বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের তীব্র নিন্দা অমর্ত্যর, জামাতকে বিঁধলেন নোবেলজয়ী, চটে লাল মৌলবাদীরা

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের তীব্র নিন্দা অমর্ত্যর, জামাতকে বিঁধলেন নোবেলজয়ী, চটে লাল মৌলবাদীরা

স্বাস্থ্য/HEALTH
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন, দিকে দিকে হিন্দু মন্দির ভাঙচুর, খুন-ধর্ষণ, সব মিলিয়ে চরম অরাজকতা পদ্মাপাড়ে। ‘নতুন’ বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন অমর্ত্য সেন। এবার তিনি মুখ খুললেন মহম্মদ ইউনুসের সরকার নিয়েই। পাশাপাশি হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিয়ে কার্যত জামাতকেই বিঁধেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। এদিকে, তাঁর মন্তব্যে চোটে লাল মৌলবাদীরা। অমর্ত্য সেনকে পালটা তোপ দাগল পাকপন্থী জামাত। 

জীবনের অনেকটা সময় ঢাকায় কাটিয়েছেন নোবেলজয়ী অমর্ত্য। তাঁর স্কুল জীবনের শুরুও সেখানে। এক সময় পৈতৃক বাড়িতেও নিয়মিত যেতেন। তাই বর্তমান বাংলাদেশ নিয়ে খুবই চিন্তিত অমর্ত্য। রবিবার এনিয়েই পিটিআইয়ের মুখোমুখী হয়েছিলেন তিনি। সাক্ষাৎকারে বলেন, “বাংলাদেশের পরিস্থিতি আমারপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। কারণ আমি বাঙালি। আমি ঢাকায় অনেক সময় কাটিয়েছি এবং সেখানেই আমার স্কুল জীবনের শুরু। ঢাকার পাশাপাশি মানিকগঞ্জে আমার পৈতৃক বাড়িতে প্রায়ই গিয়েছি। মায়ের দিক থেকেও আমি নিয়মিত বিক্রমপুর, বিশেষ করে সোনারাংয়ে গিয়েছি। তাই ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে এসব জায়গার খুব গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু এখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। তারা বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করবে, তা নিয়ে অন্য অনেকের মতো আমিও উদ্বিগ্ন।”

একাত্তরের স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে যা যা অগ্রগতি হয়েছে তারও উল্লেখ করেন অমর্ত্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বড় ধরনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার মতো বিষয়ও রয়েছে। সাক্ষাৎকারে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ না করার কথাও বলেন তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ইউনুস কীভাবে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবেন সেনিয়ে অমর্ত্য বলেন, “ইউনুস আমার পুরোনো বন্ধু। আমি জানি, তাঁর ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতান্ত্রিক অঙ্গীকার নিয়ে জোরালো বক্তব্যও দিয়েছেন।”

শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণে ছিল চরমপন্থা। জামাত, হিজবুত তাহরির মতো উগ্র ধর্মীয় শক্তিকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। কিন্তু বদলের বাংলাদেশে এখন মৌলবাদীদের দাপাদাপি। বিপন্ন হিন্দুরা। সেই প্রসঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়ে অমর্ত্য বলেন, “এটা বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হিন্দুদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে সেদেশের গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। এক সময় জামাতের মতো সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো নিয়ন্ত্রণে ছিল। বাংলাদেশে যেভাবে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে, হিন্দু মন্দির ভাঙা হচ্ছে তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর দায় সেদেশের সরকার ও নাগরিকদের নিতে হবে। এই ধরনের হিংসা বন্ধ করতে সকলে দায়িত্ব নিতে হবে।”

সোমবার নোবেলজয়ীর এই মন্তব্য নিয়ে পালটা তোপ দাগে জামাত। অমর্ত্য সেন হাসিনাকে সমর্থন করছেন বলে আক্রমণ শানিয়ে জামাতের আমির শফিকুর রহমান সোমবার বলেন, “বাংলাদেশকে সহনশীলতার পাঠ দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। বরং তিনি যে সমাজে বাস করেন, সে সমাজের আয়নায় নিজেকে দেখা উচিত। বাংলাদেশের জনগণ টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ভণ্ডামি করেছে। অমর্ত্য সেন পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে সাফাই গাইছেন, যা বিস্ময়কর ও নিন্দনীয়।”

জামাতের আমিরের দাবি, “অমর্ত্য সেন জামায়াতে ইসলামির বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও বদ্ধমূল ধারণা থেকে মন্তব্য করেছেন। সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের জন্য প্রকৃত দায়ী আওয়ামি লিগ। সাহস থাকলে তিনি তা স্বীকার করতেন, কিন্তু তা সম্ভব নয় কারণ তিনি নিজের ধারণায় সুশীল। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশি বিশ্লেষকদের নাক গলানো অযৌক্তিক।” অমর্ত্য সেনকে তোপ দাগতে গিয়ে শফিকুর রহমানও মানলেন এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নিপীড়িত হিন্দুরা। কারণ এর আগে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছে ইউনুস সরকার।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *