বাম ছাত্র সংগঠনের তোলা অত্যাচারের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’, দাবি মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের

বাম ছাত্র সংগঠনের তোলা অত্যাচারের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’, দাবি মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


সম্যক খান, মেদিনীপুর: ধর্মঘটে অংশ নেওয়া ছাত্রীকে থানায় অত্যাচারের অভিযোগ উঠছে মেদিনীপুর মহিলা থানার ওসির বিরুদ্ধে। এআইডিএসও নেত্রী সুশ্রীতা সোরেনের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তাঁর দাবি, পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে সংবেদনশীলভাবে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে।  

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তির জেরে গত সোমবার রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ধর্মঘটের ডাক দেয় বাম ছাত্র সংগঠন। ওইদিন মেদিনীপুরের একাধিক কলেজের মতো বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ও অশান্ত হয়ে ওঠে। ওই ঘটনার পর ছাত্রীদের উপর মেদিনীপুর মহিলা থানার ওসি অত্যাচার করেছেন বলেই অভিযোগ AIDSO নেত্রী সুশ্রীতা সোরেনের। তাঁর দাবি, “থানায় নিয়ে গিয়ে ওসি কোমরের বেল্ট খুলে মেরেছে। এলোপাথাড়ি কিল-চড়-ঘুসি মেরেছে। তিনজনকে অন্য রুমে নিয়ে যায়। আমাকে একটা রুমে একা রাখে। আমাকে বলা হয়, এই মেঝেতে পা মেলে বসো। সেভাবেই বসি। বলা হয় চুলের ক্লিপ খুলে দাও। ক্লিপ খুলে চুল ছাড়ি। ওসি বাকি পুলিশদের বললেন পায়ের উপর দাঁড়াও। বেত দিয়ে আঘাত করার সময় যাতে সরে না যায়। ওসি লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। নাম-সহ সমস্ত তথ্য লিখে দিতে বলা হয়। আমি নাম বলি। ওঁরা লিখতে পারছেন না। আরও জোরে বলতে বলে। লিখতে না পারায় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।” 

AIDSO নেত্রীর আরও অভিযোগ, “ওসি বলে কেন ইউনিভার্সিটির গেটে গিয়েছিলে? বলি, ছাত্ররা মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অসুবিধা নিয়ে বলতে যাই। এরপর ওসি বলে ধর্মঘট করতে গিয়েছিলে? দেখাচ্ছি তোমাদের ধর্মঘট। আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করা হয়। আমি বলতে পারছি না কী বলেছেন। আমার রুচিতে বাঁধছে। আমাদের জেলা সম্পাদিকাকে টেনে নিয়ে আসে ঘরে। আবার আমার নাম বলতে হয়। তাঁকে আমার নাম লিখতে বলা হয়। সেই সময় তাঁর হাতে বেতের আঘাত করা হয়। নাম লিখতে পারছিলেন না। চুলের মুঠি টেনে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর মোমবাতি দিয়ে ছেঁকা দেওয়া হয়। এখনও সেই চিহ্ন আছে। থানার ওসি বলছেন, থানায় বড় জায়গা আছে। মেরে পুঁতে দিলেও কেউ খোঁজ পাবে না। ওসি বলছেন, একে এত মারা হচ্ছে কেন লাঠি ভাঙছে না? আমাকে ওই রুম থেকে অন্য ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে আরও অনেক ছাত্রী ছিলেন। সেখানে সকলের উপর অত্যাচার হয়েছে। এত মারার ফলে আমি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিলাম না। তখন ওসি বলছেন, তোমাকে তো কিছুই করা হয়নি, ঢং করছো কেন? তোমাকে তো মারাই হয়নি।” তাঁর আরও অভিযোগ, “রাতে সিসিটিভি আওতার বাইরে এমন একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে বলা হয় ভুল স্বীকার করতে হবে। আমি বলি, ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চাওয়ার মতো কোনও কাজ করিনি।” পুলিশের বিরুদ্ধে অবিলম্বে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে AIDSO।

পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার যদিও এই অভিযোগ খারিজ করে দেন। বলেন, “পুলিশি অত‌্যাচারের অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। বামপন্থী একটি দলের জেলা নেতারা এটাকে ইস‌্যু করার চেষ্টা করছে। ওইদিন উচ্চমাধ‌্যমিক পরিক্ষার প্রথম দিন ছিল। এজন‌্য আগাম কিছু ব‌্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। মেদিনীপুর কলেজ ও বিদ‌্যাসাগর বিশ্ববিদ‌্যালয়ে দুপক্ষের জমায়েতকেই পুলিশ আটকেছে। রাজ‌নৈতিক রং না দেখেই সবাইকে সরানো হয়েছে। দুটি প্রতিষ্ঠানই রাস্তার ধারে থাকায় উচ্চমাধ‌্যমিক পরিক্ষার্থীদের সমস‌্যা হতে পারত। গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষা করার জন‌্য যা যা করার দরকার পুলিশ তা করেছে। দুটি এফআইআর হয়েছে। পড়ুয়াদের ভবিষ‌্যতের কথা মাথায় রেখেই সংবেদনশীলভাবেই আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে।” পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই জানান তিনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *