পিটানি

পিটানি

শিক্ষা
Spread the love


  • শুভ্রদীপ চৌধুরী

বেঁচে থাকার জন্য সপ্তাহে তিনদিন মৃত্যুর কাছাকাছি যায় নকুল।

ফিরে এসে প্রতিবার সে ভাবে আর যাবে না। তবু যেতে হয়। না যেতে চাইলে সংসার তাকে ঠেলে পাঠায়।

নকুল একলা মানুষ। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। দাদার সংসারে থাকে। তার দাদা সহদেবের সামনেই বৌদি ফুল্লরা দু’বেলা ভাত দেবার সময় তাকে ‘পরগাছা’ বলে ডাকে।  আরও কত কী বলে! নকুল সেসব গায়ে মাখে না। ফিক করে মৃদু হাসে। এই হাসি দেখে একদিন  ফুল্লরা  বিরক্ত মুখে বলেছিল, “কথায় কথায় তোর মুখে এত হাসি কেন আসে রে? তোর মতো হাড়গিলে মানুষেরা হবে খিটমিটে মেজাজের, যারা কস্মিনকালে হাসবে না। কাতুকুতু দিলে মুখ হবে গম্ভীর। তা না হয়ে তোর চিমসে মুখে এত হাসি আসে কোথা থেকে?”

এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নকুল আরও জোরে হেসেছিল। হাসিই যেন তার উত্তর।

মানইল গ্রামের ছোট, বড় সকলেই নকুলকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করে। হাঁটুর বয়সি বাচ্চারা তাকে দেখলেই ‘তারছেঁড়া নকুল’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে। নকুল সেসবে পাত্তা না দিয়ে কাজ না থাকলে আকাশ দ্যাখে, গাছে গাছে পাখি খোঁজে। কীটপতঙ্গের বাজনা শোনে। শীতের শেষ থেকে বর্ষার আগে সে সময় পেলেই জঙ্গলে গিয়ে ঝিঁঝি পোকার ‘ঝিনঝিন’’ শোনে। বর্ষা এলেই আরেক প্রকার ঝিঁঝি একটানা ‘ঝিরঝির’ গায়। এসব শোনার সময় তার নিজেকেও পোকা মনে হয়। সে যেন মাটির দেওয়ালের গায়ে থাকা শান্ত চিড়া-পোকা।

এছাড়াও একটা গাছে কত রকমের সবুজ রং থাকে তা মনে মনে গোনার চেষ্টা করে নকুল।  আবার আত্রেয়ী নদীর কাছে গিয়ে ঢেউ দ্যাখে। সকাল, দুপুর, সন্ধে কেমন নদীর ঢেউ বদলে যায়! ঝাঁকে ঝাঁকে বনটিয়ে সন্ধে নামার আগে ফিরে এসে চক্কর কাটে নদীর বুকে।

এবার নকুলের কাজের প্রসঙ্গে আসা যাক। তার কাজের নাম ‘পিটানি’।  সে আবার কী কাজ! ভেবে অবাক হবার দরকার নেই। সহজ করে বলা যাক, আজকাল  গ্রামে  মাছের চাষ বাড়ছে। চাষের জমিতেই কাটা হচ্ছে নতুন নতুন পুকুর। সেইসব পুকুরে মাছ বড় হলেই চলে যায়  শিলিগুড়ি।

পিকআপ ভ্যানের ডালা পলিথিনে মুড়ে তাতে জল ভরে জ্যান্ত মাছ নিয়ে যাওয়া হয়।  সময় লাগে আট থেকে নয় ঘণ্টা । নকুলের গ্রাম থেকে শিলিগুড়ি প্রায় আড়াইশো কিমি দূরে। এই সময়টুকু নকুল পিকআপ ভ্যানের ডালার একপাশে বসে জলে হাত-পা নাড়ায়। ঢেউ তোলে।  জলে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ে। বেশিক্ষণ মাছ বেঁচে থাকে। এভাবে মাছ বাঁচিয়ে রাখাটাই তার কাজ।

