বরিশালই বাংলার সেই ‘মায়াভরা পথ’? পদ্মাপাড়ে সাক্ষাৎকারে কী বলেছিলেন প্রতুল?

বরিশালই বাংলার সেই ‘মায়াভরা পথ’? পদ্মাপাড়ে সাক্ষাৎকারে কী বলেছিলেন প্রতুল?

সিনেমা/বিনোদন/থিয়েটার
Spread the love


সুকুমার সরকার, ঢাকা: শনিবার কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর শিকড়ের যোগ। “আমার জন্ম এই বাংলার বরিশালে, বাংলাদেশ আমার পিতৃভূমি।” বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে সেবার জানিয়েছিলেন প্রতুল।

২০১০ সালে বাংলাদেশ সফরে ‘আমি বাংলায় গান গাই’-এর স্রষ্টার সাক্ষাৎকার নেয় ঢাকার দৈনিক প্রথম। প্রতুল স্মৃতিচারণে বাবার কথা বলেন, “আমাদের আশপাশের সব গরিব শিল্পীদের টুলের ওপর বসিয়ে তাঁদের গান শুনতেন। শুনে সম্মানিক দিতেন। তাঁদের সঙ্গে ‘আপনি’ করে কথা বলতেন। যাদের মেথরানী বলা হয়, তাদের ‘মা’ ডাকতেন। সব মানুষের জন্য ভালোবাসার শিক্ষা বাবার কাছ থেকেই পেয়েছি।” শিল্পী জানান, “আমার জন্ম এই বাংলার বরিশালে। বাংলাদেশ আমার পিতৃভূমি। এখানে এলে তো ভালো লাগবেই।”

প্রতুল বলেন, “মানুষই আমার ঈশ্বর। মানুষের কাছেই আমি ঋণী। মানুষই সবকিছু উত্পাদন করে। উত্পাদনের সঙ্গে যুক্ত পৃথিবীর ৮৫ ভাগ মানুষ। এই ৮৫ ভাগ মানুষ উত্পাদন বন্ধ করে দিলে আমরা বাঁচতাম না। এখন বাকি ১৫ ভাগ মানুষ, যারা ওই ৮৫ ভাগ মানুষের ওপর নির্ভরশীল। তারা বলছে, ওই ৮৫ ভাগকে তাদের মধ্যে আনতে হবে। অথচ মূল ভাবনাটা হওয়া উচিত, ওই ৮৫ ভাগ মানুষ আমাদের ১৫ ভাগকে রাখবে কি না।” তিনি বলেন, “গণসংগীত হচ্ছে ভক্তিগীতিরই একটা রূপ। জনতার বিশাল শক্তির কাছে আত্মোত্সর্গ করেই সঙ্গীত করতে হয়।

বিশেষ স্মৃতি হিসাবে বলেন- “স্কুলে নাটক হত। সিক্সে পড়ার সময় নাটকে ‘বিমলের গান’ ছিল। সে গানটির সুর দিয়েছি এবং গেয়েছি। সুরটা আপনাআপনি এসেছিল মাথায়। সেই গান গেয়ে এক ক্লাসমেটের কাছ থেকে রুপোর মেডেল পেয়েছিলাম। এরপর কত সম্মান, কত মেডেল পেলাম, কিন্তু সেই প্রথম মেডেলের কথা ভুলতে পারি না।”

সেবার বাংলাদেশে সাক্ষাৎকারে প্রতুল বলেছিলেন, “প্রতিটি মুহূর্তে আমি মানুষের কাছ থেকে শিক্ষা নিচ্ছি। মানুষই আমার গুরু। আমি লেনিনের বইয়ের এবিসিডি জানি না। এর মানে এই নয়, আমার মানুষকে ভালোবাসার অধিকার নেই। ওই মৌলবাদীপনার কোনও সুযোগ নেই। লেনিন না পড়েও কেউ দেশপ্রেমিক হতে পারেন, মানুষকে ভালোবাসতে পারেন এবং গণসঙ্গীত গাইতে পারেন।

মঞ্চে খালি গলায় গান গাওয়া শিল্পী যন্ত্রসঙ্গীতের ব্যবহার প্রসঙ্গে বলেন, “বাজনার বিরুদ্ধে আমি নই। বব ডিলানের গান আমার দারুণ ভালো লাগে। তবে আমি স্বচ্ছন্দবোধ করি বাদ্যযন্ত্র ছাড়া। কোমল কণ্ঠে গণসঙ্গীত হয়, সে ধারণাও দেওয়ার চেষ্টা করছি। শিশুদের প্রসঙ্গে বলেন, সুকুমার রায়ের হ-য-ব-র-ল নিয়ে সুর করে একটি অ্যালবাম করেছি ২০০৪ সালে। লেখালিখি করি শিশুদের জন্য। এ ছাড়া কবিদের কবিতায় সুর দিতে পছন্দ করি।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *