সুনিপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: বাম আমলের গাফিলতি! বেহাত হচ্ছে আদিম জনজাতি ভুক্ত লোধাশবরের জমি। সেই জমিগুলিতেই গজিয়ে উঠছে একের পর এক বাড়ি। সেই খবর পেয়েই তৎপর জেলা প্রশাসন। একুশ বছর আগের বাম প্রশাসনের গাফিলতির জেরে বেহাত হওয়া জমির রেকর্ড করার কাজ শুরু করেছে ঝাড়গ্রাম ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর।
বাম জমানায় ২০০৪ সালে ঝাড়গ্রাম ব্লকের মোহনপুর গ্রামে এলাকার লোধা শবররা যাতে চাষবাস করতে পারেন সেই জন্য সরকার থেকে এক ব্যক্তির কাছ থেকে রায়তি জমি কিনে দলিল দেওয়া হয়েছিল। ২৮৪ ডেসিবেল জমির ১১টি দলিল করে তা শবর পরিবারগুলিকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জমির মিউটেশন বা রেকর্ড হয়নি। অর্থনৈতিকভাবে একেবারে প্রান্তিক এলাকায় বসবাসকারী মানুষগুলির পক্ষে মিউটেশন করানো সম্ভব হয়নি। এই মিউটেশন করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তৎকালীন প্রশাসনের। অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে তাদের গাছাড়া মনোভাবের কারনেই সরকারের কাছে একবার বিক্রি হওয়া জমি, বেআইনি উপায়ে বিক্রি করা হচ্ছে। আর এই বিষয়টি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে ঝাড়গ্রাম ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর।
ইতিমধ্যেই ফিল্ড সার্ভ করে তদন্ত পক্রিয়া শেষ হয়েছে। তিনটি শবর পরিবারের জমির খতিয়ান ইতিমধ্যে বার রেকর্ড করে জমির দলিল প্রকৃতি জমির মালিকের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে ভূমি দপ্তর। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, “পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।” ঝাড়গ্রাম ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক কল্লোল বিশ্বাস বলেন, “আমরা ফিল্ড সার্ভে করে পুরো রিপোর্ট তৈরি করেছি। ২১ বছর আগের গাফিলতির জেরে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।” এই বিষয়ে রাজ্য লোধা শবর উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বলাইচন্দ্র নায়েক বলেন, “বাম আমলে লোধাদের প্রচুর বঞ্চনা করা হয়েছে। চাষের জমি বলে পাথুরে জমি দেওয়া হয়েছে। আর এবার জমি দিয়ে দায়িত্ব খালাস। তাদের মিউটেশন করে দেওয়ার দায়িত্বও পালন করে নি। তবে আমার বিশ্বাস প্রশাসন ঠিক ব্যবস্থা নেবে।”