সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে ভারত। ১ মের মধ্যে সমস্ত পাকিস্তানিকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। এই নির্দেশিকার জেরে বিপাকে পড়েছেন প্রেমের টানে ভারতে এসে সংসার পাতা সীমা হায়দার। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, সাধের সংসার ছেড়ে ভারত থেকে চলে যেতে হত তাঁকেও। কিন্তু এবার খানিক স্বস্তি পেলেন ‘পাকবধূ’ সীমা। আপাতত তাঁকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠাচ্ছে না দিল্লি।
প্রেমের টানে দু’বছর আগে চার সন্তানকে নিয়ে নেপাল সীমান্ত হয়ে অবৈধভাবে ভারতে এসেছিলেন সীমা। বিয়ে করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের শচীন মিনারকে। এখানে এসে হিন্দু ধর্মও গ্রহণ করেন তিনি। তখন থেকেই নানা কারণে শিরোনামে পাকবধূ সীমা। নানা আইনি টানাপোড়েনের মাঝেও এদেশে সুখেই সংসার করছিলেন তিনি। এক কন্যা সন্তানেরও জন্ম দেন। তবে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলার ঘটনায় সব হিসেব ওলট পালট হয়ে গিয়েছে সীমার সংসারে। ভারত ছাড়ার আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে তাঁকে। তাই তো কয়েকদিন আগে সোশাল মিডিয়ায় মোদি সরকারের উদ্দেশে সীমার আর্জি জানান, ‘আমি পাকিস্তানের মেয়ে ছিলাম, কিন্তু এখন ভারতের পুত্রবধূ। দয়া করে আমাকে আর ওখানে ফেরত পাঠাবেন না।’
শেষ পর্যন্ত সীমার ভাগ্যে কী রয়েছে তা জানতে আগ্রহী সকলেই। এবার উত্তরপ্রদেশ সরকারের এক সূত্র মারফৎ জানা গেল, এখনই সীমা হায়দারকে পাকিস্তানে ফের পাঠাচ্ছে না কেন্দ্র। যে পাকিস্তানিদের ভারত ছাড়তে হবে আপাতত সেই তালিকায় সীমা পড়ছেন না। জানা গিয়েছে, কোর্টে সীমার আইনজীবীরা দাবি করেছেন, তিনি আর পাকিস্তানের নাগরিক নন। কারণ তিনি ভারতীয় নাগরিকের স্ত্রী। স্বামীর নাগরিকত্বের উপরই এখন তাঁর নির্ভর নাগরিকত্ব নির্ভর করছে। এছাড়া সীমার সন্তান ভারতে জন্ম নিয়েছে। প্রশাসনের তরফে বাচ্চাটিকে যে বার্থ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে সেখানে লেখা রয়েছে মা সীমা এবং শচীন মীনার পিতা।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সব রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন, পাকিস্তানিদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানোর জন্য। এরপরই তৎপরতা বেড়েছে উত্তরপ্রদেশে। একজন ছাড়া সকল পাকিস্তানি নাগরিককে ইতিমধ্যেই রাজ্য থেকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ব্যক্তিগতভাবে প্রক্রিয়াটির তদারকি করছেন। একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।