আট-নয় ঘণ্টার এই রাস্তায় কখনও চোখে ঘুম এলে নিশ্চিত গাড়ির ডালা থেকে ছিটকে যাবে রাস্তায়। গত মাসে একজন ডালখোলা পেরিয়ে পড়ে গেছে চলন্ত গাড়ি থেকে। বাঁচেনি। তাই কিছুতেই ঘুমকে আসতে দেওয়া যাবে না কাছেপিঠে! ঘুম এলে নিশ্চিত মৃত্যু। জেগে থাকতে তাই কাজ চালিয়ে পুকুরের মাছেদের জ্যান্ত নিয়ে যেতে হবে। মাছ বলতে  বিরাট আকারের রুই, কাতলা! মরা মাছের তেমন বাজার নেই। জ্যান্ত মাছ দেখলে আড়ত মালিকের চোখ চকচক করে। মুহূর্তে পাঁচ থেকে ছয় কুইন্টালের পিকআপ ভ্যান ফাঁকা হয়ে যায়।

আজ যেমন ভোরের হাওয়া কাঁপতে কাঁপতে এগিয়ে আসছে। চোখ বন্ধ হতে চাইছে। নকুল ফ্যাকাশে হয়ে আসা তার ঠান্ডা হাত দিয়ে চোখ ঘষে। ঘুম দূরে যায়। আবার শীতের দিনে কুয়াশা এসে ঠিক এমন ছেঁকে ধরে। ঘুমিয়ে পড়ার কথা মনে করিয়ে দেয়। হাত দুয়েক দূরের কিছু দেখা যায় না। মনে হয় কুয়াশা নয় নরম বালিশ। চারদিকে কনকন বাতাস। তবু ঘুমকে জিততে দেয় না নকুল। আজ যেমন কাজের ফাঁকে মনের ভেতরে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে, ‘পৃথিবীতে কত রকমের হাওয়া আছে?’

হাত-পা কয়েক সেকেন্ড  থামালেই মাথা তোলে বড় মাছেরা। ড্রাইভারের পাশে বসা পুকুর মালিক সুখচাঁদের গলা কানে আসে, ‘নকুল, ঘুমালি নাকি? সাড়াশব্দ নাই ক্যান!’

নকুল দ্বিগুণ শব্দে জলে ঢেউ তোলে।

সুখচাঁদের নিজস্ব পুকুর চারখানা, আরও ছয়খানা পুকুর সে লিজ নিয়েছে। মাছ চাষে বেশ নাম করেছে। নকুল বেশ কিছুদিন থেকে তক্কে তক্কে আছে, তাদের বাড়ির সামনের ছোট্ট পুকুরটার কথা বলবে। সুখচাঁদ লিজ নিলে বড় উপকার হয়।

ডালখোলায় একবার গাড়ি দাঁড়ায়। চা, বিস্কুট দেয়। এই চা খাবার  সময় মিনমিন করে কথাটা তুলল নকুল, ‘আমাদের বাড়ির সামনের পুকুরটা তো পড়েই আছে। পোনা যে ছাড়ব সেই ক্ষমতা নাই। আপনি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেন।’

সুখচাঁদ হাসে, ‘তুই তো জানিস, তিন বিঘা জলা ছাড়া আমি পুকুর লিজ নিই না। তার উপরে তোদের সেই পুকুর মজা। অন্য কোনও বড় পুকুরের খোঁজ থাকলে জানাস, ভালো কমিশন দেব।’

নকুলের চোখের সামনে তাদের পুকুরটা ভেসে ওঠে। যেন চামড়া কুঁচকে যাওয়া, কুঁজো দুখিনী বুড়ি। সেই পুকুরের চারদিকে শ্যাওলাদাম। বুনোকলমি আর জলা আগাছার দস্যিপনা। শুধুই ঘাসের জঙ্গল।

