সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উন্নত বিশ্বের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে ‘আত্মনির্ভর ভারত’। বড় বড় ক্ষেত্রে গবেষণা কাজে আর পাঁচটা উন্নত দেশকে টেক্কা দিচ্ছে। তারই মধ্যে একটি মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্র। সেই কাজে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো কার্যত যুগান্তকারী কাজ করে চলেছে। আগামী ২, ৩ বছরের মধ্যে ভারতের সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে হবে ‘গগনযান মিশন’। তার প্রস্তুতি জোরকদমে। এবার শোনা গেল, নভশ্চরদের প্রশিক্ষণের জন্য বাইরের দেশে নয়, এ দেশেই তেমন পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। তার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে লাদাখের মরু অঞ্চল সো কার ভ্যালিকে। এখান থেকেই নাকি মহাকাশকে সবচেয়ে ভালোভাবে প্রত্যক্ষ করা যায়। তাই সেখানে তৈরি হচ্ছে হিমালয়ান আউটপোস্ট ফর প্ল্যানেটারি এক্সপ্লোরেশন বা ‘হোপ’। এখানে মহাশূন্যের মতো পরিবেশ বানিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসরোর।
আসলে কী ঘটছে লাদাখের সো কার উপত্যকায়? এই উপত্যকা আসলে নোনা এলাকা। দেশের সর্বোচ্চ স্থানে এমন পরিবেশ পাওয়া বিরল। সেই কারণে এখানেই গম্বুজাকৃতি তাঁবু তৈরির সিদ্ধান্ত। নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার একটি তাঁবু বানানো হয়েছে হিমালয়ান আউটপোস্ট ফর প্ল্যানেটারি এক্সপ্লোরেশন বা ‘হোপ’-এর তরফে। এর মধ্যে অন্তত ১০ দিন কাটালে মহাকাশের পরিবেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এই গোটা প্রকল্পের দায়িত্ব নিয়েছেন এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ড. সিদ্ধার্থ পাণ্ডে। তিনি নাসা-সহ একাধিক দেশের মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর মতে, ”শুধু নভশ্চররা এখানে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন, তা নয়। সাধারণ মানুষ, ভবিষ্যতে যাঁরা মহাকাশে যেতে ইচ্ছুক, তাঁদের কথা ভেবে এটা তৈরি করা।”

উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই মার্কিন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে জোট বেঁধে ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ মিশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন, লখনউয়ের শুভাংশু শুক্লা। তিনি ভারতের গগনযান মিশনে নভশ্চর হিসেবেও নির্বাচিত। তার আগে ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ একটা বাড়তি অভিজ্ঞতা, যা পরবর্তী মিশনে সামগ্রিকভাবে কিছুটা সুবিধা দেবে। শুভাংশুকে রাশিয়া থেকে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছিল।
তবে এ ব্যাপারে আর পরনির্ভরশীল থাকতে চায় না ভারত। মোদির ‘আত্মনির্ভরতা’র মন্ত্রে বলীয়ান হয়ে ইসরোও সব বিষয়ে নিজেদের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে তৎপর। আর সেই কারণেই বেসরকারি সংস্থা ‘প্রোটোপ্ল্যানেট’-এর হাত ধরে লাদাখে ওই ‘হোপ’ তৈরির পরিকল্পনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ এক অভিনব উদ্যোগ। মহাকাশ গবেষণা ও বাণিজ্য নিয়ে ভারতের যা পরিকল্পনা, তা যথাযথভাবে করতে গেলে নিজের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দরকার।