কোচবিহারের এই বাগানবাড়ির কথা ওরা আগে জানত না। ওরা মানে সাঁঝবাতি, রূপাঞ্জন আর রূপাঞ্জনের সহকর্মীরা। সকলেই শিলিগুড়ির এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পদস্থ কর্মচারী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে কর্মসূত্রে শিলিগুড়ির বাসিন্দা। সাঁঝবাতির বাবার বাড়ি শিলিগুড়ি হাকিমপাড়া। রূপাঞ্জন দক্ষিণ কলকাতার ছেলে। চাকরি পেয়ে কলকাতার পাট চুকিয়ে বাবা-মাকে নিয়ে শিলিগুড়িতেই ফ্ল্যাট কিনে নিয়েছে। ঋষিকল্প রায়, যার আমন্ত্রণে ওরা পুজোর ছুটি কাটাতে সবাই এখানে এসেছে। ঋষি কখনও গল্পের ছলেও নিজেদের বিত্তের কথা সহকর্মীদের জানায়নি সংকোচবশত। ঋষি ব্যাচেলর। বিয়ের বয়স পেরিয়েও যায়নি। মধ্যগগনে যৌবন। এককথায় সুদর্শন। চেহারাটা নামের সঙ্গে কোথায় যেন মিলে যায়। চোখের দিকে তাকালে মনে হয় ঋষিবালকের মতো অদ্ভুত এক স্নিগ্ধতা। যে কেউ মুহূর্তে মোহিত হয়ে যেতে পারে। তাই বন্ধুভাগ্য ওর সবথেকে বড় সম্পদ। উত্তরাধিকার সূত্রে এই বাড়ি তার। সাঁঝবাতি এমন বাড়ির ছবি আগে কখনও দেখেছে কি না মনে করতে চায়। বড় বড় থাম। জানলার শার্সিতে রঙিন কাচের ঢেউ। বিশাল বারান্দা ঘিরে মানিপ্ল্যান্টের বড় বড় পাতা আসর জমিয়েছে। কার্নিশজুড়ে দূর্বাঘাস। ঘাসে ফুল ফুটেছে। ভালো করে দেখলে সবুজ মখমলি শ্যাওলা; যেন কার্নিশের প্রাচীন পলেস্তারাকে রোদ জল থেকে আগলে রাখতে ব্যস্ত। স্তব্ধ ছাদ। মানুষের পদচারণার অভাবে ব্যাকুল। তেল-পালিশ চকচকে সিঁড়ি। চিলেকোঠা। সবাই খুব একা। নীচে বাগানের ছায়া। আগাছা জমেছে। বহুদিনের পুরোনো পামগাছ। সাঁঝবাতির বুক কাঁপে। ধু-ধু মনে হয়। অস্ফুট স্বরে বলে – ‘সম্ভবত এ বাড়িতে আমি ছিলাম!’ তবে কি এমন বাড়ির গল্প পড়েছে কোথাও? মনে নেই। এ বাড়ির সঙ্গে নিজের আশ্চর্য মিল খুঁজে পায়। ভেতরে কাঠের সিঁড়ি। রেলিং-এর সীমানায় বাঘের মুখ। হাঁ করে তাকিয়ে আছে বাঘ। মুখে হাত আটকে যায় সাঁঝবাতির। দাঁতের তীক্ষ্ণতা নেই। বাইরে লোহার ঘোরানো সিঁড়ি। কেমন প্যাঁচানো। যেমন হওয়ার কথা এতক্ষণ মনে মনে ভেবেছে সাঁঝবাতি, ঠিক তেমনই বাকিসব। ভয় ও কৌতূহল হয়- এবার কোন দিকে তাকাবে, আবার কি মিলে যাবে! কেন মিলে যাচ্ছে…
বাগানের দিকে পা বাড়াতেই দেখে, একটি পাখির পালক পড়ে আছে। আলতো করে তুলে নেয় সে। পালক দেখে সবসময় পাখি চেনা যায় না, কিন্তু এ পালকে নীলচে আভা দেখামাত্র রামায়ণের কাহিনী মনে পড়ে যায় সাঁঝবাতির। রাবণবধের আগে শ্রীরামচন্দ্র নীলকণ্ঠ পাখির দর্শন পেয়েছিল। আবার ঠাকুমার মুখে শুনেছিল- এই পাখি উড়ে গিয়ে কৈলাসে মহাদেবকে জানান দিয়েছিল, মা দুর্গা ফিরছেন। ঠাকুমার আদুরে সাজু কোথায় ফিরতে চায়? কার কাছে ফিরতে চায়? কোথায় ছিল? এখন কেমন আছে রূপাঞ্জনের সংসারে? বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোয় দশমীর দিন নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানোর যে রেওয়াজ ছিল। খাঁচায় বন্দি একরত্তি পাখিকে হঠাৎ করে উড়তে দিলে, সে যে উড়তে ভুলে যায়! সে যে প্রতিরক্ষা ভুলে যায়! সাজু কি আর নিজের ইচ্ছে মতন কোথাও যেতে পারবে? – এসব নানা প্রশ্নের চক্রব্যূহে আটকে গিয়ে দু’-হাতে নিজের মাথাটা চিপে ধরে সাঁঝবাতি। গল্প-উপন্যাসের নানা চরিত্র, নানা ঘটনা, নানা স্থান ভিড় করে আসে তাঁর স্মৃতির চারদিকে। কখন যে কোন চরিত্রের মধ্যে নিজেকে গুলিয়ে ফেলে, বুঝে উঠতে পারে না।
২
ঋষিকল্প চিরকাল বান্ধববিলাসী। শরৎকাল। তাল পাকা রোদের তাপে ক্লান্ত মানুষ- পশু-গাছগাছালি। সকালে নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ, মন ভালো করে দিলেও; সারাদিন আর আকাশের দিকে তাকানোর উপায় নেই এমন রোদ। ঘাস-ওঠা লনেও কড়া রোদ। অগত্যা পোর্টিকোর সামনে বারান্দায় আড্ডার ব্যবস্থা করেছে বন্ধুদের জন্য। গ্রিক স্থাপত্যের অনুকরণে এই পোর্টিকো তৈরি করিয়েছিলেন ঋষির ঠাকুরদার বাবা। এক সময়ে এখানে বিলাতি ঢঙে আসর বসত। আমন্ত্রিত থাকত বিভিন্ন গ্রামের জমিদাররাও। নকশামণ্ডিত কারুকার্য করা দীর্ঘ পাইপ লাগানো হুঁকায় টান দিতে দিতে ইউরোপীয়রা বলত ‘হাবল-বাবল’ বুদবুদ শব্দে ধোঁয়া নির্গত হত। তামাকের গন্ধকে ম্লান করে দিত চিটে গুড় ও অন্যান্য সুগন্ধি মশলাপাতির গন্ধ। গন্ধে যেন বৈভব ছড়িয়ে পড়ত! ছিলিম প্রস্তুত-এর জন্য থাকত সুদক্ষ অনুচর। তাদের বলা হত হুঁকাবরদার। ঋষিকল্প বাবার বুকে মুখ লুকিয়ে এমনভাবে এইসব পরিবারের ঐতিহ্যের কথা শুনেছিল যে; আজও চোখ বন্ধ করলে সব যেন দেখতে পায়। সেইসব বিলাসিতার ও আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে এখনও বাগানবাড়ির বসার ঘরের টি-টেবিলের পাশে সুসজ্জিত হুঁকাটির নলকে কুণ্ডলী পাকিয়ে হুঁকার গায়ে জড়িয়ে রাখা আছে। ছোটবেলায় দু’-একবার এই পাইপে মুখ রেখে জমিদার জমিদার খেলেছিল ঋষি। বড় হলে বাবা একবার একটি চিঠি দেখিয়ে বলেছিল- বাংলার গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস নাকি এক ভোজসভায় তার ঠাকুরদার বাবাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। যেখানে লেখা ছিল- ‘আমন্ত্রিত অতিথিরা যেন ভোজসভায় হুঁকাবরদার ছাড়া অন্য কোনও ভৃত্য সঙ্গে নিয়ে না আসে।’ বাপ-কাকাদের আড্ডায় সেই বনেদিয়ানার কিছুটা আভাস পেয়েছিল ঋষি, তার শরীরেও বইছে জমিদারের রক্ত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পদবি আর এই প্রাসাদোপম বাড়িটা ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই, তবে অন্দরমহলে এমন কিছু তৈলচিত্র এখনও রয়েছে, যেগুলো দেখলে জমিদারি মেজাজ ফিরে ফিরে আসতে চায়। একা মানুষ ঋষি। উচ্চশিক্ষিত হয়ে ব্যাংকের পদস্থ কর্মচারী বর্তমানে। পৈতৃক সম্পত্তি এতটাই সঞ্চিত আছে যে, প্রতিদিন এমন আড্ডার আয়োজনেও ঋষিকল্পের জীবদ্দশায় সম্পত্তি ফুরোবে না। সুযোগ পেলেই দানধ্যানও করে কম না। বসে থাকলে হয়তো বা রাজার ভাণ্ডার ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
