সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশির সিরাপ ‘কোল্ডরিফ’ ব্যবহারের ফলে মধ্যপ্রদেশে ১১টি শিশুর মৃত্যুতে নড়েচড়ে বসল গোটা দেশ। তামিলনাড়ু, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কেরল, উত্তরাখণ্ডের পর এবার সন্দেহভাজন ওই ওষুধ বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল উত্তপ্রদেশ সরকার। যোগী সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওষুধটির নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানোর। যতদিন না ওষুধের রিপোর্ট সামনে আসছে ততদিন পর্যন্ত রাজ্যে ওই ওষুধ বিক্রি করা যাবে না।
সূত্রের খবর, তামিলনাড়ু ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের একটি পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, এই কাশির সিরাপে রয়েছে ৪৮.৬ শতাংশ ‘ডাইথিলিন গ্লাইকল’ ও ইথিলিন গ্লাইকল নামের বিশেষ রাসায়নিক, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই তথ্য সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে দেশের বেশিরভাগ রাজ্য। রবিবারই এই ইস্যুতে এক নির্দেশিকা জারি করা হয় উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে। যেখানে বলা হয়েছে, সমস্ত ওষুধ ব্যবসায়ী, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালকে এই ওষুধ বিক্রি, বিতরণ ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। দোকান ও হাসপাতালে যে ওষুধ রয়েছে তার নমুনা লখনউয়ের ওষুধ পরীক্ষাগারে পাঠাতে হবে। যতদিন না রিপোর্ট আসছে ততদিন ওষুধ বিক্রি বন্ধ রাখতে হবে। রিপোর্টে সন্দেহভাজন কিছু ধরা পড়লে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে সরকার।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা এবং রাজস্থানের সিকার এলাকায় পরপর শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সামান্য জ্বর থেকেই আচমকা কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যু হচ্ছিল তাদের। মধ্যপ্রদেশে সবমিলিয়ে ১১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বলেন, “কোল্ডরিফ সিরাপের কারণে ছিন্দওয়ারায় শিশুদের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। সমগ্র মধ্যপ্রদেশে এই সিরাপের বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সিরাপ তৈরির কারখানাটি তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমে অবস্থিত। তাই রাজ্য সরকার তামিলনাড়ু সরকারকে তদন্তের জন্য আর্জি জানিয়েছে। শনিবার সকালে রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” পাশাপাশি মৃতের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সিরাপ প্রেসক্রাইব করার জেরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ড. প্রবীণ সোনি নামে এক চিকিৎসককে। শনিবারই এফআইআর দায়ের হয় ড. সোনির বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গেই কফ সিরাপটির নির্মাতা স্রিসান ফার্মাসিউটিক্যালের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়। সূত্রানুসারে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেছে। কফ সিরাপের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধ এবং তার গুণমান যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেই বৈঠকে।