেষে জেল থেকে বের হলেন শতায়ু এই বৃদ্ধ। ১৯৮২ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল আদালত। সেই আদালতই তাঁকে নির্দোষ বলে মুক্তি দিল।
এই ঘটনার সূত্রপাত ১৯৭৭ সালে। উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বি থানা এলাকার গৌরায়ে গ্রামে। এক অশান্তিকে কেন্দ্র করে ওই বছরের ৬ আগস্ট লখনের বাড়িতে মদ্যপ অবস্থায় হামলা চালায় ১০-১২ জন লোক। লাঠি নিয়ে চলে মারামারি। প্রাণে বাঁচতে পালটা হামলা চালান লখন। অভিযোগ, এই ঘটনায় প্রভু সরোজ নামে হামলাকারীদের একজন গুরুতর আহত হন। পরে মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় লখনকে। যদিও পরে জামিন পান তিনি। তবে একেবারে রেহাই পাননি। ৫ বছর পর ১৯৮২ সালে এই মামলাতেই সেশন কোর্ট লখনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। পালটা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে একের পর এক আদালতের দ্বারস্থ হতে থাকেন লখন। দীর্ঘ বছর ধরে চলতে থাকে এই আইনি লড়াই। শেষে এলাহাবাদ হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হন লখন। দীর্ঘ ৪৮ বছর পর সেখানেই বেকসুর খালাস হলেন শতায়ু লখন।
এ প্রসঙ্গে লখনের আইনজীবী বলেন, এই মামলায় কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ নেই। আদালত মামলাটি গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করেছে। এবং ৪৮ বছর পর লখনকে নির্দোষ ঘোষণা করে মুক্তি দিয়েছে। পাশাপাশি মুক্তির পর উচ্ছ্বসিত লক্ষ্মণ। তিনি বলেন, “আমি কখনও আশা ছাড়িনি। ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে গিয়েছি। সেই লড়াই অবশেষে সার্থক হয়েছে। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন।”
কৌশাম্বির অতিরিক্ত জেলা জজ পূর্ণিমা প্রাঞ্জল বলেন, ২০২৪ সালে হাইকোর্টের ওয়ারেন্টে লখন পাসিকে মাঞ্জনপুর জেলা কারাগারে আনা হয়েছিল। তাঁর আবেদনের বিচার চলছিল আদালতে। বেকসুর খালাস পেলেও প্রায় ২০ দিন জেলে থাকতে হয়েছিল লখনকে। সে প্রসঙ্গে পূর্ণিমা বলেন, “মুক্তির নির্দেশিকা সময়মতো জেলে এসে পৌছয়নি, তাই এই দেরি। জেল কর্তৃপক্ষ নোটিস ছাড়া কাউকে মুক্তি দিতে পারে না।”