সুখচাঁদ গাড়ির ডালা বেয়ে উঠে ভালো করে  ভেতরটা দেখে বলে, ‘দু’খানা মাছের অবস্থা ভালো দেখতিছি না। যে করেই হোক দুটোকে বাঁচা। দরকার হলে অক্সিজেন ট্যাবলেট জলে দিবি। একটা মাছ ভাসলে এক মাস কাজ দেব না তোকে। দু’খানা মাছ মরা মানে দু’মাস। কথাটা মনে রাখিস।’

নকুল আবার নিজের জায়গায় ফিরে যায়। মুখে হাসি এঁটে নেয়। জলে ঢেউ তোলে। মাছ দুটো তার পায়ের কাছে এসে ঘুরঘুর করে। তাদের পিছল শরীরে হাত বুলিয়ে দেয় নকুল।  বিড়বিড়  করে, ‘কিশনগঞ্জ, ইসলামপুর, বাগডোগরা…।’ বুকপকেট থেকে অক্সিজেনের ট্যাবলেট জলে ছেড়ে দেয়। মাথার ভেতরে একটা লাইন ঘুরপাক খায়, “একটা মাছ ভেসে উঠলে এক মাস কাজ দেব না তোকে।”

ইসলামপুরে আবার দুম করে দাঁড়িয়ে পড়ল গাড়িটা। নকুল অবাক হয়। আশপাশে দোকান নেই। রাত কত হবে কে জানে? রাস্তার দু’পাশে থম মেরে আছে অন্ধকার। সেই অন্ধকার ফুঁড়ে এগিয়ে এল একজন বেশ লম্বা মানুষ। হাতে একটা ছোট্ট ব্যাগ। গাড়ি থেকে নামল সুখচাঁদ। লোকটা সুখচাঁদের হাতে সেই ব্যাগটা ধরিয়ে দিয়ে বলল, “এই কেমিক্যাল জলে দিলে দেখবেন পাঁচ-ছয় ঘণ্টা হেসে-খেলে বেড়াবে মাছ। পিটানির আর দরকার পড়বে না।”

সুখচাঁদ পার্স থেকে টাকা বের করতে করতে হাসে, “পরখ করে দেখি আপনার কথা আর কেমিক্যালের ক্ষমতা।”

লোকটা হাসে, ‘‘আমরা ফাঁকা আওয়াজ দিই না। মাসে আমি চল্লিশটা গাড়িতে এই কেমিক্যাল দিচ্ছি। আসল জিনিস বেচি বলে এত বড় কথা বলতে পারছি। আজ আসি।”

সুখচাঁদ গাড়িতে উঠবার আগে কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থাকল, তারপর চেঁচিয়ে উঠল, “নেমে আয় নকুল, হাত-পা না চালিয়ে গাড়ির ডালাতে বসে থাকার দরকার নাই! ও হাত-পা চালালে তো আবার আমার সঙ্গে কার কী কথা হচ্ছে সেসব শুনতে পাবি না! নেমে আয়।”

নকুল নেমে আসতেই খপ করে তার জামার কলারটা ধরে সুখচাঁদ হিসহিসিয়ে বলল, ‘একটা মাছ মরলে আমি তোকে ছাড়ব না। এমনিতেই তোর আর দরকার নাই। আজকের মজুরি সাড়ে তিনশো টাকা পাবি যদি একটাও মাছ না মরে। যা হাত-পা চালু রাখ। আর শোন, আমি যখন কথা বলব হাসবি না। মুখে যেন একদম হাসি না থাকে। বেয়াদব কোথাকার।’

একটাও মাছ ভেসে ওঠেনি। ভোরের হাওয়া কাঁপতে কাঁপতে এগিয়ে আসছে। হাওয়ায় মাথা দোলাচ্ছে রাস্তার দু’পাশের বড় বড় গাছেরা। এমন হাওয়া গায়ে লাগলে নিজেদের মাঠের কথা মনে পড়ে। ধানজমিতে শব্দ করে সরে যাচ্ছে ঢোঁড়া সাপ। এই সময় শোল মাছ ছানাপোনা  নিয়ে মনের আনন্দে ঘোরে। এমন এক ভাদ্র মাসের সজনে ফুলের মতো জ্যোৎস্নারাতে ক্ষুধার্ত শেয়ালের সামনে পড়েছিল নকুল। স্থির চোখে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না তার। ভয়ে খুঁটি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যেন তার পা হাঁটু অব্দি পুঁতে দিয়েছে কেউ। চাঁদের আলোয় শেয়ালটার চোখ জ্বলছে। দাঁত চকচক করছে। নকুল সরে যাবার চেষ্টা করেনি, যদি শিয়ালটা ঝাঁপিয়ে পড়ে! পাথরের মতো দাঁড়িয়ে দেখেছিল, শেয়ালটা জঙ্গলের দিকে চলে যাচ্ছে। মাঝেমাঝে মুখ ঘুরিয়ে তার দিকে দেখছে। নকুল নিশ্চিত প্রচণ্ড ভয়ে তার মুখে হাসি ফুটে উঠেছিল। সেই হাসি দেখেই শেয়ালটা ঘাবড়ে গেছে।

ভোরের শিলিগুড়িতে পা দিয়েই নকুল জানল, তার পিটানির কাজটা সত্যিসত্যিই গেছে। সব শোনার পর বৌদি কী কী বলতে পারে ভেবে নকুল চুপ করে থাকল। গত বন্যার পর থেকে তাদের সংসারের অবস্থা ভালো নয়। লাউডগার মতো পেঁচিয়ে ধরেছে অভাব।

কোনওরকমে দিন চলে যায়। এসব সংসারে সারাক্ষণ হাসি হাসি মুখের মানুষ একদম মানায় না। নকুল মনে মনে শপথ করে, সে যখন-তখন আর হাসবে না। তবু হাসি এসে দাঁড়ায় তার ঠোঁটের দু’পাশে।

এই যেমন কাজ চলে যাওয়ার পরেও নিজের হাসিহাসি মুখ চকচকে নাইট সার্ভিস বাসের জানলায় দেখে সে খুবই বিরক্ত হল। মনে হল নিজের গালেই ঠাস ঠাস করে কয়েকটা চড় মারার।  দুঃখের দিনে এত বেহায়া হাসি আসবে কেন! হাসির মাত্রাজ্ঞান থাকবে না!

 

দুই

বাড়ি ফেরার সময় পিকআপ ভ্যানে সারা রাস্তা চুপ করে বসেছিল নকুল। গ্রামে ঢোকার আগে সে নেমে পড়ে। সন্ধে নামছে। পাতি হাঁসেরা হেলেদুলে ঘরে ফিরছে। মাঝেমাঝে ঘাড় বেঁকিয়ে তাকে দেখছে। ছাগলেরা মুখ তুলে ব্যা ব্যা করে ডেকে উঠছে। মায়াবী চোখের একটা গোরু তার দিকে তাকাল। নকুল জানে তারা অপেক্ষা করছিল। কখন গাঁয়ের দুখি রাস্তাটা ধরে ঘরে ফিরবে এই গ্রামের সবচেয়ে হাসিমুখের মানুষটা। তারা নিশ্চয় অবাক হয়েছে তার মুখে আজ হাসি নেই দেখে!

