পাশে নয়, দুর্গার উপর-নিচে থাকেন সন্তানরা! রাজশাহিতে বিখ্যাত হাজার বছরের এই পুজো

পাশে নয়, দুর্গার উপর-নিচে থাকেন সন্তানরা! রাজশাহিতে বিখ্যাত হাজার বছরের এই পুজো

সিনেমা/বিনোদন/থিয়েটার
Spread the love


সুকুমার সরকার, ঢাকা: পুজো-পার্বণ বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য। একসময় দুর্গাপুজো কেবল জমিদার আর রাজারা করতেন। তখন সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ইতিহাসে মেলে না। রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হলে এই পুজো হয়ে যায় বারোয়ারি। রূপ নেয় সর্বজনীন দুর্গাপুজোয়। এখন সব শ্রেণি ও গোত্রের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সেই রাজারাজড়াদের আমলের এমনই এক প্রাচীন পুজো হয় বাংলাদেশের রাজশাহিতে। তাহেরপুর গ্রামে ১৪৮০ খ্রীস্টাব্দ অর্থাৎ বাংলার ৮৮৭ বঙ্গাব্দে রাজা কংসনারায়ণ তাঁর রাজভবনেই প্রথম শুরু করেন দুর্গাপুজো। এখানে প্রতিমার পাশে নয়, সন্তানরা থাকেন উপরে এবং নিচে। এটাই বিশেষত্ব।

মোঘল শাসনামলে রাজশাহির তাহেরপুরে রাজা কংসনারায়ণ রায়বাহাদুর প্রথম দুর্গামন্দির প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। মন্দিরটি অসুরের অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ষোড়শ শতাব্দীর শেষ ভাগে। রাজা কংসনারায়ণ সাড়ে আট লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক শারদীয় দুর্গোৎসব চালু করেন। সম্রাট আকবর রাজা কংসনারায়ণকে সুবে বাংলার দেওয়ান নিযুক্ত করেন। কিন্তু যথেষ্ট বয়স হওয়ায় তিনি দেওয়ানের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে তাহেরপুরে ফিরে ধর্মীয় ও সামাজিক কাজে আত্মনিয়োগ করেন।

এই সেই প্রাচীন মন্দির। নিজস্ব ছবি।

তবে এর পিছনে রয়েছে আরেকটি গল্প। কংসনারায়ণ ‘রায়বাহাদুর’ উপাধি উদযাপন করার জন্য অশ্বমেধ যজ্ঞ বা রাজসূয় যজ্ঞ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেসময় শাস্ত্রে এমন নিয়ম ছিল না। পণ্ডিতরা বলতেন, ‘‘কলিযুগে অশ্বমেধ যজ্ঞ সম্ভব নয়। মার্কণ্ডেয় পুরাণে যে দুর্গার কথা আছে, তার পূজা করুন।’’ এভাবেই তিনি প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেন। এই পুজোর প্রধান বৈশিষ্ট্য একচালার দুর্গাপ্রতিমার চালি, উপরের দিকে লক্ষ্মী ও সরস্বতী এবং নিচে গণেশ ও কার্তিকের অবস্থান। প্রতিমার পিছনে অর্ধচন্দ্রাকার চালি, অর্থাৎ চালচিত্রের ব্যবহার। যে চালিতে মূলত দশ মহাবিদ্যা ও মহাদেবের অবস্থান। এ ধরনের চালিকে ‘বাংলা চালি’ বলা হয়। প্রতিমার মুখের আদলে থাকে অভিনবত্ব। প্রতিমার টানা টানা চোখ ও টিয়া পাখির ঠোঁটের মতো বাঁকানো নাক। দেবীর দুই গাল সামান্য চাপা। এ ধরনের মুখের আদলকে বলা হয় ‘বাংলা মুখ’। দেবীপ্রতিমার বর্ণ গাঢ় হলুদ। দুর্গাপুজোয় দৃশ্যমান থাকে অসুর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ







Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *