সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথমে প্রচণ্ড মারধর করল। তারপর চোখের সামনে বাবা আর ঠাকুমা আমার মাকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দিল। দুঃখ এবং ঘটনার ভয়াবহতায় কাতর ছোট্ট ছেলেটি ঠিক এভাবেই বর্ণনা দিল নয়ডার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম নিকি। তিনি গ্রেটার নয়ডার সিরসা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। ন’বছর আগে বিপিন ভাতি নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে যুবতীর উপর অত্যাচার চালাতেন স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য দিনের পর দিন তাঁকে চাপ দেওয়া হত। শুধু মানসিক অত্যাচার নয়, নিকিকে বেধড়ক মারধরও করা হতো বলে অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। কিন্তু সম্প্রতি সেই অত্যাচারের মাত্রা চরমে ওঠে। অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার নিকিকে মারধরের পর তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারেন তাঁর স্বামী এবং শ্বাশুড়ি।
শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলে নিকির পুত্র। দুঃখ এবং ঘটনার ভয়াবহতায় কাতর ছোট্ট ছেলেটি বলে, “অনেকক্ষণ ধরে অশান্তি চলছিল। তারপর বাবা এবং ঠাকুমা মায়ের উপর কিছু ঢালল। একাধিকবার চড়ও মারল। এরপর লাইটার দিয়ে চোখের সামনে মাকে ওরা আমার মাকে জ্বালিয়ে দিল।” একই দাবি করেছেন নিকির দিদি কাঞ্চনও। ঘটনাচক্রে তাঁরও বিয়ে ওই বাড়িতেই হয়েছে। কাঞ্চন বলেন, “যৌতুকের জন্য আমার উপরও অত্যাচার চলত। মারধর করা হত। নিকিকে বাপেরবাড়ি থেকে ৩৬ লক্ষ টাকা আনতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সে তা না করায় ওই দিন তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তারপর চোখের সামনে ওকে আগুনে পুড়িয়ে দিল।”
এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে (যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল)। যেখানে দেখা যাচ্ছে, যুবতীকে চুলের মুটি ধরে বেধড়ক মারধর করছেন স্বামী এবং শ্বাশুড়ি। অপর একটি ভিডিওতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাঁকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে তাঁকে অন্য একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে নিকির স্বামীকে। বাকিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।