পাহাড়ি নদীতে স্নানে নেমে বিপদ, মূত্রথলি থেকে জ্যান্ত জোঁক বের করল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল

পাহাড়ি নদীতে স্নানে নেমে বিপদ, মূত্রথলি থেকে জ্যান্ত জোঁক বের করল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


অভিরূপ দাস: পুকুরে স্নান করতে নেমেছিল বছর এগারোর নাবালক প্রসেনজিৎ দাস (নাম পরিবর্তিত)। স্নান করে উঠে কিছুই টের পায়নি প্রসেনজিৎ। কয়েকঘন্টা কাটতে না কাটতেই আচমকাই তলপেটে অসহ‌্য ব‌্যাথা। ফোটা ফোটা রক্ত চুইঁয়ে পড়ছে প্রস্রাব করার জায়গা থেকে। হাসপাতালে নিয়ে যেতে সন্দেহ হয় চিকিৎসকদের। আল্ট্রাসোনোগ্রাফিতে দেখা যায় কি একটা নড়াচড়া করছে মূত্রথলিতে। তারপর? ঘন্টাখানেকের অস্ত্রোপচার শেষে যা বেরোল তা প্রমাণ সাইজের রক্তচোষা!

মুর্শিদাবাদ মেডিক‌্যাল কলেজের ইউনিট টু সার্জারির বিভাগীয় প্রধান ডা. অভিজিৎ রায় জানিয়েছেন, জোঁক ঢুকে গিয়েছিল শিশুটির প্রস্রাব করার ছিদ্র দিয়ে। বর্ষায় ঘুরতে যাওয়ার ধুম। পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে অনেকেই হুটহাট স্নান করতে নেমে পড়েন পাহাড়ি নদীতে-ঝর্ণায়। চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত ‘অ‌্যাডভেঞ্চার প্রেম’ বিপদ ডেকে আনতে পারে। যেমন বিপদ ঘনিয়েছিল প্রসেনজিতের। সতর্ক করেছেন ডা. অভিজিৎ রায়। তাঁর কথায়, ‘‘বর্ষার এই স‌্যাতেস‌্যাতে আবহাওয়ায় পাহাড়ে, নদীতে জোঁকেদের বাড়বাড়ন্ত। ঘুরতে গিয়ে জঙ্গলে নদীতে, পাহাড়ী ঝোড়ায় দুমদাম স্নান করতে যাবেন না। জলে জোঁক থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তা ঢুকে পড়তে পারে মূত্রছিদ্র দিয়ে।”

বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে ভয়টা দ্বিগুণ বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এই অস্ত্রোপচার টিমের চিকিৎসক ডা. অমিত বড়ুয়া কথা বলেছেন শিশুটির সঙ্গে। তাঁর কথায়, বাচ্চাটি কিছু একটা ঢুকতে দেখেছিল প্রস্রাব করার জায়গা দিয়ে। চেষ্টা করেও বের করতে পারেনি। ডা. অমিত বড়ুয়ার জানিয়েছেন, ‘‘দুর্ঘটনা বশত যদি জোঁক ঢুকে পড়ে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসুন রোগীকে।’’ হাসপাতালে ‘ওপেন সিসটেকটমি’ অস্ত্রোপচারের মাধ‌্যমে প্রসেনজিতের মূত্রথলি থেকে বের করা হয়েছে জ‌্যান্ত জোঁকটি। মুর্শিদাবাদ মেডিক‌্যালে গোটা অস্ত্রোপচার সফল করতে ডা. অভিজিৎ রায় ধন‌্যবাদ জানিয়েছেন সহ চিকিৎসক, পিজিটিদের। হাসপাতালের সুপার ডা. অনাদি রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘‘এত বড় একটা অস্ত্রোপচার জেলার মেডিক‌্যাল কলেজে সম্ভব হয়েছে তার জন‌্য চিকিৎসকদের ধন‌্যবাদ। মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায় সবসময় বলেন, রেফার নয়। জেলার মেডিক‌্যাল কলেজে হতে পারে অত‌্যাধুনিক চিকিৎসা। তারই প্রমাণ দিলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক‌্যাল কলেজের চিকিৎসকরা।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *