সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধীদের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, ‘অপারেশন মহাদেবে’ নিকেশ হওয়া তিন জঙ্গির থেকে পাকিস্তানি ভোটার কার্ড মিলেছে। এবার গোয়েন্দা সংস্থাগুলির প্রকাশ করা রিপোর্টেও উঠে এল সেই তথ্য। শুধু তাই নয়, কবে কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকল তিন জঙ্গি, সেই নিয়েও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলির রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে।
গত সোমবার শ্রীনগরের দাচিগাম জঙ্গলে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মৃত্যু হয় তিন জঙ্গির। এই সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন মহাদেব’। পরে অমিত শাহ জানান, নিহত তিন জঙ্গির নাম সুলেমান, আফগান এবং জিবরান। এই তিন জনকে খাবার জুগিয়ে সাহায্য করেছিল যে ব্যক্তি তাকে আগেই আটক করা হয়েছিল। সেই নিহত জঙ্গিদের দেহ শনাক্ত করেছে। তবে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম প্রশ্ন তোলেন, এরাই কি পহেলগাঁও হামলার তিন জঙ্গি? এরা যে পাকিস্তানি জঙ্গি তার প্রমাণ কী?
জবাবে শাহ বলেন, জঙ্গিদের থেকে পহেলগাঁও হামলায় ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। পাকিস্তানি ভোটার কার্ড মিলেছে, তাদের কাছে মিলেছে পাকিস্তানি চকলেটও। এবার সেই একই তথ্য প্রকাশ করল গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও। এএনআইয়ের তরফে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে ভুল জঙ্গিদের স্কেচ প্রকাশ করেছিল কাশ্মীর পুলিশ। তবে শেষ পর্যন্ত ২৮ জুলাই পহেলগাঁও হামলার জঙ্গিদের নিকেশ করা হয় ‘অপারেশন মহাদেবে’র মাধ্যমে।
তাদের থেকে পাকিস্তানি ভোটার কার্ড, চকলেট এবং বায়োমেট্রিক ডেটাবোঝাই মাইক্রো এসডি চিপ মিলেছে। সুলেমান এবং আফগানের পকেট থেকে পাওয়া ভোটার কার্ডে লেখা রয়েছে, তারা যথাক্রমে লাহোর এবং গুজরানওয়ালার বাসিন্দা। এছাড়াও এসডি চিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেও তিন জঙ্গির পাক নাগরিকত্ব প্রমাণ হয়েছে। তারা সকলেই লস্কর-ই-তইবার সদস্য, তার প্রমাণও মিলেছে। অর্থাৎ তিনজনের কেউই স্থানীয় কাশ্মিরি জঙ্গি নয়।
গোয়েন্দা সূত্রে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালের মে মাসে গুরেজ সেক্টর থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকেছিল এই তিন জঙ্গি। হামলার আগের দিন বৈসরন থেকে ২ কিমি দূরত্বে একটি কুঠুরিতে আশ্রয় নেয় তারা। হামলার দিন সকালে ট্রেকিং করে বৈসরনে যায় তিনজন। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া শেল কেসিং মিলে গিয়েছে ‘অপারেশন মহাদেবে’র পর উদ্ধার হওয়া একে-১০৩ রাইফেলের সঙ্গে। হামলার পর থেকে দাচিগামেই লুকিয়ে ছিল তিনজন। পরে সেনার অভিযানে নিকেশ হয় তারা।