পাকিস্তানকে আরও কাছে টানলেন ইউনুস, ২ দশক পর অর্থনৈতিক কমিশনের সভা ঢাকা-ইসলামাবাদের

পাকিস্তানকে আরও কাছে টানলেন ইউনুস, ২ দশক পর অর্থনৈতিক কমিশনের সভা ঢাকা-ইসলামাবাদের

জীবনযাপন/LIFE STYLE
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানকে আরও কাছে টানলেন মহম্মদ ইউনুস। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার পর সেদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব মজবুত করতে তৎপর হয়েছেন তিনি। এবার ২০ বছর পর যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) সভায় বসছে ঢাকা-ইসলামাবাদ। এই আলোচনায় উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি যোগাযোগ বাড়ানোয় বেশি জোর দেওয়া হবে। এভাবেই এখন হাসিনাহীন বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও মজবুত করতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানও।

জানা গিয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ইসলামাবাদে এই সভা হতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, ইতিমধ্যে জেইসি সভার আলোচনা সূচি-সহ অন্যান্য বিষয়ে কাজ শুরু করেছেন ইআরডির আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত, দুদেশের মধ্যে সর্বশেষ জেইসি সভা হয় ২০০৫ সালে। পাকিস্তানের সঙ্গে আসন্ন জেইসি সভার আলোচনায় রাখার জন্য এরই মধ্যে ১৫টি দপ্তরের প্রধানের কাছে প্রস্তাব চেয়ে চিঠি দিয়েছে ইআরডি। সেই তালিকায় রয়েছে- বিদেশ, শিল্প, বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রক, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।

এই মন্ত্রক ও দপ্তর থেকে ইআরডিতে প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী জানান, “জেইসির সভা করার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যেকোনও দেশের জিইসি সভার আলোচ্যসূচি ঠিক করার আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব চাওয়া হয়। পরে সেই প্রস্তাবগুলো থেকে খসড়া আলোচ্যসূচি ঠিক করে তা সংশ্লিষ্ট দেশে পাঠাতে হয়। ওই দেশও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমাদের কাছে প্রস্তাব পাঠায়। দুদেশের অনুমোদনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সূচি ঠিক করা হয়।”

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর আগ্রহ দেখায় পাকিস্তান। এনিয়ে গত কয়েক মাসে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা-সহ কয়েকজন সঙ্গে দেখা করেন। সব সাক্ষাতেই তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির আগ্রহ দেখান। এছাড়া গত সপ্তাহে পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফপিসিসিআইয়ের নেতাদের নেতৃত্ব একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করে। এতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ। ইআরডি সূত্রে খবর, পাকিস্তানের আগ্রহেই মূলত জেইসি সভা হতে চলেছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই সভা করতে চেয়েছিল ইসলামাবাদ। কিন্তু প্রস্তুতি ও সময়ের অভাবে তা হয়নি।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সঙ্গে জেইসি সভার সমন্বয়ক হল ইআরডি। তাদের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৮টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জিইসি) আছে। দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চিন, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, ইরান, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, রোমানিয়া, তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

বলে রাখা ভালো, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের নানাপ্রান্তে মার খাচ্ছে হিন্দুরা। কিন্তু পাক নাগরিকদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে ইউনুস সরকার। বিশ্বের যেকোনও জায়গায় থাকা পাকিস্তানের নাগরিক ও বংশোদ্ভূতরা যাতে সহজে ঢাকার ভিসা পান তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কয়েকদিন আগেই চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে পাক জাহাজ। ব্যবসার ক্ষেত্রেও পড়শি দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশের বাজার খুলেছে ঢাকা। কয়েকদিন আগেই পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান। তিনি পাকিস্তানের কাছ থেকে যুদ্ধবিমান কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসেই বাংলাদেশ সফরে যাবেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশহাক দার। ফলে যতদিন যাচ্ছে বন্ধুত্ব মজবুত হচ্ছে ঢাকা-ইসলামাবাদের।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *