সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। আমেরিকার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন ‘ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ (ইউএসসিআইআরএফ) বলেছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর জীবন বিপন্ন। তারা স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণ করতে পারছেন না।
চলতি বছরের মে মাসে ঢাকায় মার্কিন সংস্থাটির সফরের ভিত্তিতে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশে সফরে তারা সরকারের উচ্চপর্যায়ের আধিকারিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। শনিবার প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। আগস্টে সেনাবাহিনীর সমর্থনে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মহম্মদ ইউনুস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন। কিন্তু দেশে ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এখনও অনিশ্চিত ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ৫ থেকে ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও সরকার পতনের সময় দেশে কার্যকর কোনও প্রশাসন না থাকায় ভয়াবহ সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একাধিক হামলার খবর পাওয়া যায়। যেগুলিকে আওয়ামি লিগের সমর্থক বা সদস্য ভেবে প্রতিশোধমূলক হামলা বলে চালানো হয়।
পুলিশের একটি রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে ‘ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ জানিয়েছে, ৫ থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে ১,৭৬৯টি সহিংসতা ঘটেছে। এর মধ্যে ১,২৩৪টি রাজনৈতিক, ২০টি সাম্প্রদায়িক ও ১৬১টি ভূয়া অভিযোগের ভিত্তিতে। ‘ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ’ ফেব্রুয়ারিতে একটি মহিলাদের ফুটবল ম্যাচ বাতিল করতে বাধ্য করে। ট্রাম্প সরকার পরিচালিত এই সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে এখনও ব্লাসফেমি সংক্রান্ত ধারা (দণ্ডবিধি ১৯৫এ) বলবৎ রয়েছে, যেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করাকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ধর্মীয় সহনশীলতার ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। সংবিধান সংস্কারে সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত না হলে, এই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদে বৈষম্য আরও গভীর করতে পারে।
এদিকে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সারাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় কমপক্ষে ৭২ জন নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’। আহত ১ হাজার ৬৭৭ জন। এ সময় ১৯ জন গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’- এর ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। সারাদেশ থেকে অধিকারের কর্মীদের পাঠানো তথ্য এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।