বাধা নয় বয়স, অযোধ্যা পাহাড়ের গজাবুরু শৃঙ্গ ছুঁলেন ষাটোর্ধ্ব পর্বতারোহীরা!

বাধা নয় বয়স, অযোধ্যা পাহাড়ের গজাবুরু শৃঙ্গ ছুঁলেন ষাটোর্ধ্ব পর্বতারোহীরা!

রাজ্য/STATE
Spread the love


সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বয়স ৬০ পেরনো মানেই ঠিকানা চার দেওয়ালের মাঝে। কিংবা বৃদ্ধাশ্রম। কিন্তু সমাজে এর বাইরেও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আছেন, যাঁর ঘরবন্দি না থেকে দূর থেকে সুদূরে পাড়ি দেন বুকে সাহস নিয়ে। পুরুলিয়ায় ষাটোর্ধ্ব একদল পর্বতারোহী সেই নজিরই গড়লেন। বয়সের বাধা পেরিয়ে পাহাড়ে চড়ে বাজিমাত করলেন ৬০ থেকে ৮০ বছর বয়সী নারী-পুরুষরা। বয়স যে কোনও প্রতিবন্ধকতাই নয়, তা আরও একবার প্রমাণ হলো। পুরুলিয়ার আড়শার গজাবুরু পাহাড়ে বয়স্করা পর্বতারোহণ করে নজির গড়লেন। কেউ কোমরে দড়ি বেঁধে। আবার কেউ পাহাড়ের খাঁজে-খাঁজে পা রেখে পৌঁছে যান পাহাড় চূড়ায়।

গজাবুরু পাহাড়ের উচ্চতা ২,২২১ ফুট। অযোধ্যা পাহাড়ের এই অন্যতম শৃঙ্গ পর্বতারোহীদের ভীষণই পছন্দের জায়গা। ফি বছর  ডিসেম্বর মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই পাহাড় এলাকায় পর্বতারোহীরা ভিড় জমান। বনদপ্তরের অনুমতি নিয়ে তাঁবু ফেলেন বিভিন্ন পর্বতারোহণ সংস্থা। দূর দূরান্ত থেকে আসেন ট্রেকাররা। এই তিন মাস গমগম করে ওই এলাকা। এই সময়টা খুব কম দিনই পাহাড়তলি এলাকা তাঁবু ছাড়া থাকে। পাহাড়তলিতে সারি সারি তাঁবু যেন আলাদা চোখ টানে। তবে সম্প্রতি বয়স্কদের এই পর্বতারোহণ দেখতে যেন ভিড় জমে যায় ওই এলাকায়। কারণ, অতীতে এভাবে গজাবুরু পাহাড়ে বয়স্করা ট্রেকিং করেননি। তাঁদের পাহাড়ে চড়ার ইচ্ছার সুযোগ করে দেয় কলকাতার ‘সিনিয়র মাউন্টেন লাভার্স ফোরাম’। এই সংস্থার চারদিনের শিবির অনুষ্ঠিত হয় গজাবুরু পাহাড়ের কোলে ‘ডুঙরি ইকো ক্যাম্পে’।

পুরুলিয়ার গজাবুরু পাহাড় চড়ার আনন্দে মশগুল বয়স্ক আরোহী।

এই শিবিরে ট্রেক করতে এসেছিলেন কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলির বাসিন্দারা। গজাবুরু এলাকা পর্যটকদেরও ভীষণ পছন্দের। প্রায় সারা বছরই এখানে পর্যটকরা আসেন। তাই বয়স্কদের পাহাড়ে চড়া দেখতেও পর্যটকরা ভিড় করেন। ওই পর্বতারোহণ ক্যাম্পের প্রশিক্ষক প্রলয় হাজরা বলেন, “এই শিবিরটা একেবারে অন্যরকম। ৬০ পার করা মানুষজন যেভাবে কিশোর-কিশোরী থেকে তরুণ-তরুণীদের মতো করে পাহাড়ে চড়লেন, তা তারিফ করতেই হয়। তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন, বয়স কোনও বাধা নয়। পর্বতারোহণে এটা একটা আলাদা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকল।” মানিকতলা থেকে আসা ৭৭ বছর বয়সী সমরেন্দ্র রায়ের কথায়, “১৯৭৯ সালে একবার পাহাড়ে উঠেছিলাম। তারপর এবার উঠলাম। ভীষণ ভালো লাগলো। মনটা যেন আনন্দে নেচে উঠল।”

বয়সের বাধা তুচ্ছ করে সাহস নিয়ে পর্বতারোহণে ষাটোর্ধ্ব মহিলা।

হিল ওয়াকিং, রক ক্লাইম্বিং, রেপেলিং, টেরোলিন টেভার্স, ক্যাম্পিং-র অ্যাডভেঞ্চারের আনন্দ উপভোগ করলেন ৬০ থেকে ৮০ বছরের বয়স্করা। যাঁরা একেবারে সব কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন। সবে মিলিয়ে তাদের সংখ্যা ছিল ৩৪ জন। ৬০ পার করা আরতি দত্ত বলেন, “এখন যেন বলতে ইচ্ছে করছে – পারিব না এ কথাটি বলিও না আর!”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *