সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগেই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল পয়লা বৈশাখের শোভাযাত্রার মোটিফ। এবার আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে। তিনিই ওই মোটিফগুলো বানিয়েছিলেন। কিন্তু কারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। কেউ কেউ বলছে এর পিছনে মৌলবাদীদের হাত থাকতে পারে। আবার মহম্মদ ইউনুসের সরকারের তির আওয়ামি লিগের দিকে। সব মিলিয়ে ক্রমশ জলঘোলা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোররাতে সদর উপজেলার গড়পাড়া গ্রামের মানিকগঞ্জের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। সেই সময় মানবেন্দ্র ঘোষ তার বাড়িতেই ছিলেন। আগুনে তার একটি ঘর পুড়ে গিয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, পয়লা বৈশাখের শোভাযাত্রায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাকৃতি বানানোর কারণে অগ্নিসংযোগের কাণ্ড ঘটেছে। তবে মানবেন্দ্র ঘোষের দাবি, তিনি শুধু বাঘের মোটিফ তৈরি করেছিলেন, শেখ হাসিনার মুখাকৃতি নয়। মানবেন্দ্র বলেন, “আমি পরিবারের সকলকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ মুহূর্তে আমি সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছি। দুই-তিনদিন ধরে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এর জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। আর রাতে দুষ্কৃতীরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।” বাড়িটি ছিল আধাপাকা টিনের ঘর। শিল্পকর্মের যাবতীয় সরঞ্জাম মজুত ছিল। ফলে আগুনে শিল্পীর বিভিন্ন মূল্যবান চিত্রকর্ম পুড়ে গিয়েছে।
এদিকে, আজ বুধবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকি ফেসবুকে ক্ষোভপ্রকাশ করে লেখেন ‘শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে যারা হামলা করেছে তাদের ধরার জন্য পুলিশ কাজ শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দিয়েছেন। গত কয়েক দিন ধরে আওয়ামি লিগ মানবেন্দ্র ঘোষকে আক্রমণের জন্য হুমকি দিচ্ছিল। হাসিনার এফিজি বানানোর জন্য তাকে হুমকি দেওয়া হয়। জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।’ কিন্তু মানবেন্দ্র দাবি করেছেন তিনি হাসিনার মোটিফ তৈরি করেননি।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে ঢাকায় নববর্ষে যে শোভাযাত্রা বের হয় এখন তা ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। আগে নাম ছিল ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। এই অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা হয়েছিল দুটো বিশাল মোটিফ। যা শনিবার ভোরে আগুন লেগে যা পুড়ে প্রায় ছাই হয়ে যায়। শান্তির পায়রা মোটিফটিও আংশিক পুড়ে যায়। কারা সেই আগুন লাগিয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।