প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্ব স্পষ্ট! ব্রাত্য নতুন প্রজন্ম, স্বীকার করল সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব

প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্ব স্পষ্ট! ব্রাত্য নতুন প্রজন্ম, স্বীকার করল সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব

জীবনযাপন/LIFE STYLE
Spread the love


সম‌্যক খান, মেদিনীপুর: পার্টিতে তরুণ প্রজন্মকে তুলে আনার ক্ষেত্রে চরম দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিল মেদিনীপুর জেলা সিপিএম। শুধু তাই নয়, প্রবীণ সদস্যদের সঙ্গে নবীনদের সম্পর্ক তলানিতে তা পরিষ্কার। মতপার্থ‌ক‌্য ঘটছে চিন্তাধারারও। ফলে বাড়ছে দূরত্ব। দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টায় প্রতিটি গণসংগঠনে স্বতন্ত্র উপসমিতি গঠনের কথাও ভাবছে তারা। যাতে নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি করে দায়িত্ব দেওয়া যায়।

জানা গিয়েছে, জেলা সিপিএমে ৩১ বছরের নিচে পার্টি সদস‌্য সংখ‌্যা মাত্র ৯৭৮ জন। সম্প্রতি সিপিএমের জেলা সম্মেলনে খোদ জেলা সম্পাদক বিজয় পাল নিজেই এই সমস‌্যা সমাধানের পথ জানতে চেয়েছেন। ওই সম্মেলনে পেশ করা সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের ১৯ নম্বর পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে  ‘কৃষক, শ্রমিক, ক্ষেতমজুর, মহিলা, বস্তি-সহ অন্যান্য সামাজিক ফ্রন্টগুলি থেকে এই বয়সের কর্মী তুলে আনার ক্ষেত্রে ভয়ংকর অন্যমনস্কতা রয়েছে। এইসব ফ্রন্টগুলিতে ১৬-৩০ বছর বয়সি কর্মীদের তালিকা বানিয়ে বিশেষ নজর দিয়ে সংগঠিত করার জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। প্রতিটি গণসংগঠনে এই অংশের কর্মীদের জন্য স্বতন্ত্র উপসমিতি গঠন করার কথা ভাবা বাঞ্ছনীয় মনে হয়।’

শুধু তাই নয়, এপ্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “অভিজ্ঞ, পরীক্ষিত কমরেড যাঁদের দায়িত্ব দিলে নিশ্চিন্ত হওয়া যায় এমন কর্মী আমাদের হাতের কাছেই পাওয়া যায়। স্বভাবতই আমরা তাঁদের উপর নির্ভর করি। কিন্তু এদের সঙ্গে যৌথ দায়িত্ব হিসেবে তরুণ অংশের কমরেডদের পরিকল্পিতভাবে যুক্ত করার সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত বা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা দরকার। আজকের প্রযুক্তির মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম আমাদের জানা-বোঝার বাইরে অনেক বিষয়ে সক্ষমতা,  অর্জন করছে দ্রুত। এই বিষয়টি তত্ত্বগতভাবে উপলব্ধি করলেও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এদের স্বাধীন দায়িত্ব দেওয়া বা সহযোগী দায়িত্বের অংশীদার করে পর্যবেক্ষণ করার পরিকল্পিত উদ্যোগ নিয়ে চর্চা হওয়া দরকার।” 

নতুন প্রজন্মের পার্টি বিমুখ হওয়ার পেছনে আর্থ-সামাজিক কারণও যে দায়ী তা স্বীকার করা হয়েছে। অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তাদের জীবন-জীবিকা নিয়েও। তার উপর নবীণ-প্রবীণ দ্বন্দ্বও আছে। স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে প্রায় সব স্তরের পার্টি ফ্রন্টে ও গণফ্রণ্টে নেতৃত্বদানকারী কমরেডরা প্রায় সকলেই পঞ্চাশোর্ধ বা ষাটোর্ধ। তাঁদের সঙ্গে বোঝাপড়ার অভাবও স্পষ্ট।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সংখ‌্যায় কম হলেও তরুণ প্রজন্মের একাংশ দায়িত্ব না পেয়ে ভেতরে ভেতরে দুঃখ পায়। ক্রমে ক্রমে তা ক্ষোভে পরিণত হয়। পরিণতিতে পার্টির সঙ্গে, নেতৃত্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তাঁরা। কারণ প্রায় সব স্তরের গণফ্রন্ট বা পার্টি ফ্রন্টে নেতৃত্ব দানকারী কমরেডরা ৫০-৬০ উর্ধ্ব বয়সের। বয়সের কারণেও এই অংশের নেতৃত্বের সঙ্গে তরুণ কমরেডদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া থাকে না। তারাও ব্যবহারিক আচরণে মিলবে না বুঝে দূরত্বের বলয় তৈরি করে। তাই কেবল পার্টিতে নয়, সব গণফ্রণ্টে এই বয়সের কমরেড কতজন কোন স্তরের কমিটিতে রয়েছে সেই তথ্য সংগ্রহ করে সংহত পরিকল্পনা নিতে চাইছেন তাঁরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *