বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: মে মাসের শেষ সপ্তাহে মৌসুমি বায়ুর মায়ানমার শাখায় ভর করে বর্ষা জাঁকিয়ে বসতে পারে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমে। বৃষ্টিপাতের গতিপ্রকৃতি দেখে এমনই মনে করছেন আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারা। যদিও তার আগেই একটানা ভারী বর্ষণের জেরে ফুসছে পাহাড়ি কন্যা তিস্তা। সোমবার মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে দক্ষিণ সিকিমের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র মেলি শহরের নদী সংলগ্ন বসতি এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভূমিধসে বিধ্বস্ত হয়েছে দক্ষিণ ও পূর্ব সিকিমের একাধিক রাস্তা। উত্তরের কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ে ভূমিধস দেখা গিয়েছে। সোমবার থেকে নতুন করে আর ধসের কথা শোনা যায়নি। যদিও সোমবার রাতে দার্জিলিং পাহাড়, মালদহ এবং দুই দিনাজপুর জেলায় ১১০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির ‘কমলা’ সতর্কতা জারি হয়েছে। ভারী বৃষ্টির সতর্কতা সম্ভাবনা রয়েছে কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুরে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে। বৃষ্টির সঙ্গে ঘন্টায় ৩০ কিলোমিটার থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।”
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষা শুরুর আগেই বর্ষার মতো পরিস্থিতি হতে চলেছে। ইতিমধ্যে সিকিম ও উত্তরের পাহাড়-সমতলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে দক্ষিণ সিকিমের মেলিতে তিস্তা নদীর জলস্তর বেড়েছে। প্রশাসনের তরফে নদী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে নিরাপদ এলাকায় সরে যেতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে ভূমিধসের জন্য গাংলা গ্রামের কাছে ইয়াংগাং থেকে রাভাংলা পর্যন্ত রাস্তা ভেসে গিয়েছে। ওই রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেছে। মৌসুমি খোলার জল উপচে পড়েছে রাস্তায়। এখানেও যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। রাস্তায় খুব একটা বেশি যান চলাচল করছে না বলেও খবর। যে কোনও মুহূর্তে আরও বড় ধস নামার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষজন যাতে নিরাপদে থাকেন, সেদিকেও নজরদারি চলছে। প্রশাসনের থেকেও সতর্কতামূলক প্রচার চলছে।