সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় উপমহাদেশে যুদ্ধের আবহ। ভারতের অপারেশন সিঁদুরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। সীমান্ত উত্তপ্ত করে রেখেছে পাকিস্তানও। চলছে গুলির লড়াই। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে এলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী সইদ আব্বাস আরাঘচি। বৈঠক করবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে। পাশাপাশি অন্য নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সোমবার আরাঘচি সাক্ষাৎ করেছিলেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে। আর মঙ্গলবার গভীর রাতেই পড়শি দেশে আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। বুধে দিল্লিতে পা রেখেছেন আরাঘচি। যুদ্ধ আবহে কোন পক্ষে তেহরান?
৭ ও ৮ মে ভারত সফরে আসবেন আরাঘচি তা আগেই খবর মিলেছিল। এনিয়ে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, দু’দিনের এই সফরে ভারত ও ইরানের মধ্যে ২০তম যৌথ কমিশনের বৈঠকে যুগ্ম-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন আরাঘচি। জানা গিয়েছে, ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে ভারত। সেখানেই যোগ দেবেন আরাঘচি। ১৯৫০ সালে‘ভারত-ইরান মৈত্রী চুক্তি’র মাধ্যমে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল দু’দেশ। আগামী দিনে এই সম্পর্ক আরও মজবুত ও কার্যকরী করে তুলতে বৈঠক করবেন জয়শংকর ও আরাঘচি। আজই এই আলোচনা করবেন তাঁরা। এই বৈঠক শেষে ইরানের বিদেশমন্ত্রী দেখা করবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে।
কয়েকদিন আগেই ভারত-পাকিস্তানকে শান্তির বার্তা দিয়েছিল তেহরান। আরাঘচিকে এক্স হ্যান্ডলে পহেলগাঁও হামলা নিয়ে পোস্ট করতে দেখা গিয়েছিল। তিনি লিখেছিলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান ইরানের দুই ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে বহু শতাব্দী প্রাচীন সাংস্কৃতিক ও সভ্যতার বন্ধন আমাদের। অন্য প্রতিবেশীদের মতোই তাদেরও আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই। এই কঠিন সময়ে পারস্যের কবি সাদির পঙক্তি মাথায় রেখে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে বোঝাপড়ার উন্নতি ঘটাতে তেহরান প্রস্তুত। মানুষ আসলে সবাই সমান/ একই সার ও আত্মা থেকেই সৃষ্টি/ যদি একজন যন্ত্রণায় কাতর হয়/ অন্যজনেরও হতে থাকে অস্বস্তি।’ ফলে এবার অপারেশন সিঁদুরের আবহে আরাঘচির ভারতে আসা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
উল্লেখ্য, গত বছরের জানুয়ারি মাসের শুরুতে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে। হামলা পালটা হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দুদেশের সম্পর্ক। পাকিস্তানের সবথেকে বড় প্রদেশ বালোচিস্তানে জেহাদি সংগঠন জইশ আল আদলের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ইরানের এলিট রেভোলিউশনারি গার্ড। এই হামলার পিছনে তেহরানের যুক্তি ছিল নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনে অভিযান চালানো হয়েছে। পালটা দেয় পাক ফৌজও। একে ওপরের রাষ্ট্রদূতদের তলব করে দুই দেশ। তারপর আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমন করে তেহরান ও ইসলামাবাদ। ভারতের লড়াইও এই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে।