সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলম্বো সফরে থাকা রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তাঁর অভিযোগ, রাহুল গান্ধী হলেন দেশের প্রথম বিরোধী দলনেতা যিনি বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতের ব্যবস্থাপনা, গণতন্ত্রের বিরোধিতা করলেন। এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মন্তব্য তুলে ধরতে দেখা গেল রিজিজুকে। তাঁর অভিযোগ, ভারত সম্পর্কিত তথ্যকে বিকৃতভাবে পেশ করা হয়েছে রাহুলের ভাষণে। যা দেশের ভাবমূর্তিতে আঘাত হেনেছে।
রবিবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিজিজু বলেন, “কলম্বিয়ায় রাহুলের ভাষণ আমি শুনেছি। ওখানে উনি দাবি করেছেন, ‘ভারত কখনও বিশ্বগুরু হতে পারবে না।’ এ মন্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারত বহু ক্ষেত্রে নিজেকে বিশ্বগুরু হিসেবে তুলে ধরেছে। সেখানে আমাদের বিরোধী দলনেতা যদি বিদেশ গিয়ে এমন মন্তব্য করেন তাহলে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। বিদেশিরা ভাবতে শুরু করবে ভারতের সবাই রাহুলের মতো। এতে দেশের সুনাম নষ্ট হয়। শত্রুদের মনবল বাড়ায়। বিরোধী দলনেতা হিসেবে বিদেশে দেশের সুনাম রক্ষা করা রাহুলের দায়িত্ব।”
এ প্রসঙ্গে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, অটল বিহারী বাজপেয়ীর পাশাপাশি লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজদের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন রিজিজু। বলেন, এই সব নেতারা বিদেশে থাকাকালীন কখনও দেশের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেননি। রাহুলের সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত কোনও বিরোধ নেই। তবে তিনি যদি বিদেশে ভারতের সম্মান নষ্ট করেন তবে তা সহ্য করা হবে না। খোদ ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, বিদেশের মাটিতে ভারতের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়। তবে রাহুল গান্ধী হলেন প্রথম নেতা যিনি বিদেশে গিয়ে দেশ, আমাদের ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের বিরোধিতা করেছেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কলম্বোর ইআইএ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে রাহুল গান্ধী নরেন্দ্র মোদি সরকারকে তোপ দেগে বলেছিলেন, ভারতের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো গণতন্ত্রের উপর হামলা। রাহুল গান্ধী বলেন, প্রকৌশল ও স্বাস্থ্যের মতো ক্ষেত্রে ভারতের দক্ষতা রয়েছে, তাই আমি দেশের প্রতি আশাবাদী। তবে ব্যবস্থায় বহু ত্রুটিও রয়েছে যা সংশোধন করা প্রয়োজন। যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হুমকি হল গণতন্ত্রের উপর চলমান আক্রমণ। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বৈচিত্র্যকে লালন করে, বিভিন্ন ঐতিহ্য, রীতিনীতি, ধারণা এবং ধর্মীয় বিশ্বাসকে বেড়ে উঠতে দেয়। গণতন্ত্র বিপদের মুখে পড়লে তা খুবই খারাপ। তিনি বলেন, ভারতে বহু ধর্ম, ঐতিহ্য ও ভাষা রয়েছে। দেশটি মূলত এই সমস্ত সংস্কৃতির মধ্যে সংলাপের সেতু। বিভিন্ন চিন্তাধারা, ধর্ম এবং ঐতিহ্যকে ধারণ করার জন্য গণতন্ত্র হল সর্বোত্তম মাধ্যম।