সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। সেদেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনার শাস্তি হিসাবেই ভারতের উপর শুল্ক চাপানো হয়েছে। তবে ট্রাম্পের ট্রেজারি সেক্রেটারি জানালেন, কেবল রুশ তেল কেনা নয়, ভারত যেভাবে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ‘গড়িমসি’ করেছে, তার জেরেও বিরাট মাপের শুল্ক বসানো হয়েছে।
মার্কিন ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “লিবারেশন দিবসের পরেই ভারতের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। আমি ভেবেছিলাম মে বা জুন মাসের মধ্যে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। আমরা ভেবেছিলাম অন্যান্য দেশগুলির সঙ্গে চুক্তির আগেই ভারতের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা হয়ে যাবে। আমার মনে হয়, রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনে মুনাফা লাভের বিষয়টিকে নয়াদিল্লি বেশি প্রধান্য দিয়েছে।”
উল্লেখ্য, ভারত-মার্কিন বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলেছে। কিন্তু এখনও একমত হয়ে চুক্তি সই করতে পারেনি দু’পক্ষ। বিশ্লেষকদের মতে, সেদেশের কর্পোরেট সংস্থাগুলির চাপে কৃষিপণ্য, মৎস্য এবং ডেয়ারি পণ্যের ভারতীয় বাজার উন্মুক্ত করতে চায় আমেরিকা। সেই শর্তে রাজি নয় ভারত। তার ফলেই আটকে রয়েছে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি। উল্লেখ্য, ব্রিটেনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতেও এই তিনটি ক্ষেত্রের বাজার খোলেনি ভারত। তার কারণ, এই তিন ক্ষেত্রে ভারতের বাজার খুলে দিলে প্রবল সমস্যায় পড়বেন কৃষকরা।
যেহেতু আমেরিকার এই প্রস্তাবে ভারত রাজি নয়, তাই বাণিজ্যচুক্তি বিশ বাঁও জলে। তবে আগামী দিনে এই নিয়ে আলোচনায় সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছে নয়াদিল্লি। কিন্তু বিরাট অঙ্কের শুল্ক বসিয়ে দেওয়ার পর আমেরিকা কতখানি সদর্থকভাবে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবে সেই নিয়ে সংশয় রয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতেই মার্কিন ট্রেজারি সচিব মেনে নিলেন, যেহেতু বাণিজ্যচুক্তি ঘিরে আমেরিকার সঙ্গে সহমত হয়নি ভারত, সেই ‘টালবাহানার’ জেরেই শুল্কের বোঝা চেপেছে ভারতের উপর।