বাড়ি ফিরে দাদার হাতে টাকা ক’টা তুলে দিয়ে মিনমিন করে বলল সবটা। সহদেব সব শুনে আরও চাপা স্বরে বলল, ‘খবরটা চেপে রাখ। তোর বৌদি শুনলে বাড়িতে দক্ষযজ্ঞ শুরু করে দেবে। এক জায়গায় কাজ গেছে আরও অনেক জায়গা আছে। ঠিক একটা ব্যবস্থা হবে।’

নকুল ভ্রূ নাচিয়ে ফিশফিশ করে বলে, “আচ্ছা।”

মাঝখানে তিনদিন কেটে গেল। কাজের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছে নকুল। এই খোঁজখবরের মাঝেই খবর পেল সুখচাঁদের মাছ বাঁচানো কেমিক্যাল ফেল মেরেছে। বেশির ভাগ মাছ দু’ঘণ্টার মধ্যে ভেসে উঠেছে। মাছের ব্যবসায় এতটা লোকসান তার আগে কখনও হয়নি।

বাড়ি ফিরে শুনল সুখচাঁদের লোক বারতিনেক তার খোঁজ করে গেছে। বলেছে, খুব দরকার। খেতে বসে সহদেব ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর  গলায় বলল, “বলেছিলাম না। তোর হাতে জাদু আছে। তুই ছাড়া গতি নাই সুখচাঁদের। এবার বেতন বাড়াতে বলিস।”

 ফুল্লরা ভাত বাড়তে বাড়তে বলল, “আমার কানে সব এসেছে। সুখচাঁদের কাজে আর কখনও যাবে না ঠাকুরপো। যে লোক সামান্য কারণে কলার ধরে ঝাঁকায় শুধুমাত্র টাকার জন্য তার কাজে যাবে না। এ আমি বলে দিলাম।”

নকুলের মুখ থেকে হাসি সরে যায়। তার নাম নিজের গালমন্দের জগৎটা দুলে ওঠে। সে কি ঠিক শুনছে?

 ফুল্লরা বলতে থাকে, “অমন ভ্যাবলার মতো আমার মুখের দিকে তাকায়ে আছ কে? জানো না সর্বক্ষণ মুখে হাসি নিয়ে ঘোরা মানুষ দুম করে গম্ভীর হলে বিচ্ছিরি লাগে। তিনদিন ধরে মুখে হাসি নাই! এরপরও আমি খোঁজখবর নিব না!”

নকুলের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।

তিন

সুখচাঁদ একদিন নিজে এল নকুলের কাছে। গলা নামিয়ে বলল, “কেমিক্যাল ডাহা ফেল মেরেছে রে ভাই। গাড়িতে পাম্পসেট মেশিন সেট করে নিয়ে গেলাম দু’দিন। তাতেও আদ্ধেকের বেশি মাছ মরে গেল। কোনও দিন মেশিন বিগড়ে যাচ্ছে। তুই ছাড়া আর কারও উপরে ভরসা করতে পারছি না। আমায় বাঁচা।”

ফুল্লরা চেঁচিয়ে ওঠে, “পাম্পমেশিন যখন বিগড়ে গেল তখন তার কলার ধরে ঝাঁকালেই পারতেন। দিব্যি চালু হত। মন দিয়ে শোনেন, আর কখনও আপনার কাজে যাবে না নকুল। এই বিশাল দুনিয়াতে কাজের অভাব নাই। কোথাও একটা কাজ ঠিক পেয়ে যাবে।”

সুখচাঁদ মাথা নামিয়ে ফিরে গেল।

চার

অনেক খোঁজখবর করার পর নকুল একটা কাজ পেয়েছে। জেগে থাকার কাজ। আনন্দ দেবে এমন কাজই সে খুঁজছিল। পেয়েছে।

নকুল এখন একটা অ্যাম্বুল্যান্সে থাকে।

ট্রলিতে করে পেশেন্ট তোলে। রুগি নিয়ে যায় সদর হাসপাতাল থেকে দূরের বড় হাসপাতালে। সবই সিরিয়াস টাইপের পেশেন্ট। পেশেন্ট পার্টিকে নকুল আজকাল ভরসা দেয়, “একদম ভয় পাবেন না, আমি জেগে আছি। আপনারা ঘুমান।”

নকুলের মুখে সবসময় লেগে থাকা হাসিটা আবার ফিরে এসেছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *