স্টাফ রিপোর্টার: কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস অফিস বিধান ভবনে হামলা, ভাঙচুরের দায় যাতে দলের ঘাড়ে না চাপে, সেজন্য ওই ঘটনায় যুক্ত দলীয় নেতা রাকেশ সিংয়ের থেকে দূরত্ব রাখছে বঙ্গ বিজেপি। শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে তাণ্ডব চালিয়েছেন রাকেশ। রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেসের নেতাদের ছবি ও তাদের দলীয় পতাকায় আগুনও ধরিয়ে দিতে দেখা গিয়েছে রাকেশ ও তাঁর দলবলকে। আর এই ঘটনায় কার্যত চাপে পড়েই রাজ্য বিজেপি পাশে থাকছে না রাকেশের। গেরুয়া শিবিরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত রাকেশ। তাই তাঁর পাশে বিজেপি নেতারা কেউই না দাঁড়ানোয় বঙ্গ বিজেপির কোন্দলও সামনে এসেছে। শুভেন্দুও কার্যত চাপে পড়ে এ প্রসঙ্গে রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যর বক্তব্যই সমর্থন করেছেন।
শমীক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ”কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকায় আগুন লাগানোর ঘটনা বিজেপি সমর্থন করে না।” তাছাড়া, এটা পার্টির কোনও অনুমোদিত কর্মসূচি ছিল না বলেও তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। যদিও তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে মঞ্চে দেখা গিয়েছে রাকেশকে। অন্যদিকে কংগ্রেস দপ্তরে রাকেশের নেতৃত্বে হামলা প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, ‘‘রাকেশ বিজেপি সমর্থক। বিজেপির মেম্বারশিপ নিয়েছে। সে থাকতেই পারে। তবে এই ঘটনা নিয়ে আমাদের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য যা বলেছেন, সেই বক্তব্যই আমি সমর্থন করি। শমীকদা বলেছেন এটা দলের অনুমোদিত কর্মসূচি নয়।’’
উল্লেখ্য, বিহারের দ্বারভাঙায় রাহুল গান্ধীর সভাশেষে কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তাঁর মা-কে নিয়ে অশালীন কটূক্তির অভিযোগ ওঠে। পাল্টা কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দপ্তরে দলবল নিয়ে ঢুকে চড়াও হন বিজেপি নেতা রাকেশ। তাতে দলের যে সমর্থন নেই, বিজেপি নেতারা যে তার দায় নিতে চাইছেন না, তা আরও স্পষ্ট হয়েছে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার বক্তব্যেও। রাহুলের কথায়, ‘‘কংগ্রেস ভবনে যা হয়েছে তাতে বিজেপির হাত নেই। বিজেপি হিংসার নীতিতে বিশ্বাস করে না।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, ”এই ঘটনা নিজস্ব ঘরোয়া লড়াই। কংগ্রেসের প্রাক্তন ও বর্তমান সভাপতির দলের লড়াই।”
এদিকে, বিজেপি পার্টি ও নাম না করে রাহুল সিনহাকে নিশানা রাকেশ আবার ভিডিও বার্তায় শনিবার বলেছেন, ‘‘আমাদের পার্টিতেও রাহুল ‘পাপ্পু’ (রাহুল সিনহা!) নামে লোক আছে। তিনি বলছেন এটা কংগ্রেসের লড়াই। উনি লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে আটবার হেরেছেন। উনি পার্টির কার্যকর্তাদের কেউ নন, তাই হারেন। আর আমাদের পার্টির অনেক নেতা আছেন যারা খুশি হবেন আমি গ্রেপ্তার হলে।’’ এরপরই নিজের দল বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করে রাকেশ বলেন, ‘‘যা করেছি, বুঝে করেছি, ঠিক করেছি।’’