নন্দন দত্ত, সিউড়ি: অবৈধ বালিঘাট দখল ঘিরে প্রবল উত্তেজনা বীরভূমের জামালপুরে। দেদারে পড়ল বোমা। বোমার আঘাতে উড়ে গেল এক ব্যক্তির পা। মঙ্গলবার সকালের ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনায় জড়িয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের নামও। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
কাঁকরতলা থানা এলাকার জামালপুর গ্রামে অবৈধ বালিঘাট রয়েছে। অজয় নদী থেকে বালি তোলা হয় বলে অভিযোগ। এলাকার বালিঘাট দখলকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র বিবাদ দেখা যায়। তারপরই শুরু হয় বোমাবাজি। মুহুর্মুহু বোমাবাজিতে কেঁপে ওঠে এলাকা। বোমার আঘাতে সাত্তার নামে এক যুবক গুরুতর জখম হন। তাঁর একটি পা বোমার আঘাতে উড়ে গিয়েছে বলে খবর।
তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নাকরাকেন্দা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনায় গ্রামে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী সেখানে যায়। হামলার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে ঘটনায় লেগেছে রাজনৈতিক রং।
অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় অবৈধভাবে বালি তোলার কাজ হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিলেও সম্পূর্ণভাবে বালিমাফিয়াদের উপর রাশ টানা যায়নি। সূত্রের খবর, এলাকা দখল নিয়ে শাসক দলের অনুব্রত মণ্ডল বনাম কাজল শেখ শিবিরের ঠান্ডা লড়াই চলছে। তার রেশেই এদিনের সংঘাত। দুটি গোষ্ঠী এই বোমাবাজির ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এমনই অভিযোগ জেলা বিজেপি নেতৃত্বের।
উল্লেখ্য, বীরভূমের রাজনীতিতে অনুব্রত মণ্ডল বনাম কাজল শেখের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব নতুন নয়। এদিনের ঝামেলাও কি ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের ফসল? বীরভূমের বিজেপির জেলা সহ সভাপতি দীপক দাসের অভিযোগ, এটি তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই। বালি, খাদান নয়ে এই জেলাতে লড়াই চলছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এই বিষয়কে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এটা দুষ্কৃতীদের নিজের লড়াই। বালির গাড়ি থেকে টাকা তোলা নিয়েই এই বিবাদ। তিনি আরও জানিয়েছেন, কোনও রাজনৈতিক রং না দেখে পুলিশকে ঘটনার তদন্ত করতে বলা হয়েছে।
বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপ জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।