অর্ণব দাস, বারাসত: ‘প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে…’। না, প্রেম মোটেও এমন সীমাবদ্ধ কিছু নয়। বরং তার বিস্তার বৃহৎ থেকে বৃহত্তর। তাই তো বউমার সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলতে গিয়ে প্রেমে পড়ে যান বছর পঞ্চাশের একাকী প্রৌঢ়। স্বামীহারা তরুণীও সাহচর্য, সহমর্মিতা পেয়ে খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরতে চাইছিলেন সেই সম্পর্ক। এভাবেই দিন কাটানোর মাঝেই একদিন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন অসমবয়সি দুই সঙ্গীহারা যুগল। কাকাশ্বশুর আর বউমার সম্পর্ক বদলে গেল স্বামী-স্ত্রীতে! এমনই গল্পের মতো ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায়।
স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই একাকী হয়ে পড়েছিলেন আর্জিনা বিবি (নাম পরিবর্তিত)। ওদিকে ভরা সংসার থাকলেও স্ত্রী মৃত্যুর পর থেকে সঙ্গীর অভাবে জীবনটা একেবারে বিষাদময় হয়ে উঠেছিল বছর পঞ্চাশের কাকাশ্বশুর জামাল খাঁ-র (নাম পরিবর্তিত)। শেষে শ্বশুর-বউমার চার হাত এক হয়ে একাকীত্ব ঘুচল দু’জনের। তবে এই পথ খুব একটা মসৃণ ছিল না। পারিবারিক বাধা এসেছিল। তবু বৃহস্পতিবার দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা এলাকার দুই মানব-মানবী সেসব উপেক্ষা করে যেভাবে নিজেদের দ্বিতীয় বসন্তে ভাসলেন, তা তারিফযোগ্য! তাঁদের বিয়ের কথা চাউর হতেই চর্চা শুরু হয়েছে পাড়ার মোড় থেকে চায়ের দোকান সর্বত্র। এমনও হয়? কারও কারও মুখে বিস্ময়। আবার কেউ ছিছিক্কার করতেও পিছপা হচ্ছেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্পর্কে কাকা-শ্বশুর বছর পঞ্চাশের জামাল খাঁ’র (নাম পরিবর্তিত) ভরা সংসার। ছেলে, বউমা, নাতি সকলেই রয়েছে। তবুও বছর তিন আগে স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই একাকী সে। এরপরই মধ্যে বছর দুই আগে মৃত্যু হয় ভাইপোর। মেয়েরও বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারপর থেকে একাকী হয়ে পড়েন প্রতিবেশী বউমা আর্জিনা।
ধীরে ধীরে স্ত্রীহারা কাকাশ্বশুর ও বছর পঁয়ত্রিশের বউমার মধ্যে শুরু হয় মেলামেশা। ঘনিষ্ঠতা বাড়ে, একে অপরের প্রতি দুর্বলতা তৈরি হয়। এরপরই মাসখানেক আগে তাঁরা নতুন করে সংসার বাঁধার পরিকল্পনা করে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। নিয়ম মেনে দু’জনে রেজিস্ট্রিও সেরে ফেলেন। বিষয়টি জানতে পেরে যথারীতি আপত্তি জানায় জামালের পরিবার। কিন্তু প্রেমের টানে কেউই তাদের সিদ্ধান্ত টলাতে পারেনি। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে বিবাহ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা। আপাতত আর্জিনার বাড়িতেই রয়েছে তাঁর স্বামী ‘শ্বশুর জামাল’।