বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: পুজোর ছুটিতে সময় কাটাতে সিকিম ভ্রমণের কথা ভেবেছেন? লাচুং, লাচেন অথবা গুরুদংমার হ্রদ ঘুরে দেখার রুট ম্যাপ ছকে নিয়েছেন যারা, তাঁদের জন্য সুখবর। আর ভূমিধসে বিধ্বস্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটে আটকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না। এবার মাত্র আধ ঘণ্টায় শিলিগুড়ি থেকে আকাশপথে পৌঁছে যেতে পারবেন গ্যাংটকে। সেই সুযোগ করে দিতেই পুজোর মুখে রবিবার থেকে ফের চালু হল শিলিগুড়ি-সিকিম হেলিকপ্টার পরিষেবা। সৌজন্যে ‘সিকিম ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’ এবং ‘ স্কাইওয়ান এয়ারওয়েজ লিমিটেড’।
আরও বেশি পর্যটক টানতে গত বছরের ৬ মার্চ বাগডোগরা থেকে গ্যাংটক পর্যন্ত ২৩ আসনের এমআই-১৭২ হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করেছিল সিকিমের পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল দপ্তর। আশা ছিল, কপ্টার পরিষেবায় কম সময়ে বাগডোগরা থেকে গ্যাংটকে পৌঁছে যাওয়ায় পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে। কিন্তু সেটা হয়নি। উলটে আবহাওয়া সামান্য খারাপ হতে উড়তে পারেনি কপ্টার। আকারে বড় হওয়ায় বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রেও নামতে পারেনি। ওই পরিস্থিতিতে মাত্র এক বছরে লোকসানের বহর বেড়ে দাঁড়ায় ২০ কোটি। এবার আর বড় কপ্টার নয়। বাগডোগরা-সিকিম রুটে ছোট কপ্টার চালু করতে উদ্যোগী হয় সিকিমের পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল দপ্তর। সেটির সফল ট্রায়াল রান হয়েছে রবিবার।
কপ্টার পরিষেবা ফের চালু হওয়ায় এখন বাগডোগরা থেকে গ্যাংটক পৌঁছনো যাবে মাত্র আধ ঘণ্টায়। এবারের এমআই ১৭২ হেলিকপ্টারে ২০ জন যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। প্রত্যেক যাত্রী ১০ কেজি পর্যন্ত মালপত্র সঙ্গে রাখতে পারবেন। এজন্য মাথাপিছু টিকিটের খরচ গুনতে হবে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। অনলাইনে টিকিট বুক করতে গেলে বাগডোগরা বিমানবন্দরে হেলিকপ্টার সার্ভিস অফিসে ফোন করতে হবে। নম্বর ০৩৫৯২-২০৩৯৬০ এবং ৭৩১৮৯০৬৬৭৭। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস খোলা থাকবে।
সিকিমের পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে এক বছরেরও বেশি সময় ২৩ আসনের এমআই-১৭২ হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু ছিল। তবে প্রতি উড়ানে ১১-১২ জনের বেশি যাত্রী হয়নি। অনেক সময় মাত্র ৫-৬ জন যাত্রী নিয়ে হেলিকপ্টার চালাতে হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন আবহাওয়ায় পরিষেবা চালু রাখা সম্ভব হবে এই বিশ্বাস ছিল। কিন্তু বাস্তবে সামান্য মেঘলা আবহাওয়ায় এমআই-১৭২ হেলিকপ্টার উড়তে পারেনি। পরিষেবা বন্ধ রাখতে হয়েছে। এছাড়াও এমআই-১৭২ হেলিকপ্টারের আকার এতটাই বড় যে সিকিমের ১১টি হেলিপ্যাডের বেশিরভাগ জায়গায় নামতে পারেনি। মাত্র একটি-দুটি হেলিপ্যাডে নেমেছে। বাকি হেলিপ্যাডগুলি খুবই ছোট। তাই পর্যটকদের লাচুং, লাচেনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে যাত্রী কম হয়েছে। এবারের এমআই ১৭২ হেলিকপ্টারে ওই সমস্যা কম হবে বলেই মনে করছে সিকিমের পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল দপ্তর। সিকিম পর্যটনের উপদেষ্টা রাজ বসু বলেন, “পুজোর মুখে শিলিগুড়ি-সিকিম রুটে ফের হেলিকপ্টার পরিষেবা চালুর ঘটনা পর্যটক মহলের কাছে অত্যন্ত সুখবর। এখন দেখার কতটা সাড়া মিলছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন