সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতার পর থেকে আজও ভারতের প্রতিবেশী ভাগ্য সুখের নয়। শত্রু হিসেবে পাকিস্তান ও চিন তো ছিলই, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের গতিবিধিও সন্দেহজনক হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতেই এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন দেশের সেনা সর্বাধিনায়ক অনিল চৌহান। জানালেন, চিন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা ভারতের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।
মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সাম্প্রতিক ভারত ও পাক সংঘাত প্রসঙ্গে বলেন, গত ৫ বছরে পাকিস্তান তার অস্ত্রের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ চিন থেকে আমদানি করেছে। অপারেশন সিঁদুরের সময় চিন পাকিস্তানকে ঠিক কতটা সমর্থন যুগিয়েছিল তার বিশদ তথ্য পাওয়া বেশ কঠিন। সাধারণত এই ধরনের সংঘাতের সময় সীমান্তে সমস্যা দেখা দেয়। তবে এবার উত্তর সীমান্তে খুব বেশি অস্বাভাবিক কার্যকলাপ দেখা যায়নি। তবে পর্দার আড়াল থেকে চিন তার সর্বকালের বন্ধুকে সমর্থন যুগিয়ে গিয়েছে। তুরস্কও পাকিস্তানকে সাহায্য করেছে। অর্থাৎ এই লড়াইয়ে তিনটি শত্রুর সঙ্গে একত্রে লড়তে হয়েছে ভারতকে।
শুধু তাই নয় বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিডিএস বলেন, ভারত মহাসাগরের দেশগুলির আর্থিক দুর্বলতার জেরে ‘বহিরাগত শক্তি’গুলি তাদের উপর প্রভাব বাড়িয়ে চলেছে। যা ভারতের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। চিন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের স্বার্থের মিল রয়েছে, যা আগামীদিনে ভারতের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। প্রসঙ্গত, চিন-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা বহু পুরনো, এদিকে বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর চিন ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে বাংলাদেশের। শোনা যাচ্ছে, ভারতের বিরুদ্ধে গিয়ে পাকিস্তান, বাংলাদেশের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি দেশকে নিয়ে ‘এসসিও’র বিকল্প জোট তৈরি করছে চিন।
উল্লেখ্য, অপারেশন সিঁদুর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে গত শুক্রবার সেনার ডেপুটি প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং অভিযোগ করেন, পাকিস্তানকে চিন শুধু সাহায্য করছিল তা-ই নয়। চিন আসলে ওই সংঘাতকে নিজেদের অস্ত্রের পরীক্ষাগার হিসাবে ব্যবহার করেছে। তাঁর কথায়, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে যে যে অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেগুলির ৮১ শতাংশই চিনের সামগ্রী দিয়ে তৈরি। অস্ত্রও চিনের। আসলে পাকিস্তানের মাধ্যমে নিজেদের অস্ত্রের শক্তিপরীক্ষা করে নেয় চিন। ওরা পাকিস্তানকে নিজেদের অস্ত্রের লাইভ ল্যাব (পরীক্ষাগার) হিসাবে ব্যবহার করছিল।” সেনার ডেপুটি প্রধান বলছেন, আসল চিন ঘুরিয়ে ভারতকে আঘাত করার চেষ্টা করছিল। নিজেরা সরাসরি যুদ্ধে না জড়িয়েও ‘ধার করা ছুরি’ দিয়ে ভারতের রক্তপাত ঘটানোর চেষ্টা করেছে চিন।