সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের তাণ্ডবে বিকাশ ভবনে আটকে পড়েন পাঁচশোরও বেশি সরকারি কর্মী। তাঁদের মধ্যে কেউ অন্তঃসত্ত্বা। আবার কেউ অসুস্থ। তাঁদের উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের উপর হামলা চালান আন্দোলনকারীরা। তা সত্ত্বেও সাত ঘণ্টা ধরে সংযমের পরিচয় দিয়েছে পুলিশ। যেটুকু লাঠিচার্জ হয়েছে তা শুধুমাত্র বিকাশ ভবনে কর্মরত সরকারি কর্মীদের বের করতে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে লাঠিচার্জের ঘটনার ব্যাখ্যা দিলেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার।
এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার বলেন, “চাকরিহারা বিকাশ ভবনে ১০ দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলেন। গতকাল অবস্থান অন্যরকম তেহারা নেয়। দু-আড়াই হাজার লোক চলে আসেন। ব্যারিকেড ভাঙেন। পুলিশ অনুরোধ করলেও শোনেননি। পুলিশকে ধাক্কাধাক্কি করে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। কাউকে বেরতে দেবেন না বলেন। পুলিশ সচেতনভাবে কিছু করেনি। পূর্ণ সম্মান দেখিয়ে, ধৈর্য দেখিয়েছে পুলিশ। অ্য়াকশন নিলে গেট ভাঙার সময় করা যেত। ৭ ঘণ্টা ধরে পুলিশ বুঝিয়েছে। বিকাশ ভবনে ৫৫টি দপ্তর, ৫০০-৬০০ কর্মী রয়েছেন। সন্ধের পর তাঁরা বেরতে চান। কিন্তু আন্দোলনকারীরা এককাট্টা বেরতে দেবেন না। পুলিশ তা সত্ত্বেও কিছু করেনি। বুঝিয়েছেন। মাইকিং করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “বিকাশ ভবনের ভিতরে অনেকে প্যানিক করতে শুরু করেন। ফোন করেন। একজন সন্তানসম্ভবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়ি ফিরতে চান। একজনের মা অসুস্থ। তিনি অসহায়ভাবে ঝাঁপ দেন। পা ভেঙে গিয়েছে। বারবার চেষ্টা করেছি। উচ্ছৃঙ্খল বাধা এসেছে। তারপরেও আমরা বারবার মাইকিং করি। শান্তিপূর্ণ অবস্থানে কোনও বাধা নেই বলি। যারা বিনা দোষে বিকাশ ভবনে আটকে আছেন তাঁদের বেরতে দেওয়ার কথা বলা হয়। নিরাপদে কর্মীদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। তখন আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর আক্রমণ করে। ধাক্কাধাক্কি করে।”
এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকারের স্পষ্ট বার্তা, “গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনও বাধা নেই। সাতঘণ্টা ধরে পুলিশের অনুরোধের পরেও অবস্থান চালানো হয়, সরকারি অফিস ভাঙচুর করা হয় – তবে সে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ নয়। যদি আন্দোলন করার অধিকার থাকে, তবে সারাদিন চাকরির পর বাড়ি ফেরার অধিকার রয়েছে কর্মীদের। যাঁরা বেরচ্ছিলেন তাঁদের প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকি ছিল। বের করার জন্য় যতটা বলপ্রয়োগ করার ততটুকু হয়েছে। তা স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা নেই।” আন্দোলনকারী শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ নিয়ে বিরোধীরা নানা মন্তব্য করছেন। তাদের পালটা জবাবে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ বলেন, “কীসের প্রোটোকল মানা হয়নি। ভিডিও, অডিও রয়েছে। বারবার অনুরোধ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও শোনেননি। ধৈর্য ও সংযমের চূড়ান্ত পরিচয় দিয়েছে পুলিশ। যেটা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে মনে করেছি। সেটা হয়েছে। ১৯ জন পুলিশ জখম হয়েছেন।” এই ঘটনার নেপথ্যে কারও উসকানি রয়েছে বলেই সন্দেহ পুলিশের। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ জানান, “যারা উসকানি দিয়েছে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”