সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক’দিন আগেই আমেরিকার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশনের এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর জীবন বিপন্ন। তাঁরা স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণ করতে পারছেন না। এবার ফের প্রকাশ্যে এল সেদেশে হিন্দু নির্যাতনের করুণ ছবি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, গত শনিবার রাত ও রবিবার দুপুরের মধ্যে রংপুর জেলার এক অঞ্চলে অন্তত পনেরোটি বাড়িতে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা।
জানা যাচ্ছে, এক কিশোরের ফেসবুক পোস্ট থেকে বিতর্ক ছড়ায়। তাকে আটকও করা হয়। কিন্তু তারপরই শুরু হয় দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। অন্তত পনেরোটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। বাড়ির বাসিন্দারা ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। পরে সেনা-পুলিশ মোতায়েন করে সাময়িক স্বস্তি ফেরানো হলেও এলাকার হিন্দুরা জানিয়েছেন, তাঁরা অত্যন্ত বিপন্ন বোধ করছেন। বেশির ভাগই ক্ষুধার্ত। পাশাপাশি বাড়ি হয় পুড়ে গিয়েছে, নয়তো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ফলে কোথায় তাঁরা থাকবেন, সেটাও ভেবে পাচ্ছেন না। কবে বাড়ি ফিরতে পারবেন বুঝতে পারছেন না সেটাও। এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এমনকী, কোনও এফআইআরও দায়ের করা হয়নি।
এই ঘটনার ঠিক আগেই শনিবার মার্কিন সংস্থার সফরের ভিত্তিতে রিপোর্ট তৈরি করা হয়। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। আগস্টে সেনাবাহিনীর সমর্থনে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মহম্মদ ইউনুস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন। কিন্তু দেশে ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এখনও অনিশ্চিত ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ৫ থেকে ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও সরকার পতনের সময় দেশে কার্যকর কোনও প্রশাসন না থাকায় ভয়াবহ সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একাধিক হামলার খবর পাওয়া যায়। যেগুলিকে আওয়ামি লিগের সমর্থক বা সদস্য ভেবে প্রতিশোধমূলক হামলা বলে চালানো হয়। এদিকে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সারাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় কমপক্ষে ৭২ জন নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’। আহত ১ হাজার ৬৭৭ জন। এ সময় ১৯ জন গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন। এর মধ্যেই রংপুরের ঘটনায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়াল।