৩
আড্ডার পেছনের দিকে ব্যবস্থা করা হয়েছে রান্নার। খাদ্য আছে। নানারকম সুস্বাদু পানীয়ও আছে। সবাই ছড়িয়ে বসেছে। দিব্যা আর সোহিনী ছেলেদের সঙ্গে মিশে গেছে। সাঁঝবাতি স্মৃতি-স্বপ্ন-বাস্তবের দোলাচলে ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে বাড়িটার প্রতিটি খাঁজ। পশ্চিম আকাশ রাঙিয়ে সূর্য তখন বিশ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বড্ড ঘুম পাচ্ছে সাঁঝবাতির। সবার মধ্যে ও কেবল চাকরি করে না। মদ, সিগারেটও খায় না। রান্না, খাওয়ার দিকেও আজ মন নেই ওর। ভদ্রতাবশত আড্ডায় এসে বসে আছে। মন চলে গেছে সেই পাম গাছের তলায়, যেখানে পালকটি পড়ে ছিল। ওর কাছে এ বাগান, এ বাড়ি রহস্য ও কৌতূহল। শৈশব ফিরে পাওয়ার সুখ। হঠাৎ তার চোখ গেল দেওয়ালের বাঁধানো একটি ছবিতে। দুটো কচি হাতের ছাপ সাদা কাগজে। বোঝার উপায় নেই ছেলে না মেয়ের। সাঁঝবাতির ইচ্ছে করে, উঠে গিয়ে ছবিটি নামিয়ে এনে; সেই হাতের উপর নিজের হাত রাখে। পরমুহূর্তে মনে হয় তার হাত এই হাতের ছাপে রাখলে ছাপটি ঢেকে যাবে, যেমন করে তার কচি হাতের উপর বাবা হাত রাখলে তার হাত ঢেকে যেত। হেসে লুটিয়ে পড়ত বাপবেটিতে।
বিয়ের পর খিলখিলিয়ে হাসতে ভুলে গেছে সাঁঝবাতি। আড্ডায় নিজেকে বেমানান ভেবে বাগানে নেমে আসে। অজস্র শিউলি ফুটে আছে। কামিনী, স্থলপদ্মের কুঁড়ি… একটা পাখির আওয়াজ। সন্ধ্যা নেমে আসার পরে, বাগানে মানুষের পদশব্দে আতঙ্কিত পাখির ঘুমভাঙা আর্তনাদ যেন। ডানদিকে প্রকাণ্ড ঝিল। পাড়ে নারকেল- সুপারির সারি। কে দেখে এত গাছ? ঋষি? মানুষের আড্ডাতে যে এত মনোযোগী, গাছ তার এত ভালো লাগে?
অবাক করা শব্দে ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে সাঁঝবাতি। দূরে রূপাঞ্জন। হাতে এয়ার গান। ‘মেরো না! মেরো না পাখি। ওরা ঘুমিয়ে আছে।’ সাজু চিৎকার করে ওঠে। মিসফায়ার! নেশার সময় কথা কম বলে রূপাঞ্জন। কখন কী করে নেশা কেটে গেলে কিছুই মনে থাকে না। ফিরে যায় রূপাঞ্জন। সে প্রকৃতিকে ভালোবাসে না। প্রাণাপেক্ষা প্রিয়; সাঁঝবাতি না মদ? গলা বুজে আসে সাজুর। গোলাপি রুমালে চোখ মুছে নেয়।
৪
প্রত্যেক কথায় ঋষির বন্ধুরা হাসাহাসি করছে। গাছ-বাগান-রাতের আকাশের জ্যোৎস্নার মোহ- দূরে রাজবাড়ির চূড়া- এসব থেকে ভালো লাগে পানীয়। ছুটিতে ঘুরতে এলেও ওরা মূলত পানীয়র আড্ডায় ডুবে থাকতেই, সব জায়গায় যায়। রূপাঞ্জনও তাই। আসলে ব্যাংকে একবার ঢুকে গেলে পাশের টেবিলের সঙ্গেও কথা বলার সময় থাকে না। তবে জমিদার বাড়িতে ঘুরতে এসে কয়েক পেগ পেটে পড়তেই, শিকারের নেশা চেপে ধরে রূপাঞ্জনকে। বিকাশ, জয় হাসতে হাসতে ড্রিংক ঢালে। সসেজ ভাজিয়ে আনে। খায়। আড্ডা জমজমাট। ওরা পাগলের মতো হাসে। কারণ ছাড়াই হাসে। একই কথা বারবার বলে। জয় গান ধরে- ‘চিত্ত পিপাসিত রে’ সাজু ভাবে- মদ খেলে কারও কান্না পায় না কেন? বিকাশ, জয়, সোহিনীকে মদ না খেলে তো এত হাসতে দেখা যায় না। তবে কি কান্না ঢাকতে …
রায়গঞ্জ থেকে আনা তুলাইপাঞ্জি চাল আর দেশি মুরগির সুঘ্রাণ। তাতে চিকেন-মশলা আর কাসুরি মেথি মিশে গিয়ে খিদে বাড়িয়ে দিয়েছে সবার। রূপাঞ্জন এয়ার গানটা রেখে হাতে গেলাস নিয়ে টলোমলো হাঁটে। ঋষি সঙ্গে এগিয়ে যায়। নেশার ঘোরে একই কথা বারবার বলে, খুব হাসলেও; ঋষির পা টলোমলো নয়। চাঁদের আলোতে ঝিলটা দেখতে পায় রূপাঞ্জন। হঠাৎ গরম লাগে তাঁর। ঘাটের খুব কাছে পৌঁছে যায়। শিউলি ফুলের গন্ধ বাতাসে। ঠান্ডা জলে পা রাখে রূপাঞ্জন। ‘ঠান্ডা হতে চাই। জলে নামব।’ শরীরের সব বস্ত্র একে একে খুলে ফেলে সে। ঋষির নিষেধ মানে না। হেঁটে জলে নেমে যায়। মাথায় ভর্তি নেশা। সাঁতার কাটতে ভুলে যায়। ‘ওকি! রূপাঞ্জন ডুবে যাবে যে।’ ঋষির সমস্ত নেশা ছুটে যায়। সুদক্ষ সাঁতারু ঋষি। ডুবন্ত রূপাঞ্জনকে টানে। চড় মারতে মারতে তাকে ঠেলে দেয় ঝিলের পাড়ে। টেনে হিঁচড়ে তুলে আনে ঘাটে। নিজের জামা খুলে ছুড়ে দেয় রূপাঞ্জনের নিম্নাঙ্গে। নারকেল গাছের শিকড়ে পিঠ ছিঁড়ে যায় রূপাঞ্জনের। রক্ত পড়ে। সে অচেতন পড়ে থাকে শিউলি গাছের তলে। শিউলি ফুলগুলো তখন নিজ অস্তিত্ব রক্ষার অক্ষম প্রচেষ্টা করছে। রাত শেষে ঝরে পড়বে মাটিতে। পিষে চলে যাবে সবাই। মিশিয়ে দেবে মাটিতে।
পানীয় ছেড়ে, খাবার ছেড়ে, দৌড়ে আসে সবাই। চ্যাঁচামেচি- রূপাঞ্জন, রূপ, রূপাঞ্জনবাবু কী হল? একসময় থেমে যায় সব চ্যাঁচামেচি। সাঁঝবাতি এসে দাঁড়ায় পাথরের মতো। ‘ভয় নেই বেঁচে গেছে’ – হাঁপাতে থাকে ঋষি। তাঁকে জড়িয়ে ধরে হুহু করে কেঁদে ওঠে আকুল সাজু। যে বুক পাওয়ার কথা ছিল, এ বুকে তেমন স্পন্দন? তেমন ডুবে যাওয়া? ঋষি চুপ। সবাই চুপ। ধীরে ধীরে বাহুমুক্ত করে, মুখ তুলে তাকাল সাঁঝবাতি। ঋষিও তাকিয়ে থাকে। চোখের ভেতরে চোখ। চারদিকে সবাই তখনও চুপ। জ্যোৎস্নার আলোয় শিউলি ফুলের আগুনরঙা ডাঁটগুলো জ্বলজ্বল করে।
৫
সাঁঝবাতি রূপাঞ্জনকে নিয়ে ঋষির গাড়ি ছুটতে থাকে ন্যাশনাল হাইওয়ে ধরে। চোখ বুজে হেলান দিয়ে বসে থাকে রূপাঞ্জন। সুস্থ না অসুস্থ বোঝা যায় না। কোলের ওপর শুকনো জামাকাপড়, যেগুলো খুলে; ঝিলে নেমে গিয়েছিল। গাড়ির জানলা দিয়ে হুহু করে শেষরাতের বাতাস ঢুকছে। ঠান্ডা হতে চেয়েছিল কেন রূপাঞ্জন? জলের পথ বেছে নিয়েছিল কেন? জল কি প্রেমের থেকেও শীতল করে? জলের কাছে সমর্পিত হতে গিয়ে দেখেনি তৃষ্ণা? — এইসব কটু প্রশ্ন ছুড়ে দিতে পারত শিউলি ঝরার আগেই। সাঁঝবাতি তা করেনি। হাতে সেই পালকটি নিয়ে চোখ বুজে দেখতে চেয়েছে সকালের প্রথম আলোর শিউলিবৃষ্টি।
শিলিগুড়ির ফ্ল্যাটের সামনে যখন গাড়ি থেমেছে তখনও আকাশ অন্ধকার। রাত শেষ হয়নি। চাঁদ ডোবার অপেক্ষা। গাড়ির ডোম-লাইটটা জ্বালিয়ে দিতেই সাজুর হাতের ওপর ঋষির হাত। যেমন করে শৈশবে বাবার হাত দিয়ে ঢেকে যেত সাঁঝবাতির হাত। আসলে দুজনেই তো আলোই জ্বালাতে চেয়েছিল।