সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার পর তলানিতে পৌঁছেছে ভারত-পাক সম্পর্ক। পাকিস্তনি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে দিল্লি। ২৭ এপ্রিল, রবিবার ছিল ভিসার মেয়াদের শেষ দিন। এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েন পাকিস্তানের প্রাক্তন সাংসদ দাবায়া রাম। যিনি গত ২৫ বছর ধরে হরিয়ানার ফরিদাবাদের বাসিন্দা। ভাগ্যের ফেরে জনপ্রতিনিধি থেকে আইসক্রিম বিক্রেতা অশীতিপর দাবায়া এবং তাঁর পরিবারকে অবশ্য শেষ পর্যন্ত ভারত ছাড়তে হল না। কেন?
ফরিদাবাদ জেলার রাতিয়া তহশিলের অন্তর্গত রতনগড় গ্রামে থাকেন পাক সংসদের প্রাক্তন সদস্য দাবায়া। সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ জানিয়েছে, কেন্দ্রের ভিসা সংক্রান্ত নির্দেশিকার পর স্থানীয় থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল দাবায়া এবং তাঁর পরিবারকে। যদিও জিজ্ঞাসাবাদের পর ভারত সরকারের অনুমতিতেই তাঁদের ঘরে ফিরে যেতে বলা হয়। উল্লেখ্য, দাবায়ার পরিবারের ছয় সদস্য ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছেন। বাকি ২৮ জন সদস্যর কাছে এখনও পর্যন্ত স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্র নেই।
দেশভাগের বছর দুই আগে পাকিস্তান পাঞ্জাবে জন্ম দাবায়া রামের। ১৯৪৭ সালের পর পাকিস্তানেই থাকছিলেন। দাবায়া এবং তাঁর পরিবারকে একাধিকবার ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা হয়। যদিও তা কোনওভাবে রুখে দেন তিনি। ১৯৮৮ সালে লোহিয়া এবং বখার জেলায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে পাক সংসদের সদস্য হন দাবায়া। যদিও ব্যক্তিগত ট্রাজিডি চলতেই থাকে। ধর্মীয় মৌলবাদীরা দাবায়ার এক আত্মিয়াকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। এই বিষয়ে বিচার চেয়ে পাক সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন তিনি। যদিও আদালত মামলা খারিজ করে দেয়।
এই পরিস্থিতি ২০০০ সালে পাকিস্তান ছাড়েন দাবায়া এবং তাঁর পরিবার। প্রথমে হরিয়ানার রোহতকে চলে আসেন। পরবর্তীকালে রতনগড়ের স্থায়ী বাসিন্দা হন। এদেশে ভালো আছেন দাবায়া এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তবে ভাগ্যের ফেরে ও পেটের দায়ে পাক সংসদের জনপ্রতিনিধি থেকে আইসক্রিমওলা হয়ে ওঠেন দাবায়া। প্রবীণ মানুষটি আজও সাইকেলের প্যাডেল চাপ দিয়ে গলিতে গলিতে আইসক্রিমের গাড়ি নিয়ে ঘোরেন। ফেরার পথে নিজের বাড়ি খোঁজেন। যা দেশভাগের ধাক্কায় আজীবন ঘন কুয়াশায় ঢাকা।