অভিষেক চৌধুরী, কালনা: সংসার ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন বধূ। মানতে পারেননি স্বামী। অবসাদে আত্মঘাতী যুবক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল শোরগোল পূর্ব বর্ধমানের কালনায়। রবিবার বধূর বাপের বাড়ির সামনে দেহ রেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্থানীয়রা। বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয় বলে অভিযোগ। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় পুলিশ আয়ত্তে এনেছে পরিস্থিতি।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম বলরাম মণ্ডল (৩০)। তাঁর বাড়ি কালনার মধুবন এলাকায়। পেশায় সে গাড়িচালক। শনিবার বিকেলে বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। এরপরই আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিবার-পরিজন। এরপরই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দশ বছর আগে এলাকারই বাসিন্দা এক তরুণীর সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন বলরাম। তাঁদের একটি পুত্রসন্তানও হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর কিছুদিন ঠিকঠাক চললেও পরবর্তীতে তাঁর স্ত্রী অন্য এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ হন। এনিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হত। কয়েক মাস আগে তা চরমে ওঠে। কয়েকসপ্তাহ আগে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে যান বধূ।
মৃতের পরিবারের দাবি, বধূ নাকি বলরামকে জানান তাঁর পরকীয়ার কথা। প্রেমিককে বিয়ে করে অন্যত্র সংসার পেতেছে বলেও জানান তিনি। তাতে বলরাম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। শুধু তাই নয়, এরপর থেকেই ওই বধূর বাপের বাড়ির লোকজন বলরামকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। মৃতের এক বন্ধুর অভিযোগ, প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ছবিও নাকি পেয়েছিলেন বলরাম। এরপর থেকে মানসিক যন্ত্রণায় খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ করে দেন যুবক। এরই মাঝে শনিবার উদ্ধার হয় যুবকের দেহ। মৃতের পরিবার কালনা থানায় ওই বধূ ও তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত স্ত্রীও মৃতের পরিবারের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন।
বলরামের স্ত্রীর কথায়, “আমি কোথাও বিয়ে করিনি। কোনও প্রমাণ আছে? আমার স্বামী ফোন করে হুমকি দিত। বাপের বাড়িতে থাকাকালীন সে একদিন এসেছিল। গালিগালাজ, হুমকি, এমনকি অ্যাসিড ছুড়ে মারার হুমকিও দিয়েছে। এদিন ওর মৃত্যুর পর আমাদের এখানে ভাঙচুর চালায়। ভাই, দাদা, বউদিদের মারধর করে। এক সপ্তাহ আগে স্বামীর নামে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ করেছি কালনা থানায়।” পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে শুরু করেছে। কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে বলে খবর।