সুমন করাতি, হুগলি: দিন দশেক পেরিয়ে যাওয়ার পর দেশে ফিরে আসার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের হাতে বন্দি হওয়া বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। বন্দি হওয়ার একমাস পর বাড়ি ফিরে একথা জানালেন হুগলির রিষড়ার বীর সন্তান। এই কঠিন সময়ে তাঁর পরিবারের পাশে থাকার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, নিজের পরিবারের কাছে ফিরে তাঁর পুনর্জন্ম হয়েছে বলে বিশ্বাস করছেন পূর্ণম।
দীর্ঘ একমাস পাক রেঞ্জার্সের হাত বন্দি ছিলেন পূর্ণম। সেই সময় কী মনে করছিলেন তিনি জিজ্ঞাসা করতেই জওয়ান বলেন, “প্রথমে যখন আটক করা হয়, ভেবেছিলাম দিন তিন-চারেকের মধ্যে ছাড়া পেয়ে যাব। কিন্তু তা না হওয়ায়, দশদিন পেরিয়ে যাওয়ার পর ভেবেছিলাম আর দেশে ফেরা হবে না। ওখানেই যা হওয়ার হবে।” পাকিস্তানে থাকার সময়ই পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার বদলা নিতে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারত। সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে পূর্ণম বলেন, “আমি ওখানে থাকার সময় কিছু জানতে পারেনি। দেশে ফিরে খবর দেখে জানতে পারি অপারেশন চলেছে।” পাক রেঞ্জার্স তাঁর উপর কোনও অত্যাচার চালিয়েছে? সেই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পূর্ণম।
এদিকে পাকিস্তানে বন্দি থাকাকালীন স্বামীর জন্য শনিবারের ব্রত করেছিলেন স্ত্রী রজনী। গতকাল স্বামী বাড়ি ফিরেছেন। আজ শনিবার সকালে ব্রত পালনে স্থানীয় মন্দিরে পুজো দেন তিনি। রজনী বলেন, “প্রতি শনি ও মঙ্গলবার মন্দিরে গিয়ে পুজো করি। কিন্তু যেদিন থেকে স্বামীর পাকিস্তানে বন্দি থাকার খবর পেয়েছি, সেদিন থেকেই প্রতি শনিবার মন্দিরে পুজো দিই। এখনও পর্যন্ত তিনটে শনিবার পালন হয়েছে মোট ষোলটা শনিবার পালন করব।” পূর্ণম ফিরে আসার পর আজ শনিবার সকালে বিজেপির প্রতিনিধি দল গিয়েছিল জওয়ানের বাড়ি। তাঁকে শুভেচ্ছা জানান তাঁরা। ভিডিও কলে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে পূর্ণমের।
উল্লেখ্য, পাক রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি হওয়ার একমাসের মধ্যে শুক্রবার বাড়িতে ফিরেছেন জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। গতকাল পুরো রিষড়া ঘুরে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। বাড়িতে যেন অকাল দীপাবলি। উৎসবের মরশুম পাড়াজুড়ে।